বাইডেন সরে গেলে কি ট্রাম্পকে হারাতে পারবেন কমলা হ্যারিস?

বণিক বার্তা অনলাইন

ছবি— দ্য কোয়েন্ট।

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চার মাস বাকি। এই সময়ে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জো বাইডেনের ওপর চাপ ক্রমাগত বাড়ছে। প্রথম টিভি বিতর্কে তিনি রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ধরাশায়ী হয়েছেন। যদিও তিনি বলেছেন, তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন না। তবে, দ্বিতীয় টিভি বিতর্কেও দুর্বলতা প্রকাশ পেলে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হবেন। তখন তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। এসব নিয়েই বার্তা সংস্থা রয়টার্স একটি বিশ্লেষণী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনটির শিরোনাম, ‘নভেম্বরের প্রেসিডেন্সিয়াল দৌড়ে কমলা হ্যারিস কি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারাতে পারবেন?’

কমলা হ্যারিসের বয়স ৫৯। তিনি সাবেক মার্কিন সিনেটর এবং ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল। তার বাবা ডোনাল্ড জে হ্যারিস একজন আফ্রিকান-জ্যামাইকান। মা শ্যামলা গোপালান একজন ভারতীয় (তামিল)। কমলা হ্যারিসই প্রথম আফ্রিকান আমেরিকান এবং এশিয়ান ব্যক্তি যিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তা হবে আরেকটি রেকর্ড, প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট।

ডেমোক্রেটিক পার্টির দাতা, কর্মী এবং নেতারা এরই মধ্যে প্রশ্ন তুলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারানোর জন্য কি জো বাইডেনের চেয়ে কমলা হ্যারিসের বেশি সম্ভাবনা রয়েছে?

কমলা হ্যারিস অবশ্য তার সাড়ে তিন বছরের হোয়াইট হাউসের কার্যকালে খুব বেশি সাফল্য দেখাতে পারেন নি। তবে গত বছরের মতো সম্প্রতি গর্ভপাতের অধিকারের বিষয়ে জোরাল অবস্থানের পর তরুণ ভোটারদের মধ্যে তার গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে।

কমলা হ্যারিস আসলেই কি জো বাইডেনের চেয়ে যোগ্য প্রার্থী? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এরই মধ্যে কয়েকটি জরিপ করা হয়েছে। এসব জরিপে অংশগ্রহণকারীরাও বলছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জো বাইডেনের চেয়ে কমলা হ্যারিস ভালো করতে পারবেন। তবে তাকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হবে।

গত ২৭ জুন রাতে সিএনএন প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে জো বাইডেন দুর্বল পারফরম্যান্স করেন। এরপরই তাকে নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। ২ জুলাই প্রকাশিত সিএনএনের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৪৩ শতাংশ ভোটার যেখানে জো বাইডেনের পক্ষে, সেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে ৪৯ শতাংশ ভোটার সমর্থন দিয়েছেন। অন্যদিকে কমলা হ্যারিসের পক্ষে যেখানে ৪৭ শতাংশ ভোটার, সেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে ৪৫ শতাংশ ভোটার সমর্থন দিয়েছেন।

দলনিরপেক্ষ ভোটারদের ৪৩ শতাংশ কমলা হ্যারিসকে এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ৪০ শতাংশ সমর্থন করে। আর উভয় দলের মধ্যপন্থী ভোটাররা কমলা হ্যারিসকে ৫১ শতাংশ এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ৩৯ শতাংশ পছন্দ করে।

গত সপ্তাহে রয়টার্স/ইপসোস জরিপে দেখা গেছে, ৪২ শতাংশ কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করে এবং ৪৩ শতাংশ ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন করে।

জো বাইডেনের বিকল্প হিসেবে আরো যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, তাদের মধ্যে কেবল সাবেক ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা জরিপে এগিয়ে রয়েছেন। তবে তিনি কখনোই নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহ প্রকাশ করেননি।

প্রথম টিভি বিতর্কের পরে অভ্যন্তরীণ জরিপে কমলা হ্যারিসকে ৪৫ শতাংশ ভোটার সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ৪৮ শতাংশ ভোটার সমর্থন জানিয়েছেন।

জরিপে কমলা হ্যারিসকে এত গুরুত্ব দেয়ার কারণ হচ্ছে রিপাবলিকান পার্টির দাতারা রয়টার্সকে বলেছেন যে, তারা চান না ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বি হোন কমলা হ্যারিস।

২৭ জুন বিতর্কের পর নেভাদায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য তহবিল সংগ্রহকারী পলিন লি বলেন, ‘কমলা হ্যারিসের পরিবর্তে আমি জো বাইডেনকে পছন্দ করব।’

জরিপকারী প্রতিষ্ঠান ফাইভ থার্টি এইট জানায়, ৩৭ দশমিক ১ শতাংশ ভোটার কমলা হ্যারিসকে পছন্দ করেন এবং ৪৯ দশমিক ৬ শতাংশ অপছন্দ করেছেন। জো বাইডেনকে ৩৬ দশমিক ৯ শতাংশ পছন্দ এবং ৫৭ দশমিক ১ শতাংশ অপছন্দ করেন। এছাড়া ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ৩৮ দশমিক ৬ শতাংশ পছন্দ এবং ৫৩ দশমিক ৬ অপছন্দ করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন