কলকারখানা ও পৌরসভার বর্জ্যে দূষিত হয়ে পড়েছে গাজীপুরের শ্রীপুরের লবলঙ্গ ও গড়গড়িয়া খাল। এতে আবাদযোগ্যতা হারিয়েছে আশপাশের প্রায় এক হাজার হেক্টর কৃষিজমি। ফলে ফসল উৎপাদন ও মাছ আহরণ বন্ধ হয়ে পড়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ, উপজেলার প্রধান দুটি খাল প্রতিনিয়ত দূষণের শিকার হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লবলঙ্গ খালটি ময়মনসিংহের ভালুকায় পারুলিয়া নদী থেকে শুরু হয়ে শ্রীপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে একটি ধারা গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর বাজারের পাশে তুরাগ নদীতে মিশেছে। এ খালের আরেকটি ধারা কালিয়াকৈরের ফুলবাড়িয়া থেকে গোয়ালো নদী ও মাওনা ইউনিয়নের শেষ প্রান্ত বদনীভাঙ্গা থেকে সালদহ্ নদীতে মিশেছে। খালের দুই পাশে আবাদি জমি ছিল প্রায় ২৫ হাজার একর (৩ হাজার ৩৩৪ হেক্টর)। এসব জমি থেকে বছরে প্রায় ৫০ হাজার টন ধান উৎপাদন হতো। আর গোসিঙ্গা ইউনিয়নে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে শুরু গড়গড়িয়া খালটি মাস্টারবাড়ি হয়ে লবলঙ্গ খালের সঙ্গে মিশেছে।
সূত্র জানায়, ঢাকার নিকটবর্তী হওয়ায় শ্রীপুর উপজেলাজুড়ে হাজারখানেক কলকারখানা গড়ে উঠেছে, যার অধিকাংশে বর্জ্য পরিশোধন ব্যবস্থা নেই। এসব কারখানার বর্জ্য সরাসরি লবলঙ্গ ও গড়গড়িয়া খালে ফেলা হয়। আবার খালের পাড়েই শ্রীপুর পৌর এলাকার বর্জ্য ডাম্পিং করা হচ্ছে। কারখানার ও পৌরসভার বর্জ্যে দুই খালের অবস্থাই এখন শোচনীয়।
একসময় এসব খালে স্বচ্ছ পানি প্রবাহিত হলেও এখন তা কুচকুচে কালো রঙ ধারণ করেছে। পানি বিষাক্ত হওয়ায় খালগুলো মাছশূন্য হয়ে পড়েছে। এর পাশাপাশি খালের পানি ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন হয়, এমন এক হাজার হেক্টর জমি আবাদযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে। এতে ফলনও অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, লবলঙ্গ ও গড়গড়িয়া খালের দুই পাশে গড়ে ওঠা কারখানার বর্জ্যমিশ্রিত পানি সরাসরি খালে গিয়ে পড়ছে। গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি ব্রিজ ও মাওনা পাথার ব্রিজের পাশে খালে পৌর কর্তৃপক্ষের ফেলা ময়লার স্তূপ জমে আছে।
পাথারপাড়া এলাকার বাসিন্দা সুরুজ মিয়া বলেন, শ্রীপুরে লবলঙ্গ ও গড়গড়িয়া খালসহ আশপাশে ধানি ও অন্যান্য ফসলি জমি ভরাট করে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হচ্ছে। পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ, বিভিন্ন শিল্প-কারখানার অপরিশোধিত রাসায়নিক মিশ্রিত পানি ফেলে দূষণ ও জলাবদ্ধতার কারণে কৃষিজমি পতিত হয়ে পড়ছে।
গড়গড়িয়া এলাকার বাসিন্দা হারিস 
