কলেজ ও
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের
শিক্ষার্থীদের সাংগঠনিকভাবে
রাজনীতিতে সম্পৃক্ততার
নানা মডেল
পৃথিবীর বিভিন্ন
দেশে আছে।
ইউরোপ, আমেরিকায়
তা যেমন
রয়েছে, বাংলাদেশ-পাকিস্তান-ভারত
তথা উপমহাদেশেও
রয়েছে ছাত্র
সংগঠন ও
ছাত্র আন্দোলনের
একটি সমৃদ্ধ
ঐতিহ্য। উপনিবেশবাদবিরোধী
স্বাধিকার সংগ্রামের
কালপর্বে শিক্ষার্থীদের
আন্দোলন সম্পৃক্ততা
এবং স্বাধীন
দেশে ছাত্রসমাজের
আন্দোলন-সংগ্রামে
অংশগ্রহণের প্রকৃতি,
ব্যাপ্তি ও
গভীরতায় পার্থক্য
হওয়ার কথা।
স্বাধীন বাংলাদেশের
শাসন ও
রাষ্ট্র ব্যবস্থায়
যেমন ঔপনিবেশিকতার
সঙ্গে পার্থক্য
মৌলিক নয়,
তেমনিভাবে রাজনীতির
মডেলেও গুণগত
পরিবর্তন খুবই
সামান্য। তাই
ছাত্রসমাজের রাজনৈতিক
কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণও
সেই গতানুগতিকতার
অনুষঙ্গ বৈ
ব্যতিক্রম কিছু
নয়। উপমহাদেশের
অন্য দুটি
দেশ ভারত
ও পাকিস্তানের
চেয়ে আমাদের
রাজনৈতিক ইতিহাস
১৯৪৭-এর
পর মৌলিকভাবে
ভিন্ন একটি
ধারায় প্রবাহিত
হয়। এ
রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায়
এ দেশের
ছাত্রসমাজ মূলধারার
রাজনৈতিক শক্তির
অবিচ্ছেদ্য অংশ
হয়ে পড়ে।
উপনিবেশবাদ ও
স্বৈরাচারবিরোধী সব
আন্দোলনে প্রতিটি
উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
হয়ে দাঁড়ায়
একেকটি দুর্গ,
যার সর্বোচ্চ
পরিণতিপর্ব ১৯৭১-এর
স্বাধীনতা যুদ্ধ।
এ যুদ্ধে
ছাত্র, যুবক,
সৈনিক, কৃষক,
শ্রমিক, বুদ্ধিজীবী
একাকার হয়ে
যান। স্বাধীনতা-পরবর্তী
বাংলাদেশে রাজনীতি
যে ধারা
ও প্রক্রিয়ায়
বিকশিত হওয়া
বাঞ্ছনীয় ছিল,
সে ধারায়
তা বিকশিত
হয়নি। মূলধারার
রাজনৈতিক দলগুলো
ছাত্র সংগঠনের
সহায়তা ছাড়া
মাঠের রাজনীতি
পরিচালনায় সাহস
ও কৌশল
কোনোটাই দেখাতে
পারেনি। তারা
প্রায়ই মাঠ
দখলের রাজনৈতিক
কৌশলে ছাত্রদের
লাঠিয়াল হিসেবে
ব্যবহারের নীতিকে
রাজনীতির একটি
ব্যবহারিক কৌশল
বলে ধরে
নেয়। ফলে
সাধারণ রাজনীতি
ও ছাত্ররাজনীতি
দুটিই দূষিত
হয়ে পড়ে।
বর্তমানে তার
একটি ভয়াবহ
রূপ হচ্ছে
শিক্ষাঙ্গনের সর্বগ্রাসী
অস্থিরতা, সন্ত্রাস,
চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি,
কমিশন বাণিজ্য,
ছাত্র নির্যাতন
ইত্যাদি। ঘটনার
অন্য পিঠে
শিক্ষকদের একটি
বড় অংশের
নীতি-নৈতিকতাহীন
আচরণ। দলের
লেজুড় হয়ে
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক
পদ দখল,
পরে দলকানা-দলদাসের
মতো প্রশাসনের
দায়িত্ব পালন
করতে দিয়ে
ন্যায়-অন্যায়ের
ভেদাভেদ মুছে
দেয়ার চেষ্টা
করা। এভাবে
এ দেশে
মূল রাজনৈতিক
দল, শিক্ষকসমাজ
ও ছাত্রসমাজ
তাদের সবার
রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের
নির্দিষ্ট গণ্ডি
বা সীমানা
অতিক্রম করা
শুরু করে।
রাজনীতির সামগ্রিক
দুর্বৃত্তায়ন ছাত্ররাজনীতির
কাঁধে চড়ে
শিক্ষাঙ্গনকে গ্রাস
করেছে।
এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মডেলটি প্রায় একই রকম। ব্যতিক্রম শুধু পশ্চিমবঙ্গে ছাত্রসংসদের নির্বাচন হয়। বাংলাদেশে ২৮ বছর ধরে নির্বাচন হয় না। বড় মিলটি হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে যখন বামফ্রন্ট রাজ্য সরকারে ছিল, তখন সেখানকার সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ছিল তাদের অঙ্গসংগঠন স্টুডেন্ট ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়ার দখলে। এখন