সিল্করুট

গন্ডোয়ানাল্যান্ড থেকে বঙ্গীয় বদ্বীপ

আহমেদ দীন রুমি

আলফ্রেড ভেগনারের তৈরি করা প্যানজিয়ার মানচিত্র, ১৯১৯

জার্মান বিজ্ঞানী আলফ্রেড ভেগনার। তিনি খেয়াল করলেন মহাদেশের কাঠামোগুলোকে যেন চাইলে পাজলের মতো পাশাপাশি বসানো যায়। সে সূত্র ধরেই ১৯১২ সালে তিনি অদ্ভুত এক তত্ত্ব নিয়ে হাজির হন দুনিয়ার সামনে। দাবি করেন দক্ষিণ গোলার্ধের সব কয়টা মহাদেশ সুদূর অতীতে একসঙ্গে যুক্ত ছিল। আগে ফ্রান্সিস বেকনের মতো অনেকেই আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যকার সাদৃশ্য তুলে ধরেছিলেন। কিন্তু একসঙ্গে থাকার দাবি এটাই প্রথম। ভেগনার সে মহাদেশীয় একত্র অবস্থার নাম দিলেন প্যানজিয়া। প্যান অর্থ সব, আর জিয়া অর্থ ভূমি। ফলে প্যানজিয়ার অর্থ সব ভূমি। যা-ই হোক, প্যানজিয়া নামের সেই সুপার কন্টিনেন্টের দক্ষিণভাগের নাম পরে দেয়া হয় গন্ডোয়ানা। গন্ডোয়ানা নামটি দেন মূলত অস্ট্রিয়ান ভূগোলবিদ এডওয়ার্ড সুয়েস। মধ্য ভারতের গন্ডোয়ানা অঞ্চলের কাঠামোর সঙ্গে দক্ষিণ গোলার্ধের অঞ্চলগুলোর বিশেষ সাদৃশ্য খুঁজে পান তিনি। গন্ডোয়ানা পলি বলতেও ভারতের দক্ষিণে উপদ্বীপের অংশকে বোঝানো হয়। বিশেষ করে দামোদর কিংবা গোদাবেরি উপত্যকা অঞ্চলে। এ অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত জীবাশ্ম নিদর্শন পরবর্তী ভূতত্ত্ববিদদের জন্য দীর্ঘদিনের রহস্যের সমাধান উন্মোচন করেছে। অবশ্য হালের পণ্ডিতরা ভারতের সীমাবদ্ধ অঞ্চলে গন্ডোয়ানা নামকে বেঁধে রাখতে নারাজ; তারা গোটা উপমহাদেশকেই গন্ডোয়ানাল্যান্ডের ভেতরে রাখার পক্ষপাতী। দক্ষিণ আফ্রিকার ভূবিজ্ঞানী আলেকজান্ডার ডু টয়েট তার ‘আওয়ার ওয়ান্ডারিং কন্টিনেন্টস’ বইয়ে গন্ডোয়ানার তত্ত্বকে বিস্তৃত করেন। ডু টয়েট বিপুল দলিল হাজির করেন তার দাবি প্রতিষ্ঠায়। মতবাদের পক্ষে ভারী হতে থাকে পণ্ডিতদের অবস্থান। একের পর এক নতুনভাবে হাজির হতে থাকে প্রমাণগুলো।

গন্ডোয়ানা প্রাচীন সুপার কন্টিনেন্টের নাম। আজকের দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, আরব, মাদাগাস্কার, ইন্ডিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে ছিল তার অবস্থান। মহাদেশ একত্র বা বিচ্ছিন্ন হওয়া কিংবা চলাফেরা করতে পারার বিষয়টা ভূবিজ্ঞানীদের কাছে বিস্ময়কর নয়। এমন ঘটনার পেছনে প্রধান অনুঘটক ভূমির তলদেশ। ভূপৃষ্ঠের যত নিচে যাওয়া যায়, তত উত্তপ্ত। সে উত্তাপে যে শক্তি তৈরি হয়; তা বাইরের ত্বককে স্থানান্তর করতে পারে। এ স্থানান্তরই পরে মহাদেশের সরে যাওয়ায় পরিণত হয়। গন্ডোয়ানার ভূমি প্রাথমিকভাবে একত্র হয়েছিল প্রিক্যাম্ব্রিয়ান যুগের শেষদিকে; প্রায় ১০০ থেকে ৫৪ কোটি বছর আগে। পরবর্তী সময়ে গন্ডোয়ানার সঙ্গে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও সাইবেরিয়ার সংঘাতে গঠিত হয় প্যানজিয়া। প্যানজিয়াও ক্রমে ভাঙতে থাকে কয়েক ধাপে। ১৮ কোটি বছর আগে গন্ডোয়ানার পশ্চিম ভাগ আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকা আলাদা হয়ে যায়। পূর্ব প্রান্তে থেকে যায় মাদাগাস্কার, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও অ্যান্টার্কটিকা। এভাবে পূর্ব ও পশ্চিম গন্ডোয়ানা আলাদা হওয়ার সময়েই জন্ম নেয় ট্রান্স অ্যান্টার্কটিকা পর্বতমালা। 

ভাঙনযাত্রা সেখানেই থেমে গিয়েছিল সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য। ক্রমে মাদাগাস্কার ও আফ্রিকার মধ্যে সমুদ্র তলদেশ সম্প্রসারণ হতে থাকে। ১৪ কোটি বছর আগে আফ্রিকা থেকে দক্ষিণ আমেরিকা আলাদা হয়ে যাওয়ায় তৈরি হয় দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগর। এদিকে আফ্রিকা, মাদাগাস্কার ও ভারত ছিল তখনো প্রতিবেশী। অন্তত ১০ কোটি বছর আগে শুরু হয় পরবর্তী দফার ভাঙন। ভারত ও মাদাগাস্কার আলাদা হয়ে যেতে থাকে অ্যান্টার্কটিকা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে। এবার টেথিস সাগর থেকে তৈরি হয় ভারত মহাসাগর। আলাদা হয়ে যায় তাদের পিঠে বসবাস করা প্রাণিকূল। আরো পরে আজ থেকে প্রায় নয় কোটি বছর আগে ফাটল তৈরি হয় মাদাগাস্কার ও ভারতের মধ্যে। অপেক্ষাকৃত সরু হওয়ায় সে সময়ে ভারত ছিল দ্রুত গতিশীল টেকটোনিক প্লেট। বাকিদের পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে থাকে সামনে। মাদাগাস্কার আফ্রিকার কাছাকাছিই থেকে যায়। ভারত চলে আসে ইউরেশিয়ার দিকে। ওদিকে অস্ট্রেলিয়া আলাদা হয়ে যায় অ্যান্টার্কটিকা থেকে। বর্তমান মানচিত্রের দিকে তাকালে তাদের অবস্থান ও অভিমুখ স্পষ্ট চিহ্নিত করা যায়।

সুপার কন্টিনেন্ট যখন ভাগ হয়, তখন এ বিভাজনের সঙ্গে সঙ্গে বিভাজিত হয়ে যায় স্থলের সব উদ্ভিদ ও প্রাণীও। যেন জীবন প্রক্রিয়াই বদলে গেল। ক্রমে গন্ডোয়ানা থেকে দ্বীপের মতো তৈরি হওয়া ভারত নয় হাজার কিলোমিটার পথ সমুদ্রপথে অতিক্রম করে ধাক্কা দেয় ইউরেশিয়ার গায়ে। সফরটা শেষ হতে দীর্ঘ সময় লেগেছে। সাধারণ টেকটোনিক প্লেট প্রতি বছর পাঁচ সেন্টিমিটার সরে যায়। কিন্তু সে সময়ে ভারত প্রতি বছর প্রায় ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত অতিক্রম করেছে। স্বাভাবিকের তুলনায় চার গুণ। ভারত এত দ্রুত সরেছে; তার একটা কারণ ভারতীয় প্লেট ছিল খুবই সরু; মাত্র ১০০ কিলোমিটারের পুরুত্বের প্লেট। সেদিক থেকে আফ্রিকার প্লেটের পুরুত্ব ৩০০ কিলোমিটার। এছাড়া টেথিস সাগরের প্রবাহ ও লরেশিয়ার দীর্ঘ তটরেখাও ভূমিকা রেখেছে। ইন্ডিয়ান প্লেট যতই টেথিস সাগর ধরে উত্তরে ধাবিত হয়েছে, ক্রমে টেথিস সাগর বিলুপ্ত হয়ে জন্ম নিয়েছে ভারত মহাসাগর। ইন্ডিয়ান প্লেটের গতি বেড়ে যাওয়ার আরো কিছু কারণও রয়েছে। দক্ষিণ দিকে সমুদ্রতলদেশ সম্প্রসারণ এবং উত্তরের দিকে অধোগমন অঞ্চলও তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। বলা ভালো, অধোগমন হলো একটি ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া, যা টেকটোনিক প্লেটের প্রান্ত সীমানায় সংঘটিত হয়, যাতে একটি প্লেট অন্যটির নিচে চলে যায় এবং গুরুমণ্ডলের অভিকর্ষের কারণে ডুবে যেতে বাধ্য হয়। যে অঞ্চলে প্রক্রিয়াটি ঘটে সেটাই অধোগমন অঞ্চল। এটা ভারতীয় প্লেটের উত্তরমুখী গতিকে ত্বরান্বিত করতে ভূমিকা রেখেছে। যা-ই হোক, তীব্র গতিশীল ভারতীয় প্লেট উত্তর দিকে থাকা ইউরেশিয়া প্লেটের সঙ্গে ধাক্কা খায়। যেহেতু দুটি প্লেটের ঘনত্ব ছিল একই। অধোগমন হওয়ার বদলে উভয়েই ওপরের দিকে উঠে যেতে শুরু করে। ফলে তৈরি হতে থাকে হিমালয়। গতি যত তীব্র হয়; সংঘাত হয় তত তীব্র। সংঘাত যত তীব্র হবে, তার প্রভাব তত বেশি। সে সংঘাত থেকেই জন্ম নেয় হিমালয়; হিমালয়ের আকৃতিই তার প্রমাণ। এ সংঘাতের সাক্ষী খোদ এভারেস্ট। এভারেস্টের চূড়ায় গেলে প্রাচীন সামুদ্রিক প্রাণীর ফসিল পাওয়া যায়; যেন সুদূর অতীতের গন্ডোয়ানাল্যান্ডের সাক্ষী হয়ে বসে রয়েছে। ভারতীয় প্লেট এখনো উত্তর দিকে চলছে। তবে সে গতির হার খুব ধীর। তার পরও সে গতির প্রভাবে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোয় প্রায়ই ভূমিকম্প হচ্ছে। উচ্চতা আরো বাড়ছে হিমালয়ের।

ভূতত্ত্ববিদরা ভারতকে তুলনা করেন ভাইকিংদের শেষকৃত্বের নৌকার সঙ্গে। ভাইকিংরা তাদের কেউ মারা গেলে নৌকায় মৃতের মূল্যবান সবকিছু তুলে ভাসিয়ে দিত। ভারতের ক্ষেত্রে বিষয়টা অনেকটাই তেমন। গন্ডোয়ানাল্যান্ড থেকে যখন ভারত আলাদা হয়, তখন সঙ্গে করে নিয়ে আসে গন্ডোয়ানাল্যান্ডের বিস্ময়কর প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ নিদর্শন। এজন্যই আফ্রিকা ও ভারতে প্রাপ্ত ফসিলের মধ্যে অস্বাভাবিক মিল। গ্লোসোপটেরিসের মতো উদ্ভিদ কিংবা লিস্টোসোরাসের মতো প্রাণীর ফসিল সাবেক গন্ডোয়ানাল্যান্ডের সব অঞ্চলেই পাওয়া যায়। যদিও উভয়েই বিলুপ্ত বর্তমান দুনিয়া থেকে। ফসিলগুলো যেন আফ্রিকা, অ্যান্টার্কটিকা ও দক্ষিণ আমেরিকাকে পাশাপাশি থাকার দলিল হাজির করেছে। গন্ডোয়ানাল্যান্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সমুদ্রপথে ভেসে আসা ভারত কিন্তু কেবল বিলুপ্ত ও মৃত জীবাশ্মই বয়ে নিয়ে আসেনি। নিয়ে এসেছে বেশুমার জীবিত নিদর্শন। অজস্র রকমের প্রাণী বয়ে নিয়ে এসেছে নিজেদের সঙ্গে। বিশেষ করে যখন ইউরেশিয়ার সঙ্গে সংঘাত হলো তখন ভারতের সেই জীবিত প্রাণীরা মুখোমুখি হলো ইউরেশিয়ার প্রাণীদের সঙ্গে। এর মধ্য দিয়ে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটল প্রাণিজ জীবনে। বহু বছর আগে যারা বিচ্ছিন্ন হয়েছিল; তারাই শত শত প্রজন্মের পর মুখোমুখি হলো। ততদিনে জলবায়ুর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে বিপুল পরিবর্তন ঘটে গেছে তাদের জীবনে।

ভারতীয় ও ইউরেশীয় প্লেটের ধাক্কার পর থেকেই ভারতে জলবায়ুর মধ্যেই বিপুল পরিবর্তন দেখা দিতে শুরু করে। কিছু প্রাণী তো বিলুপ্তই হয়ে যায়। যারা বিলুপ্তি হয় না, তারা অভিযোজিত হয়। দ্বীপ মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে জীবন ধারণের তাগিদেই সেখানে বিবর্তন প্রক্রিয়া শুরু হয়। খাপ খাইয়ে নিতে না পেরে অনেকে হাঁটে বিলুপ্তির পথে। উপমহাদেশে তখন ভুটান, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলংকা ও মালদ্বীপ। উত্তর প্রান্ত নির্ধারিত হয়েছে হিমালয়ের মাধ্যমে, দক্ষিণাংশে সমুদ্র। এদিকে জুরাসিক যুগের প্রথম ভাগে ভাঙনের ফলে গন্ডোয়ানার উত্তর-পূর্ব দিক থেকে লাসা ও পশ্চিম বার্মা আলাদা হয়ে যায়। সেটা না হলে ইন্ডিয়া নিজেই একটা মহাদেশ হতে পারত। তবে তখনো বাংলাদেশের বড় অংশই অস্তিত্ব লাভ করেনি।

সংঘাতের মধ্য দিয়ে সৃষ্ট হিমালয় বৈশ্বিক জলবায়ুতে পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। বদলে দিয়েছে স্থানীয় পরিবেশও। তখন থেকেই এখানে ব্যাপক হারে বর্ষা হতে থাকে। বায়ুপ্রবাহ থেকে শুরু করে তাপমাত্রা, হিমালয়ের ভূমিকা ছিল পুরোটাজুড়েই। আজও পৃথিবীর এক-পঞ্চমাংশ জনসংখ্যা হিমালয়ের পানি সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে ছড়িয়ে থাকা গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, সিন্ধু ও ইয়াংসির জন্ম হয়েছে হিমালয় থেকেই। নদীবাহিত হয় বুকভর্তি পলি নিয়ে। হিমালয়ের এত পানিপ্রবাহের সময় ভূমিক্ষয় হয়েছে। সে ক্ষয় হওয়া ভূমি কোনো না কোনো এক জায়গায় তো যেতে হবে। সে প্রবাহিত পলি ২ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে জন্ম দেয় ২০ কিলোমিটার পুরুত্বের ভূমি স্তরের। হিমালয় ধুয়ে আসা পলি নিয়ে গড়ে ওঠা বিশ্বের অন্যতম উর্বর ভূমি ইতিহাসে পরিচিত বঙ্গীয় বদ্বীপ হিসেবে।

ক্রমে ভারতীয় প্লেটে থাকা প্রাণী ও উদ্ভিদের সঙ্গে ইউরেশিয়া প্লেটের প্রাণী ও উদ্ভিদের যোগাযোগ বাড়তে থাকে। এ সময় থেকেই ভারত থেকে বাইরে কিংবা বাইরে থেকে ভারতে বিভিন্ন প্রাণী ও উদ্ভিদ প্রবেশ করে। দুর্দান্ত সে আখ্যানের অন্যতম সেরা উদাহরণ মেহেগনি গাছ। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার বড় অংশজুড়ে মেহেগনি গাছের ব্যাপক বিস্তার দৃশ্যমান। ক্রিটাসিয়াস যুগের মধ্যবর্তী সময়ে গন্ডোয়ানায় উদ্ভব ঘটে এ গাছের। তারপর দীর্ঘ সময়ে ভারতীয় প্লেটের সঙ্গে তারাও বাসা বেঁধেছে দক্ষিণ এশিয়ায়। একইভাবে কয়েক প্রজাতির সাপ ও বিচ্ছুও ভারতে বসবাস করছে গন্ডোয়ানার যুগ থেকে। ইউরেশিয়ার সঙ্গে ধাক্কা খাওয়ার পর প্রায় দেড় কোটি বছর আগে পর্যন্ত প্রাণিজ অভিবাসন চলছিল। অবশ্য এখনো নানাভাবে বাইরের সঙ্গে ভারতের লেনদেন অব্যাহত।

গন্ডোয়ানাল্যান্ড থেকে ভারতীয় প্লেটের বিচ্ছিন্ন হয়ে ইউরেশিয়ার সঙ্গে সংঘাতটা কেবল এ অঞ্চলকে কাঠামো দিয়েছে, এমন না। সে সংঘাত বদলে দিয়েছে গোটা দুনিয়ার ইতিহাস। এর আগে পৃথিবী অনেক উত্তপ্ত ছিল। উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে ‘আইসক্যাপ’ ছিল না। কিন্তু সে সংঘাতের পর হিমালয়ের সিলিকেট বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করতে শুরু করে। ফলে শুরু হয় গ্লোবাল কুলিংয়ের যাত্রা। তারপর সংঘাতের জেরে হিমালয়ের উচ্চতা যত বাড়তে থাকে; তাপমাত্রা তত কমতে থাকে। এ তাপমাত্রা হ্রাসের মধ্য দিয়েই সূচনা ঘটল মানব ইতিহাসের সর্বশেষ বরফ যুগের।

আহমেদ দীন রুমি: সহসম্পাদক, বণিক বার্তা