এফএওর মূল্যসূচক

টানা সাত মাস নিম্নমুখী থাকার পর বেড়েছে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক দাম

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি: রয়টার্স

টানা সাত মাস নিম্নমুখী থাকার পর গত মার্চে বেড়েছে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক দাম। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে উদ্ভিজ্জ তেল, মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্যের বাজারদর। তবে খাদ্যশস্য ও চিনির বাজার নিম্নমুখী প্রবণতায় ছিল। গতকাল প্রকাশিত জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মাসভিত্তিক মূল্যসূচক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতি মাসেই খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক মূল্যসূচক প্রকাশ করে এফএও। বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া খাদ্যপণ্যের ওপর ভিত্তি করে এ সূচক তৈরি করা হয়। মার্চে সূচক মান গড়ে ১১৮ দশমিক ৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা ফেব্রুয়ারিতে ছিল ১১৭ পয়েন্টে। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে সূচক কিছুটা বেড়েছে। 

তথ্য বলছে, রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালালে বিশ্বজুড়ে হুহু করে বাড়তে শুরু করে খাদ্যপণ্যের দাম। কারণ দেশ দুটি খাদ্যশস্য উৎপাদন ও রফতানিতে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয়। যুদ্ধের কারণে দুই দেশ থেকেই সরবরাহ ব্যাপক হতে শুরু করে। ফলে ‍২০২২ সালের মার্চে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক দাম বেড়ে অতীতে সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। এতে বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়ে মধ্য ও নিম্ন আয়ের অর্থনীতির দেশগুলো।

তবে গত বছর বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম অনেকটাই কমেছে। রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে হওয়া শস্য রফতানিসংক্রান্ত চুক্তি এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে। তাছাড়া শীর্ষ দেশগুলোয় উৎপাদন পরিস্থিতির উন্নতি এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ভোক্তারা চাহিদায় লাগাম টেনে ধরায় মূল্য পরিস্থিতি নিম্নমুখী হয়ে আসে। এ বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টানা সাত মাস খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক দাম নিম্নমুখী ছিল। এর মধ্যে ফেব্রুয়ারিতেই এসব পণ্যের দাম তিন বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। তবে মার্চে এক মাসের ব্যবধানে দাম বেড়েছে। তবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এসব পণ্যের দাম এখনো ৭ দশমিক ৭ শতাংশ নিচেই অবস্থান করছে।

এফএওর বিশ্লেষণ অনুযায়ী, গত মাসে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক মূল্যবৃদ্ধিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে উদ্ভিজ্জ তেল। এক মাসের ব্যবধানে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে গড়ে ৮ শতাংশ। এর মধ্যে সব ধরনের উদ্ভিজ্জ তেলের বাজারই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ছিল।

এদিকে দুগ্ধপণ্যের দাম এক মাসের ব্যবধানে ২ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে। এ নিয়ে টানা ষষ্ঠ মাসের মতো এসব পণ্যের দাম বাড়ল। মূল্যবৃদ্ধিতে জ্বালানি জুগিয়েছে পনির ও মাখন। হাস-মুরগি, শূকর ও গরুসহ সব ধরনের মাংসের গড় মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ।

মার্চে খাদ্যপণ্যের গড় মূল্যসূচক বাড়লেও ‍কিছু পণ্যের দাম কমেছে। এর মধ্যে অন্যতম দানাদার খাদ্যশস্য ও চিনি। এক মাসের ব্যবধানে দানাদার খাদ্যশস্যের দাম ২ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে চিনির দাম কমেছে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। খাদ্যশস্যের দাম কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল গমের। শক্তিশালী রফতানি প্রতিযোগিতা, চীনের ক্রয়াদেশ বাতিলসহ নানা কারণে শস্যটির বাজার গত মাসে নিম্নমুখী ছিল। তবে ইউক্রেনে লজিস্টিকস জটিলতার কারণে ভুট্টার দাম কিছুটা বেড়েছে। ভারতে উৎপাদন বাড়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়ায় চিনির দাম কমেছে বলে জানায় এফএও। এছাড়া থাইল্যান্ডেও পণ্যটির উৎপাদন আশা জাগাচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন