![](https://bonikbarta.net/uploads/news_image/news_388056_1.jpg?t=1719635265)
রাত থেকে একটানা ভারি বর্ষণ। তাতে সিলেট নগরের অর্ধেকের বেশি এলাকা জলমগ্ন হয়ে গেছে। কোথাও হাঁটু সমান, কোথাও কোমর সমান পানিতে ডুবে আছে। এমন পরিস্থিতিতে পবিত্র ঈদুল আজহা পালন করছে সিলেট নগরী। আনন্দের চেয়ে ঈদের সকালটাই যেন ফ্যাকাসে হয়ে গেছে নগরবাসীর কাছে।
সোমবার (১৭ জুন) ভোরে নগরীতে সরজমিনে ঘুরে ও বিভিন্ন এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করে এমনটি জানা গেছে।
রোববার (১৬ জুন) দিবাগত রাত ২টার পর সিলেটে ভারি বর্ষণ শুরু হয়। বেলা ২টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হচ্ছিল। রোববার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ১৭৩ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সোমবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত হয়েছে ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত। তবে শনিবার (১৫ জুন) সকাল ৯টা থেকে ১৬ জুন সকাল ৯টা পর্যন্ত পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৪৪১ মিলিমিটার।
এদিকে সিলেটে ভারি বর্ষণে নগর এলাকার শাহজালাল উপশহর, দরগা মহল্লা, পায়রা, সুবিদবাজার বনকলাপাড়া, চৌহাট্টা, জিন্দাবাজার, কাজল শাহ, মেডিকেল রোড, বাগবাড়ি, কালীবাড়ি, হাওলাদারপাড়া, সোবহানীঘাট, উপশহর, যতরপুর, তেরোরতন, সোনারপাড়া, কেওয়াপাড়া, সাগরদিঘিরপাড়, পাঠানটুলা, মিয়া ফাজিলচিশত, জালালাবাদ, হাউজিং এস্টেট, শাহি ঈদগাহ, ঘাসিটুলা, হাওয়াপাড়া, মীরাবাজার, শিবগঞ্জ, মাছিমপুর, জামতলা ও তালতলা এলাকায় পানি থইথই করছে। ফলে অনেকে ঈদগাহে গিয়ে নামাজ পড়তে পারেননি। আবার অনেক মসজিদেও নিচতলায় জলাবদ্ধতার পানি ঢুকে পড়ায় ওপরের তলায় নামাজ আদায় করতে হয়েছে।
নগরের পায়রা এলাকার বাসিন্দা ও প্রকাশনা সংস্থা চৈতন্যের স্বত্বাধিকারী রাজীব চৌধুরী বলেন, ‘রাত সাড়ে ৩টার দিক থেকে পায়রা এলাকার রাস্তা প্রায় তিন ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়। এখন সেখানে কোমর সমান পানি। ঈদের দিন খুব আতঙ্ক নিয়ে এসেছে এবার। লোকজন পশু কোরবানি নিয়েও পড়েছেন চরম বিপাকে।’
নগরীর বনকলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা অ্যাডভোকেট আব্দুল মুকিত অপি বলেন, ‘যে মসজিদে জামাত হবে, সেখানে পানি ঢুকে পড়ে। পরে পানি সেচে এরপর নামাজের ব্যবস্থা করা হয়।’
শাহজালাল উপশহর এলাকার বাসিন্দা অধ্যাপক বাছিত ইবনে হাবিব পানির মধ্যে গেটে বাঁধা কোরবানির গরু হাঁটু পর্যন্ত পানিতে ডুবে যাওয়ার দৃশ্যসংবলিত ভিডিও প্রকাশ করলে কেউ কেউ বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ডুবে যাচ্ছি, দিন দিন পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে, দেখার যেন কেউ নেই।’
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী পরিচালক সজিব হোসাইন জানান, রোববার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ১৭৩ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সোমবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।