আইসিসি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৪

বিদায় নেয়া নিউজিল্যান্ডের কাছে বিধ্বস্ত উগান্ডা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত
Default Image

টানা দুই হারে চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়া নিউজিল্যান্ড নবাগত উগান্ডাকে খড়কুটোর মতোই উড়িয়ে দিল। গতকাল ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে প্রতিপক্ষকে মাত্র ৪০ রানে অলআউট করে ৮৮ বল ও ৯ উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নেয় কিউইরা। এ ম্যাচে অসংখ্য রেকর্ড গড়েছে কিউইরা। 

টিম সাউদি (৩/৪), ট্রেন্ট বোল্ট (২/৭), মিচেল স্যান্টনার (২/৮), রাচিন রবীন্দ্র (২/৯) ও লকি ফার্গুসনের (১/৯) দুর্দান্ত বোলিংয়ের মুখে ১৮.৪ ওভারে ৪০ রানে গুটিয়ে যায় উগান্ডা। এর মধ্যে ৪ ওভারের কোটা পূরণ করেছেন বোল্ট, সাউদি ও ফার্গুসন। 

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এর চেয়ে কম রানে অলআউট হওয়ার ঘটনা আছে আর মাত্র দুটি। চলতি বিশ্বকাপেই স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে উগান্ডা গুটিয়ে গিয়েছিল ৩৯ রানে। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে বিধ্বস্ত তারা। ২০১৪ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত আসরে চট্টগ্রামে নেদারল্যান্ডসকে ৩৯ রানে থামিয়েছিল শ্রীলংকা।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কোনো দলের সর্বনিম্ন সংগ্রহ এটি। ২০১৬ সালে বাংলাদেশকে ৭০ রানে অলআউট করেছিল কিউইরা। গতকাল ৪ ওভারে মাত্র ৪ রানে ৩ উইকেট নেন অভিজ্ঞ পেসার সাউদি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৪ ওভার বোলিং করা স্পেলে এটিই সবচেয়ে কম রান দেয়ার নজির। চলতি আসরেই পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে ৪ রানে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন উগান্ডার ৪৩ বছর বয়সী খেলোয়াড় ফ্রাঙ্ক নসুবুগা।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে কোনো কিউই বোলারের ৪ ওভারে সবচেয়ে কম রান দেয়ার রেকর্ডও এটি। ২০১০ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪ ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়েছিলেন সাবেক কিউই অধিনায়ক স্পিনার ড্যানিয়েল ভেট্টোরি। সাউদি ছাড়াও গতকাল ৪ ওভারে ১০ রানের কম দিয়েছেন পেসার বোল্ট ও ফার্গুসন। এই প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে কোনো দলের তিন বোলার দশের কম রান দিলেন।

৪২ রান তাড়া করতে নেমে ৮৮ বল বাকি থাকতে জিতেছে নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপে এর চেয়ে বেশি বল বাকি রেখে জয় আছে আর দুটি। দুদিন আগেই ওমানকে ১০১ বল বাকি থাকতে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। ৪৮ রানের লক্ষ্য ইংলিশরা ছুঁয়েছিল মাত্র ৩.১ ওভারে। এছাড়া ২০১৪ সালে চট্টগ্রামে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৯০ বল বাকি থাকতে জিতেছিল শ্রীলংকা। 

উগান্ডার প্রথম বিশ্বকাপ যাত্রা এখানেই শেষ। বড় ব্যবধানে হেরেও তাই কেন উইলিয়ামসনসহ কিউই তারকাদের জার্সি চেয়ে নিলেন উগান্ডার খেলোয়াড়রা, সেই সঙ্গে সেলফিতে বন্দি করে রাখলেন স্মরণীয় মুহূর্তগুলো। অভিষেক আসরে তাদের একমাত্র অর্জন পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে পাওয়া জয়। উগান্ডার দলনায়ক ব্রায়ান মাসাবা বলেছেন, ‘এটা আমাদের জন্য অসাধারণ অভিজ্ঞতা। এটা সত্যি, বড় মঞ্চে এই প্রথম বড় খেলোয়াড়দের মুখোমুখি হয়েছি আমরা। এটা দেশের ক্রিকেটের জন্য বিরাট এক অনুপ্রেরণার উৎস। গোটা দেশ আমাদের খেলা দেখছিল গভীর রাত জেগে। আশা করি, উগান্ডার ক্রিকেটাররা এখান থেকে শিখেছে এবং এই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে আমরা ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে পারব।’

কিউইরা বিদায় নিলেও মিশন এখনো শেষ হয়নি। আগামীকাল রাতে ত্রিনিদাদে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে শেষ ম্যাচ খেলবেন উইলিয়ামসনরা। ২০১৪ সালের পর এবারই প্রথম যেকোনো ফরম্যাটের বিশ্বকাপে সেমিফাইনালের আগে বিদায় নিল তারা। কষ্ট ভুলতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ছাড়ার আগে নিশ্চয়ই শেষ ম্যাচেও বড় জয় তুলে নিতে চাইবেন উইলিয়ামসন-সাউদিরা। 

ম্যাচসেরা সাউদি গতকাল পুরস্কার হাতে নিয়ে বললেন, ‘নিখুঁত পারফরম্যান্স, দারুণ এক জয়। টুর্নামেন্টের বাইরে চলে যাওয়ায় আমরা মর্মাহত। আপনি স্কোয়াডটির দিকে তাকালেই দেখবেন পাবেন, অনেক অভিজ্ঞ খেলোয়াড় এ দলে রয়েছে। তবে প্রথম দুই ম্যাচে আমরা সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি। গত ১০ বছরে বিশ্বকাপে আমাদের রেকর্ড গর্ব করার মতো, অবশেষে যার সমাপ্তি ঘটল।’

সংক্ষিপ্ত স্কোর

উগান্ডা: ১৮.৪ ওভারে ৪০। নিউজিল্যান্ড: ৫.২ ওভারে ৪১/১। ফল: নিউজিল্যান্ড ৯ উইকেটে জয়ী। প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: টিম সাউদি (নিউজিল্যান্ড)।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন