জনগণের ভোট চুরি করে কেউ ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

কৃষক লীগের বৃক্ষরোপণ অভিযান উদ্বোধন শেষে গতকাল গণভবন প্রাঙ্গণে খরগোশের খাঁচার সামনে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তার ‘আয় আয়’ ডাক শুনে ছুটে আসে খরগোশের দল। পরে তিনি খরগোশগুলোকে নিজ হাতে গাজর খাওয়ান ছবি: বাসস

জনগণের ভোট চুরি করে কেউ ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবনে গতকাল কৃষক লীগের আয়োজনে আষাঢ়ের প্রথম দিনে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধনের আগে দেয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘‌ভোট চুরি করে ৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি একটা প্রহসনের নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করে। মাত্র ২২ পার্সেন্ট ভোট পড়েছিল সেখানে। নির্বাচনে কোনো প্রতিপক্ষ ছিল না। জনগণের ভোট চুরি করলে কেউ কিন্তু ক্ষমতায় থাকতে পারে না। বাংলাদেশের জনগণ এ ব্যপারে খুব সচেতন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘‌১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে খালেদা জিয়া দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেছে বলে বিরাট গর্ব, কিন্তু কী দেখা গেল? জনগণের আন্দোলনে ৩০ মার্চই তাকে ক্ষমতা ছেড়ে চলে যেতে হলো। অর্থাৎ ভোট চুরির অপরাধেই কিন্তু তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়।’

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ক্ষমতা দখলকারীরা মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলার পাশাপাশি দেশের গণতান্ত্রিক ধারাকেও ধ্বংস করেছে বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘‌আমাদের দুর্ভাগ্য যে ১৫ আগস্টে জাতির পিতাকে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করে যারা ক্ষমতায় এসেছিল, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা যে শুধু মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে শুধু তা নয়। তারা মানুষের গণতান্ত্রিক ধারাটাও নষ্ট করেছিল। আজকে ভোটের অধিকার নিয়ে কথা বলে, আমার খুব হাসি পায়। জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে এ দেশের সব মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। হ্যাঁ-না ভোট করে অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধ করার জন্য। আবার একাধারে সেনাপ্রধান এবং নিজেকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা দিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ছিল প্রহসন। ‌মসনদে বসেই দল গঠন, ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে তাকে জিতিয়ে আনার জন্য ভোট চুরির একটা প্রক্রিয়া এ দেশে শুরু করেছিল।’

এ দেশের কৃষক-শ্রমিকরা সবসময়ই অবহেলিত থেকে যান মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘‌খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পর দেখা গেল শুধু জনগণের ভোট চুরিই না, এ দেশের কৃষকের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। সার পাওয়া যাচ্ছে না, কৃষক আন্দোলন করে। আর সেই আন্দোলনে গুলি চালিয়ে ১৮ কৃষককে হত্যা করা হয়।’

কৃষিতে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‌বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত কৃষির ওপর নির্ভর করে। আমাদের অর্থনীতি কিন্তু কৃষিনির্ভর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন এবং স্বাধীনতার পরপর সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। কৃষিকে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণ করা, পুষ্টি চাহিদা পূরণ করা এবং দেশের সাধারণ মানুষ দারিদ্র্যমুক্ত হবে, উন্নত জীবন পাবে, সেখানে কৃষক মেহনতি মানুষ সবার কথাই কিন্তু তিনি বলেছেন। একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তুলে তিনি একটা স্বল্প উন্নত দেশে উন্নীত করে যান। ঘুণে ধরা সমাজ ভেঙে যখন তিনি নতুন একটা সমাজ গড়ার পদক্ষেপ নিয়ে বাংলাদেশকে সম্পূর্ণভাবে আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেন তখনই ওনাকে হত্যা করা হয়।’ 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সময় যেখানে-সেখানে কোরবানি করে জায়গা নষ্ট না করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। দেশবাসীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘‌যেখানে-সেখানে কোরবানি করে জায়গা যেন নষ্ট না হয়, নোংরা না হয় সেদিকে সবাইকে লক্ষ রাখতে হবে। যার যার নিজের আবাসস্থল থেকে শুরু করে সব জায়গায় নজর রাখতে হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন