মিয়ানমারে বিস্ফোরণ : সীমান্তে ফের আতঙ্ক

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, কক্সবাজার

ছবি : বণিক বার্তা

মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের জের ধরে ওপার থেকে আসা একটানা বিস্ফোরণের শব্দের কেঁপে উঠছে কক্সবাজারের টেকনাফ শহর ও আশপাশের এলাকা। গেল দুই দিন বন্ধ থাকার পর গতকাল মঙ্গলবার থেকে আবারো রাখাইন থেকে টেকনাফে ভেসে আসে বিস্ফোরণের শব্দে সীমান্তে আবারও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

বাসিন্দাদের অনেকে বলছেন, মিয়ানমারের বোমা ও গুলির শব্দে মাটি কেঁপে উঠছে। ভয়ে সারা রাত না ঘুমিয়ে বসে থাকে মানুষজন। এমন বিস্ফোরণের শব্দ আগে শোনেননি তারা। বুধবার (২৬ জুন) সকাল থেকে থেমে ওই শব্দ ভেসে আসছে।টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যংপাড়া, কায়ুকখালীপাড়া, জালিয়াপাড়া, কুলালপাড়া, অলিয়াবাদ, কলেজপাড়া, ইসলামাবাদ, পুরাতন পল্লানপাড়া, ডেইলপাড়া, খাংগার ডেইল, শীলবনিয়াপাড়া, চকবাজার, নাজিরপাড়া, মৌলভীপাড়া, সাবরাং মগপাড়া, আছারবনিয়া, ডেগিল্ল্যার বিল, নয়াপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ জালিয়াপাড়া, উত্তরপাড়া, মিস্ত্রিপাড়া, পশ্চিমপাড়া ও সেন্টমার্টিনসহ গ্রামগুলোয় মর্টারশেল ও বোমার বিকট শব্দে বাড়ি-ঘর কাঁপছে। ভারী মর্টারশেল, বিমান হামলা, গুলির শব্দে আতঙ্কে রয়েছে সীমান্ত এলাকাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারা। 

টেকনাফ সদর ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার এনামুল হক জানান, গতকাল রাত থেকে বজ্রপাতের মত একের এক বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসে। কি হচ্ছে সীমান্তে বলা মুশকিল। এপারে রাতে কারো ঘুম হচ্ছে না। এতে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হচ্ছে। টেকনাফের ফুটবলার শেখ আহমদ বলেন, হ্নীলা সীমান্তে গুলি আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায়। এতে এলাকার মানুষজন ভয়ে আছে কখন কি হয়ে যায়। 

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার থেকে সেন্টমার্টিনে মিয়ানমারের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এবার হামলা হচ্ছে মিয়ানমারের মংডু টাউনশিপের কাদিরবিল, মংনিপাড়া ও সুদাপাড়া এলাকায়। হ্নীলা ইউপি'র চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান,  দুয়েকদিন বিস্ফোরণের শব্দ বন্ধ থাকার পর রাত থেকে বড় বড় বিস্ফোরনের শোনা গেছে। সীমান্তে বসবাসরত মানুষজনকে সতর্ক থাকতে আগে থেকে বলে দেয়া আছে। 

সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের বিপরীতে সাবরাং এলাকা। একের পর এক বিস্ফোরণে টেকনাফ সীমান্তের বাড়ি-ঘর কেঁপে উঠছে। আতঙ্কে রয়েছে সীমান্ত এলাকাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারা। 

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী জানান, সীমান্ত পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক নজরে আছে। বিজিবি, কোস্টগার্ডসহ সংশ্লিষ্টরা কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। 

টেকনাফ ব্যাটালিয়ন-২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে নাফ নদী সীমান্ত দিয়ে নতুন করে যেন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে ২৪ ঘণ্টা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন