চলমান চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধ ক্রমে তীব্র আকার ধারণ করছে। অন্য অনেক ম্যানুফ্যাকচারারের মতো পোশাক উৎপাদনকারী কিছু কোম্পানিও চীন থেকে অন্যত্র নিজেদের কারখানা সরিয়ে নিচ্ছে। এসবের কারণে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে বিশ্ব সরবরাহ শৃঙ্খলে। বিশ্ববিখ্যাত অনেক কোম্পানি ও ব্র্যান্ডও নিজেদের ক্রয়াদেশ চীনের পরিবর্তে এশিয়া অঞ্চলের অন্য দেশে সরিয়ে নিয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতির সুবিধা নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়া। দেশটির পোশাক প্রস্তুতকারী ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান শ্রী রেজেকি ইসমান পিটি চীন থেকে আমদানি সরিয়ে নিতে ইচ্ছুক এমন একটি মার্কিন কোম্পানির সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা বা চুক্তি সম্পন্ন করেছে। এ চুক্তির মূল্য ১০০ কোটি ডলার হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়ার শ্রী রেজেকি বিশ্ববিখ্যাত জেসি পেনি, গেস ও ওয়ালমার্টসহ এইচঅ্যান্ডএমের মতো নামিদামি অনেক ব্র্যান্ডের জন্য তৈরি পোশাক সরবরাহ করে। চীন থেকে পোশাক আমদানি করে ফ্যাশন জগতের বিখ্যাত এমন অনেক প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি শ্রী রেজেকি ইসমান পিটির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এসব প্রতিষ্ঠান চীনের পরিবর্তে রেজেকি ইসমান থেকে পোশাক কিনতে চায়।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্রের স্বনামধন্য এক কোম্পানি চীনের পরিবর্তে ইন্দোনেশিয়ার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থেকে নিজেদের পোশাক আমদানি বা কিনতে চায় বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইভান সেতিয়াওয়ান লুকমিন্তো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম একটি কোম্পানি নিজেদের চুক্তি বা ক্রয়াদেশ অন্যত্র সরিয়ে নিতে ইচ্ছুক। এ চুক্তির মূল্য দাঁড়াতে পারে ১০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি। প্রাথমিক আলোচনাটি ব্যক্তিগত পর্যায়ের হওয়ায় এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন লুকমিন্তো।
অন্যদিকে দুই বিশ্ব অর্থনৈতিক পরাশক্তির চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের সুবিধা নিজেদের পকেটস্থ করতে কসুর করছে না ইন্দোনেশিয়া। বিশেষত দেশটির বস্ত্র খাত বিবদমান পরিস্থিতির ফায়দা তুলতে উদগ্রীব। প্রসঙ্গত, চলমান প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে সম্প্রতি অনেক আন্তর্জাতিক ম্যানুফ্যাকচারার চীন থেকে নিজেদের কার্যক্রম অন্যত্র সরিয়ে নেয়ায় কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে চীন। কারখানা কার্যক্রম ও সরবরাহ অদেশ বেহাত হতে থাকায় দেশটি কয়েক দশক ধরে ভোগ করা ‘বিশ্ব-ওয়ার্কশপের’
মর্যাদা হারাতে শুরু করেছে।
শ্রী রেজেকির বর্তমান মোট রফতানির ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ হয় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। অথচ এক বছর আগেও তা ছিল মাত্র ৩ শতাংশ। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাড়তে থাকা নিজেদের চাহিদা মেটাতে লুকমিন্তো আগামী বছর নাগাদ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন সক্ষমতা এক-পঞ্চমাংশ বাড়াতে চায়। চলমান বৈশ্বিক শ্লথ প্রবৃদ্ধির কালে এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার হতোদ্যম দেশগুলোর জন্য বিশেষ সুখবর।
উল্লেখ্য, আগস্ট নিয়ে টানা ১০ মাস ইন্দোনেশিয়ার রফতানি খাত মন্থর রয়েছে। অন্যদিকে দেশটির সরকার নিজেদের চলতি বছরের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৫ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ দশমিক ১ শতাংশে নির্ধারণ করেছে।
এদিকে রফতানি ত্বরান্বিত করতে প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডোর সঙ্গে জোর দেনদরবার শুরু করেছে ইন্দোনেশিয়ার টেক্সটাইল অ্যাসোসিয়েশন। আগামী বছর নাগাদ দেশটি নিজেদের রফতানি ১ হাজার ৪৬০