গোল্ডম্যান স্যাকসের প্রতিবেদন

২০৩০ সালের মধ্যে এলএনজির বৈশ্বিক সরবরাহ ৮০% বাড়ার সম্ভাবনা

বণিক বার্তা ডেস্ক

২০২৯ সালের মধ্যে এলএনজি খাতে বিনিয়োগ বাড়বে ৫০ শতাংশেরও বেশি ছবি: রয়টার্স

তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) বৈশ্বিক সরবরাহ ২০৩০ সালের মধ্যে ৮০ শতাংশ বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, কাতার ও উত্তর আমেরিকায় গৃহীত নতুন এলএনজি প্রকল্প সরবরাহ বাড়ার পেছনে ভূমিকা রাখবে। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আর্থিক পরিষেবা সংস্থা গোল্ডম্যান স্যাকস। খবর আরব নিউজ। 

প্রতিবেদনে সংস্থাটি আরো জানায়, ২০২৯ সালের মধ্যে এলএনজি খাতে ৫০ শতাংশেরও বেশি বিনিয়োগ বাড়বে। 

তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনে শীর্ষ দেশগুলোর একটি রাশিয়া। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার গ্যাসের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। যার কারণে জ্বালানি সংকটে পড়ে বিশ্ব। কাতার ও উত্তর আমেরিকায় গৃহীত নতুন প্রকল্প চলমান জ্বালানি সংকটের অবসান ঘটাবে বলে সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানিয়েছে গোল্ডম্যান স্যাকস।  

এ বিষয়ে সংস্থাটির ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার প্রাকৃতিক সম্পদ গবেষণা বিভাগের প্রধান মিশেল ডেলা ভিগনা বলেন, ‘‌আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী এলএনজির সরবরাহ ৮০ শতাংশ বাড়ার সম্ভাবনা দেখছি। উত্তর আমেরিকা ও কাতারে নতুন প্রকল্পের কারণে বিশ্বব্যাপী এর সরবরাহ বাড়বে। এছাড়া এতে চলমান জ্বালানি সংকটের অবসান হওয়ার পাশাপাশি ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলোয় প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম কমবে।’

এর আগে গত জানুয়ারিতে কাতার এনার্জি প্রধান সাদ আল-কাবি দেশটির নর্থ ফিল্ডে এলএনজির নতুন প্রকল্প সম্প্রসারণের ঘোষণা করেছিলেন। নতুন প্রকল্পে এলএনজি উৎপাদন সক্ষমতা বছরে আরো ১ কোটি ৬০ লাখ টন বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে প্রকল্পের মোট উৎপাদন সক্ষমতা দাঁড়াবে বছরে ১৪ কোটি ২০ লাখ টন। 

একই মাসে কাতার এনার্জি ১৫ বছরের জন্য বাংলাদেশে বছরে ১০ লাখ টন পর্যন্ত এলএনজি সরবরাহের জন্য মার্কিনভিত্তিক এক্সিলারেট এনার্জির সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। পরের মাসেই কাতারের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থা পেট্রোনেটের সঙ্গে ২০ বছরের জন্য ভারতে ৭৫ লাখ টন এলএনজি সরবরাহের জন্য আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

বর্তমানে বিশ্বের জ্বালানি তেল ও গ্যাস শিল্প একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে গোল্ডম্যান স্যাকস। সম্প্রতি বিশ্বে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা দীর্ঘমেয়াদি হারে কমছে। অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক গ্যাসের জন্য চাহিদা বাড়ছে। 

গোল্ডম্যান স্যাকস আরো জানায়, জ্বালানি তেল ও গ্যাস শিল্পে মূলধন ব্যয় ২০২০-২৩ সাল পর্যন্ত ১১ শতাংশ করে বেড়েছে। তবে এ খাতে মূলধন ব্যয় ২০২৩-২৬ সাল পর্যন্ত ৪ শতাংশ করে কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ইউরোপের পরই এশিয়ার দেশগুলোয় সর্বাধিক এলএনজি রফতানি করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে গত বছর কাতার ও অস্ট্রেলিয়াকে পেছনে ফেলে দেশটি এলএনজি রফতানিতে বিশ্বের শীর্ষস্থানে উঠে এসেছিল। এমনকি সে সময় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে এলএনজির বৈশ্বিক বাণিজ্যে বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা দেয়। যুদ্ধ শুরুর আগে ইউরোপের দেশগুলো রাশিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি এলএনজি আমদানি করত। কিন্তু ইউক্রেনে হামলার প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর কয়েক দফায় নিষেধাজ্ঞা দিলে এ বাণিজ্যপ্রবাহে ভাটা পড়ে। রুশ এলএনজির ওপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। অঞ্চলটি বিকল্প হিসেবে বেছে নেয় যুক্তরাষ্ট্রকে। এর পর থেকেই মূলত ইউরোপের দেশগুলোয় যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলএনজি রফতানি বাড়ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন