আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা সরকার না নিলেও সেনাবাহিনী নেবে —অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের বিষয়ে সেনাবাহিনী পদক্ষেপ নিতে পারে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি বলেছেন, ‘সরকার কোনো ব্যবস্থা না নিলেও সেনাবাহিনী নেবে। তিনি এখন সেনাবাহিনীতে না থাকলেও তারা ব্যবস্থা নিতে পারে।’

গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অর্থমন্ত্রী এ আভাস দেন। তিনি বলেন, ‘এখন ঋণখেলাপিদের ধরতে হবে। আমি তাদের ধরতে চাই।’ প্রভাবশালী ঋণখেলাপিদের সরকার ধরতে পারবে কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেখা যাক পারি কিনা? সাবেক আইজিপির সব সম্পত্তি আদালত জব্দ করেছে। সাবেক সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তিনিও তো ধরা পড়েছেন।’ এক্ষেত্রে সরকারের সমর্থন আছে কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের সমর্থন না থাকলে পারবে?’ 

সাবেক সেনাপ্রধানের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, ‘সরকার কোনো ব্যবস্থা না নিলেও সেনাবাহিনী নেবে। তিনি এখন সেনাবাহিনীতে না থাকলেও তারা ব্যবস্থা নিতে পারে।’

দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘চেষ্টা করছি ডলারের প্রবাহ কীভাবে বাড়ানো যায়। বৈদেশিক মুদ্রার সমস্যা আমরা কাটিয়ে উঠতে পারব। এজন্য কাজ করছি। অফশোর ব্যাংকিংয়ে আমানতের ক্ষেত্রে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ সুদহার ঘোষণা করা হয়েছে। মামলার কারণে আদালতে অনেক অর্থ আটকে আছে। সেটা আদায়ে কাজ করা হচ্ছে।’

নতুন অর্থবছরের বাজেট সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাজেটে মানুষকে স্বস্তি দেয়ার জন্য চেষ্টা করছি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। এখন আমরা সংকোচনমূলক নীতি থেকে ফিরে আসব। আগামী অর্থবছরে বীভাবে সম্প্রসারণ করা যায়, সে চেষ্টা করা হচ্ছে। অর্থনীতি যেন সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা যায় এবং দ্রব্যমূল্য যেন মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে, সেটা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। এখন দেখা যাক, অনেক অসুবিধা আছে, সেগুলো কাটিয়ে উঠতে হবে। বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি কার্যক্রম আরো বাড়ানো হবে। নির্বাচনী ইশতেহারে যেসব আশ্বাস দেয়া হয়েছে, বাজেটে সেটার প্রতিফলন দেখাতে চাই।’ 

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনার আগে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পরিচালক কৃষ্ণমূর্তি সুব্রামানিয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন অর্থমন্ত্রী। এ বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রিজার্ভ বৃদ্ধি ও রাজস্ব আয় বাড়ানো নিয়ে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলো মোকাবেলা করতে হবে। ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালুর কারণে ডলারের দাম নিয়ে এখন চ্যালেঞ্জ নেই। এ বিষয়ে আইএমএফ অনেক দিন থেকেই বলছিল। তারা এখন বলছে যে আমরা সঠিক পথে আছি। জুনে আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তির অর্থছাড় হবে।’

দেশের অর্থনীতি দুর্যোগের মধ্যে পড়েছে বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন অর্থনীবিদ ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ। অর্থনীতি নিয়ে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যও কথা বলেছেন। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘দুর্যোগটা কী? আমি তো মানে বুঝলাম না! বিরুদ্ধে বললেই কি সে চ্যাম্পিয়ন হলে গেল। ওনারা বিরোধী পক্ষের লোক, তাই এমন বলছেন।’ 

সরকারের সমালোচনা করলেই বিরোধী পক্ষের লোক হয়ে যায় কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘সেটা না, তবে বলার টোন দেখতে হবে। সব নষ্ট হয়ে গেল বলে কিছু নেই।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন