টাকা পাচার থেকেই ডলার সংকটের শুরু —ড. শামসুল আলম

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেছেন, ‘প্রতি বছর বাংলাদেশ ৭-৮ বিলিয়ন ডলার বা ৮১ থেকে ৯২ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়। এ টাকা পাচার থেকেই ডলার সংকটের শুরু। তাই রোধ করায় জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ দরকার।’ 

রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে গতকাল ‘বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অর্থনীতি: প্রবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, খাদ্য ও পুষ্টি’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন। সেমিনারটির আয়োজন করে বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতি। 

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ব্যাংক একীভূতকরণের পদক্ষেপ প্রসঙ্গে শামসুল আলম বলেন, ‘মার্জারের ফলাফল অনিশ্চিত। খারাপ ব্যাংককে ভালোর সঙ্গে নিয়ে তাকে ভালো করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এখন খারাপের প্রভাবে ভালো ব্যাংক খারাপ হয়ে যায় কিনা সেটি বিচার-বিশ্লেষণ না করে করা ঠিক হবে না। আমার কাছে মনে হয় এটা অনিশ্চিত। এর রাশ টানতে হবেই। এজন্য একটি ব্যাংক কমিশন করলে ভালো। না হলে অন্তত শক্তিশালী একটা কমিটি করা উচিত বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদদের নিয়ে।’

তিনি আরো বলেন, ‘এবারের বাজেটে সরকার বেশকিছু সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে। মূল্যস্ফীতি কমানোর উদ্দেশ্যে বাজেটের আকার কমিয়েছে। মূল্যস্ফীতির কারণে এবারের বাজেট হওয়ার কথা ছিল ৯ লাখ ৯২ হাজার কোটি টাকা। সেখানে এবার বাজেট সংকুচিত করে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রায় ২ লাখ কোটি টাকার বাজেট সংকুচিত করা হয়েছে। টাকার সরবরাহ কমলে মূল্যস্ফীতি কমবে। এবারের বাজেটে কৃপণতা দেখানো হয়েছে। এছাড়া ঘাটতিও কমানো হয়েছে, যা খরচ কমানোর স্বার্থে করা হয়েছে। সেজন্য বলছি, এটি একটি সাহসী বাজেট। বাজেটে করপোরেট করহার কমানো হয়েছে। উৎপাদন বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কৃষিতে উন্নত প্রযুক্তি বা যন্ত্রপাতি আমদানির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সামষ্টিক অর্থনীতিতে বাজেটের ইতিবাচক দিক হলো রাজস্ব বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ পর্যায়ে উৎসে কর ১ শতাংশ কমানো মূল্যস্ফীতি কমাতে ভূমিকা রাখবে। কিছু পণ্যের দাম কমছে। বাজেটের পর দাম বাড়েনি। মে পর্যন্ত ১১ মাসে প্রবাসী আয় ২ বিলিয়ন বেড়েছে।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, ‘এ বাজেট জনবান্ধব। কোনো কিছু থাকলে পুনর্বিবেচনা করার সম্ভাবনা আছে। বাজেট এখনো পাস হয়নি, এটা প্রস্তাবিত বাজেট। বাজেট সবে দিয়েছি। বিশ্বব্যাংক বলেছে, বাংলাদেশ ভালো আছে। বিশ্বব্যাংক যা বলছে, আমাদের শুনতে হবে। কারণ তারা আমাদের টাকা দেয়। আমাদের টাকা লাগবে। আপনি কি টাকা দেন? আপনি টাকা দেন, আপনার কথা শুনব।’

সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় আরো বক্তব্য দেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিনিধি ড. জিয়াকুন শি প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন