জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদ মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। শাফিন আহমেদ স্ত্রী ও তিন সন্তান রেখে গেছেন। বড় ভাই হামিন আহমেদ তার মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
শাফিন আহমেদের ভাই হামিন গনমাধ্যমকে বলেন, ‘কনসার্টে অংশ নিতে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে যান শাফিন। ২০ জুলাই শাফিনের একটা কনসার্ট ছিল ভার্জিনিয়ায়। শোর আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এ কারণে শো বাতিল করেন। সেদিনই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার শরীরের নানা অঙ্গ অকার্যকর হতে থাকলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। এরপর তিনি চলে যান না ফেরার দেশে।’
হামিন জানান, যুক্তরাষ্ট্রে তাদের কয়েকজন নিকটাত্মীয় আছেন। তারা আপাতত শাফিনের কাছে আছেন। তিনি বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে যাত্রা করবেন। সেখানে গিয়ে দ্রুত ভাইয়ের মরদেহ দেশে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করবেন।
শাফিন আহমেদের জন্ম ১৯৬১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। মা কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী ফিরোজা বেগম ও বাবা সংগীতজ্ঞ কমল দাশগুপ্ত। এ পরিবারে জন্ম নেয়ার কারণে ছোটবেলা থেকে তিনি গানের সান্নিধ্যে বড় হন।
শৈশবে বাবার কাছে উচ্চাঙ্গসংগীত আর মায়ের কাছে নজরুলসংগীত শিখেছেন। এরপর বড় ভাই হামিন আহমেদসহ যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার সুবাদে পাশ্চাত্য সংগীতের সংস্পর্শে এসে ব্যান্ড সংগীত শুরু করেন। দেশে ফিরে গড়ে তোলেন মাইলস, যা এখনো দেশের শীর্ষ ব্যান্ডের একটি। এ ব্যান্ডের ৯০ ভাগ গান শাফিন আহমেদের কণ্ঠে সৃষ্টি হয়েছে। পেয়েছে তুমুল জনপ্রিয়তা।
শাফিন আহমেদের জনপ্রিয় কিছু গানের মধ্যে ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘জ্বালা জ্বালা’, ‘ফিরিয়ে দাও’ ও ‘ফিরে এলেনা’ অন্যতম। ২০১০ সালের ১২ জানুয়ারি ব্যক্তিগত কারণে মাইলস ছাড়েন শাফিন আহমেদ এবং রিদম অব লাইফ নামে নতুন একটি ব্যান্ড প্রতিষ্ঠা করেন। এ দলে তার সঙ্গে যোগ দেন ওয়াসিউন (গিটার), শাহিন (গিটার), সুমন (কি-বোর্ড), উজ্জ্বল (পারকাশন), শামস (বেজ গিটার) ও রুমি (ড্রামস)। পরে একই বছরের শেষ দিকে শাফিন আবারো মাইলসে ফিরে আসেন।
ব্যক্তিজীবনে বেশকিছু বিতর্কেও জড়িয়েছিলেন শাফিন আহমেদ। কিন্তু সেসব পাশে রেখে গানের জন্যই শ্রোতা ও ভক্তদের মধ্যে বেঁচে থাকবেন এ শিল্পী।