স্মার্টফোন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ

যুক্তরাজ্যের স্কুল ও কম বয়সীদের জন্য নতুন নীতি প্রণয়নের আহ্বান

বণিক বার্তা ডেস্ক

স্মার্টফোন ব্যবহার শিশু-কিশোরদের মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে ছবি: গ্লাসগো টাইমস

শিশু-কিশোর বা কম বয়সীদের মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা স্মার্টফোন। সমস্যা সমাধানে যুক্তরাজ্যে ১৬ বছরের কম বয়সীদের স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধের পাশাপাশি স্কুলে মোবাইল ব্যবহার বন্ধে নতুন নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন সংসদ সদস্যরা। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

হাউজ অব কমনস শিক্ষা কমিটির সদস্যরা শিক্ষা সুস্থতার ওপর স্ক্রিন টাইমের প্রভাব সম্পর্কে একটি প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপারিশ করেন। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে বয়সসীমা নির্ধারণে মন্ত্রীদের কাছে আহ্বান জানানো হয়।

কমিটির কনজারভেটিভ চেয়ার রবিন ওয়াকার এমপি বলেন, ‘অত্যধিক স্ক্রিন টাইম স্মার্টফোন ব্যবহার শিশু-কিশোরদের মানসিক শারীরিক সুস্থতার ওপর পরিষ্কারভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

তিনি বলেন, ‘কোনো নিষেধাজ্ঞা বা নিয়ন্ত্রণ না থাকা শিশু-কিশোররা অনলাইনে নিষিদ্ধ জিনিসের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। এছাড়া সাইবার অপরাধীরা বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে তাদের অপরাধমূলক কাজে সম্পৃক্ত করছে। এসব বিষয়ে তাদের অভিভাবক সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংকটের মধ্যে রয়েছে। আর তাই সংকট মোকাবেলায় সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, যার মধ্যে ১৬ বছরের কমবয়সীদের স্মার্টফোন ব্যবহার থেকে বিরত রাখার নীতি প্রণয়ন অন্যতম।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকও ১৬ বছরের কম বয়সীদের কাছে স্মার্টফোন বিক্রি না করার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খোলার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনার কথা জানিয়ে আসছেন। কিন্তু বিষয়ে এখন পর্যন্ত ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে কোনো চূড়ান্ত সুপারিশ নেয়া হয়নি।

শিক্ষা কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, স্মার্টফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে নতুন ব্যবস্থা গ্রহণ বা নীতিমালা কার্যকরের ক্ষেত্রে পরবর্তী সরকারকে যোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা অফকমের সঙ্গে কাজ করা উচিত। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৬ বছরের কমবয়সীদের জন্য পুরোপুরি স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা, সব ডিভাইসে বিল্ট ইন প্যারেন্টাল কন্ট্রোল থাকা অযাচিত কন্টেন্টে প্রবেশ বন্ধে অ্যাপ স্টোরকে নিয়ন্ত্রণে রাখা।

ইংল্যান্ডের স্কুলগুলোয় মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধে নতুন আইন প্রণয়নের বিষয়ে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে। এর অংশ হিসেবে ফেব্রুয়ারিতে স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের জন্য নতুন নির্দেশিকা কার্যকর করা হয়। এতে বলা হয়, স্কুলের সময় বা স্কুল চলাকালে তারা স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবেন না।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পরবর্তী সরকারকে চলতি বছর শেষ হওয়ার আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের বয়সসীমা ১৩ করা যায় কিনা সে বিষয়ে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যুক্তরাজ্যের অধিকাংশ প্লাটফর্মে ১৩ বছরের কম বয়সীদের অ্যাকাউন্ট খোলার কোনো সুযোগ নেই।

প্রতিবেদনে একটি গবেষণা তথ্যও তুলে ধরা হয়। সেখানের তথ্যানুযায়ী, ২০২০-২২ সালের মধ্যে দেশটিতে শিশুদের স্ক্রিনটাইম ৫২ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে ২৫ শতাংশ কিশোর তরুণ স্মার্টফোনের প্রতি আসক্ত। সম্প্রতি অফকম প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যে তিন চার বছর বয়সী এক-চতুর্থাংশের কাছে এখন একটি স্মার্টফোন রয়েছে। অন্যদিকে ১২ বছর বয়সের মধ্যেই সবাই স্মার্টফোন ব্যবহার শুরু করে। এছাড়া ১৩ বছর বয়সীদের প্রায় অর্ধেকের বেশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সক্রিয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন