আজ টি-টোয়েন্টির বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের মুখোমুখি বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা

পরপর দুটি টেস্ট সিরিজের মাঝের সময়টাতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলা একটু বিরক্তিকরই। তেমন অনুভূতিই এখন ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দলের। সদ্যই দুই টেস্টের সিরিজে বাংলাদেশকে হারিয়েছে ভারত। এবার দুই দল তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে মুখোমুখি। ১২ অক্টোবর টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষে ১৬ অক্টোবর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলতে নামছে ‘মেন ইন ব্লু’রা। অন্যদিকে নাজমুল হোসেন শান্তর দল ২১ অক্টোবর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ খেলতে নামছে। ব্যস্ত সূচিতে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রথম টি-টোয়েন্টিতে লড়বে ভারত ও বাংলাদেশ।

আগে ও পরের টেস্ট সিরিজের কথা বিবেচনায় নিয়ে এ সিরিজে ভারত বিশ্রাম দিয়েছে তাদের একাধিক শীর্ষ খেলোয়াড়কে। সূর্যকুমার যাদবের নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলবেন একঝাঁক তরুণ, যারা মূলত আইপিএল দিয়ে আলোয় এসেছেন। ভারত বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলেও এ ফরম্যাটে বাংলাদেশের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম অভিজ্ঞ দল নিয়ে খেলবে। বাংলাদেশ স্কোয়াড সম্মিলিতভাবে খেলেছে ৬৪৪ ম্যাচ আর ভারতীয় স্কোয়াডের রয়েছে ৩৮৯ ম্যাচের অভিজ্ঞতা। ভারতীয় দলে অভিজ্ঞদের মধ্যে আছেন সূর্যকুমার, হার্দিক পান্ডিয়া ও অর্শদীপ সিং। নবাগত হিসেবে আছেন মায়াঙ্ক যাদব, নিতিশ কুমার রেড্ডি ও হরষিত রানা। গত জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ের মাঠে অভিষেক ঘটা অভিষেক শর্মা পাঁচটি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। এবার বাংলাদেশ সিরিজে ম্যাচ সংখ্যা বাড়ানোর সুযোগ পেতে পারেন।

স্বাগতিকরা বিশ্রাম দিয়েছে বেশির ভাগ শীর্ষ বোলারকে। ফলে অভিষেকের সুযোগ আসতে পারে মায়াঙ্ক যাদবের, যিনি আইপিএলে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টের হয়ে ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বল করেছেন। কেকেআরের হয়ে খেলা স্পিনার নিতিশ রানাও সুযোগ পেতে পারেন। 

পেস অলরাউন্ডার হিসেবে দলে আছেন হার্দিক পান্ডিয়া ও শিবম দুবে। স্পিনার হিসেবে আছেন ওয়াশিংটন সুন্দর, রবি বিষ্ণু ও বরুণ চক্রবর্তী। 

খুব বেশি টি-টোয়েন্টি খেলা হয় না বাংলাদেশের। বিশ্বকাপের পর পাকিস্তানে দুটি টেস্ট খেললেও সেখানে ছিল না কোনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। ভারতের সিরিজটা তাই দলটির জন্য বিরাট এক সুযোগ। অতিথি দলটির ক্যাম্পেও একটা উৎসব উৎসব ভাব।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুস্তাফিজুর রহমান, লিটন দাস, তাসকিন আহমেদ ও শেখ মেহেদী হাসান দলের অভিজ্ঞ নাম। তাদের প্রত্যেকের নামের পাশে আছে অন্তত ৫০টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। ভারতকে হারাতে চাইলে এ অভিজ্ঞদের ঐক্যবদ্ধ শক্তি কাজে লাগাতে হবে বাংলাদেশকে। নতুন হলেও টি-টোয়েন্টির প্রতিশ্রুতিশীল খেলোয়াড় হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন তানজিদ হাসান তামিম, তানজিম হাসান সাকিব ও রিশাদ হোসেন। তবে তাদের সবাই একসঙ্গে একাদশে নাও থাকতে পারেন। 

বাংলাদেশের ইতিহাসে সেরা খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন এবং টেস্ট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। তাকে ছাড়াই আজ ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। সাকিবের জায়গায় টি-টোয়েন্টি দলে আনা হয়েছে আরেক অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজকে। আজ একাদশে সুযোগ পেতে পারেন টপ অর্ডার ব্যাটার পারভেজ হাসান ইমন। 

দুই দলের জন্যই চমক হয়ে আসতে পারে বরং মাঠের উইকেট। শ্রীমন্ত মাধবরাও সিন্ধিয়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজই প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। গোয়ালিয়রে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছিল ২০১০ সালে। তখন ক্যাপ্টেন রূপ সিং স্টেডিয়ামে ওয়ানডে ক্রিকেটের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন ভারতীয় সুপারস্টার শচীন টেন্ডুলকার।

বাংলাদেশের তারকা ব্যাটার তাওহীদ হৃদয় গতকাল সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমরা এখানে দুদিন অনুশীলন করলাম। উইকেট কিছুটা মন্থর ও নিচু বাউন্সের। আমরা আমাদের মতো খেলার চেষ্টা করব।’ ২০১৯ সালে দিল্লিতে ভারতকে হারানোর সুখস্মৃতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে আমাদের খুব ভালো সুযোগ আছে পারফর্ম করার। আমরা অবশ্যই জিততে চাইব।’

বাংলাদেশ দলনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর চোখ অবশ্য সুদূরে। এখন থেকেই ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিতে চান তিনি। শান্ত বলেন, ‘এ সিরিজ থেকেই দেখবেন, দলের প্রত্যেকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে খেলবে। প্রত্যেকে জয়ের জন্য খেলবে। আমি মনে করি, এ সিরিজে যারা এসেছেন এবং সঙ্গে আরো চার-পাঁচজনই হয়তো ২০২৬ বিশ্বকাপ খেলবেন। কাজেই আমি মনে করি, এ সিরিজ দিয়েই আমাদের প্রস্তুতি শুরু হবে।’

এরপর ৯ অক্টোবর দিল্লিতে দ্বিতীয় এবং ১২ অক্টোবর হায়দরাবাদে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে ভারত ও বাংলাদেশ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন