উত্তরপ্রদেশ

কারাগারে গ্যাংস্টার-রাজনীতিবিদ আনসারির মৃত্যু, বিষ প্রয়োগের অভিযোগ পরিবারের

বণিক বার্তা অনলাইন

সংগৃহীত

ভারতে মাফিয়া থেকে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা মুখতার আনসারি উত্তরপ্রদেশের বান্দা কারাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত পৌনে ৯টায় কারাগারে অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে উত্তরপ্রদেশের রানী দুর্গাবতী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তবে পরিবারের দাবি, হৃদরোগে নয়, খাবারে বিষ প্রয়োগ করে আনসারিকে হত্যা করা হয়েছে। তারা মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। খবর এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।

বান্দা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সুনীল কৌশল জানান, শুক্রবার ময়নাতদন্তের পর মুখতারের মরদেহ তার পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হবে।

যদিও মুখতারের ভাই বিধায়ক আফজাল আনসারি অভিযোগ করে বলেছেন, তাকে জেলের মধ্যেই বিষ প্রয়োগ করে মেরে ফেলা হয়েছে। একই অভিযোগ করেন তার ছেলে উমর আনসারি  দাবি করেছেন, তার বাবাকে খাবারে বিষ দেয়া হয়েছিল। সেই খাবার খেয়েই মৃত্যু হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, উমর  জানান, মুখতারের মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ তদন্তের প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে তারা আদালতে যাবেন।

বাবার মৃত্যুর খবর প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের জানানো হয়নি বলেও দাবি করেন উমর। তিনি বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের কিছু বলা হয়নি। আমি সংবাদমাধ্যম থেকে বিষয়টি জানতে পারি। তার দাবি, কয়েক দিন আগেও আমি তার (মুখতার আনসারি) সঙ্গে দেখা করতে কারাগারে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে দেখা করতে দেয়া হয়নি। বিষ দেয়ার অভিযোগের ব্যাপারে আমরা আগেও যা বলেছি, এখনও একই কথাই বলবো।

মুখতারের মৃত্যু নিয়ে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছেন বিরোধীরা। অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এমআইএম)-এর প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি বলেন, মুখতার প্রশাসনের বিরুদ্ধে বার বার গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তাকে বিষ প্রয়োগ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করতেন। সরকার তার চিকিৎসার দিকে কোনো মনোযোগ দেয়নি। একই কথা বলেছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা আমিক জামেই। তিনি মুখতারের মৃ্ত্যুর পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। একই দাবি কংগ্রেস নেতা সুরেন্দ্র রাজপুতেরও।

৬০ বছর বয়সী মৌ-এর পাঁচবারের প্রাক্তন এ বিধায়কের বিরুদ্ধে ১৫টি খুনের অভিযোগ রয়েছে। তার নামে ৬১টি ফৌজদারি মামলা ছিল। ১৯৮০-এর দশকে তিনি একটি গ্যাংয়ে যোগ দেন। পরে ১৯৯০-এর দশকে নিজেই দল গঠন করেন। এই চক্রটি মৌ, গাজীপুর, বারাণসী ও জৌনপুর জেলায় চাঁদাবাজি ও অপহরণে জড়িত ছিল। ২০০৫ সাল থেকে তিনি পাঞ্জাব ও উত্তর প্রদেশের কারাগারে ছিলেন।

তার মৃত্যুর পর হাসপাতালের বাইরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে রাজ্যজুড়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কর্মকর্তারা জানান, পূর্ব উত্তর প্রদেশের বান্দা, মাউ, গাজীপুর এবং বারাণসী জেলাতেও বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে, যেখানে মুখতার তার অপরাধমূলক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করতেন। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন