ইসরায়েলের তেল আবিবের কাছে হিজবুল্লাহ প্রথমবারের মতো দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। দেশটির গভীরে বাণিজ্যিক কেন্দ্রস্থলে এ হামলা
ছিল অভূতপূর্ব। উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষকে এ হামলা আরো বাড়িয়ে দেবে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে।
তবে বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) হিজবুল্লাহর ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রটিকে আকাশপথেই প্রতিহত করায়
কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। খবর সিএনএন।
হিজবুল্লাহকে
লক্ষ্য করে ইসরায়েলি হামলায় কয়েক ডজন শিশুসহ লেবানন জুড়ে ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত
হওয়ার দুইদিন পর হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের তেল আবিবে এ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করল।
ইরান
সমর্থিত জঙ্গি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, এটি ইসরায়েলের গোয়েন্দা পরিষেবা মোসাদের
সদর দফতরকে লক্ষ্য করে একটি কাদের-১ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
হিজবুল্লাহর
দাবি, এ অপারেশনটি ছিল গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি জনগণ এবং তাদের বীরত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক
প্রতিরোধের সমর্থনে এবং লেবানন ও এর জনগণের প্রতিরক্ষার জন্য পরিচালিত।
মোসাদের
হেডকোয়ার্টার্স লক্ষ্য করে হিজবুল্লাহর হামলা নজিরবিহীন। কারণ এ প্রথমবার লেবাননভিত্তিক
প্রতিরোধ গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তেল আবিবের শহরতলিতে অবস্থিত
কোনো লক্ষ্যবস্তুকে হামলা চালিয়েছে। এর আগে হিজবুল্লাহ ঘোষণা দিয়েছিল হামলার বদলে
হামলা করা হবে এবং বৈরুতে হামলার জবাব তেল আবিবে দেয়া হবে।
এদিকে
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, ভূমধ্যসাগরীয়
উপকূলে ৪০ লাখেরও বেশি লোকের শহর তেল আবিবের কাছে হিজবুল্লাহর ছোঁড়া দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রকে
প্রতিহত করা হয়েছে। তারা দক্ষিণ লেবাননের নাফাখিয়াহতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে ব্যবহৃত
হিজবুল্লাহর লঞ্চারে আঘাত করতে সক্ষম হয়েছে।
আইডিএফ
আরো জানায়, তারা ডেভিডস স্লিং
প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে ক্ষেপণাস্ত্রটি ঠেকিয়ে দিয়েছে। তবে ইসরায়েলের সামরিক
মুখপাত্র নাদাভ শোশানি ক্ষেপণাস্ত্রটিকে ভারী এবং দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বলে বর্ণনা করেছেন।
এর আগে হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, লেবাননের রাজধানীতে ইসরায়েলি হামলা
ইসরায়েলের অর্থনৈতিক কেন্দ্রে হিজবুল্লাহর হামলার কারণ হবে।
প্রসঙ্গত,
হামাসের সঙ্গে অক্টোবরের সংঘর্ষের পর থেকে লেবানন থেকে শত শত রকেট ও ড্রোন নিক্ষেপ
করা হয়েছে ইরায়েলে।
এদিকে
চলমান আন্তঃসীমান্ত লড়াইয়ের ফলে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চল থেকে প্রায় ৬০ হাজার মানুষকে
সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ইসরায়েল জানিয়েছে, এ বাসিন্দাদের বাড়ি ফিরে যাওয়া নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত তাদের লড়াই চলবে।
অন্যদিকে প্রায় দুই দশকের মধ্যে সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ছিল লেবাননে সবচেয়ে প্রাণঘাতী দিন। ওই দিন লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৫০ জন শিশুসহ ৫০০ এর অধিক লোক প্রাণ হারিয়েছে।