একনেকে ৮ হাজার কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন

এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কার্যকরী উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন ছবি: বাসস

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে ২০২৬ সালে উত্তরণের পর বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সংশ্লিষ্টদের কৌশল প্রণয়নের কথাও বলেছেন। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) গতকালের সভায় এ নির্দেশনা দিয়েছেন সরকারপ্রধান। শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় ১১টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিৎ কর্মকার বিস্তারিত তুলে ধরেন। এ সময় পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুস সালাম, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার ও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে সত্যজিৎ কর্মকার বলেন, ‘মিসর দূতাবাসের একটি প্রকল্প অনুমাদনের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীদের সেবা দেয়ার জন্য একটি রেস্টরুম ও বুথ নির্মাণ করতে হবে। তাদের জন্য বেশি করে স্পেস রাখতে হবে। রংপুরের একটি প্রকল্পের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কুড়িগ্রামের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে আছে। তাই সেখানের প্রতিটি উপজেলার রাস্তা-ব্রিজ নির্মাণে নজর দিতে হবে। তৃতীয় পর্যায়ের ইউনিয়ন ভবনগুলো দ্রুত নির্মাণ করতে বলেছেন সরকারপ্রধান। বিশেষ করে উপকূলীয় ভবনে সোলার সিস্টেম ও বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। আর তাঁত বোর্ডের প্রশিক্ষণে নারীদের অগ্রাধিকার দিতে বলেছেন।’ 

এদিকে অনুমোদন পাওয়া ১১ প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৮ হাজার ৪২৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৭ হাজার ৯৩৯ কোটি ৮৭ লাখ ও প্রকল্প ঋণ থেকে পাওয়া যাবে ৪৮৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। সভায় ৫০ কোটি টাকার কম বাজেটের ৩০ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী। এসব প্রকল্প একনেক সভায় অবহিত করার জন্য উপস্থাপন করা হয়। মন্ত্রীর মাধ্যমে বেশিসংখ্যক প্রকল্পের অনুমোদন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘যাচাই-বাছাই করেই প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে খুব কঠিন আমি।’ 

অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে মিসরের কায়রোয় বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স ও আবাসিক ভবন নির্মাণ, বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য ২০টি মিটার গেজ ডিজেল ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ ও ১৫০টি মিটার গেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ সংগ্রহ (প্রথম সংশোধিত), কাশিনাথপুর-দাশুড়িয়া-নাটোর-রাজশাহী-নবাবগঞ্জ-কানসাট-সোনামসজিদ-বালিয়াদিঘী বর্ডার (এন-০৬) জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (নবাবগঞ্জ অংশ)।’

এছাড়া বিদ্যমান সরকারি মৎস্য খামারগুলোর সক্ষমতা ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় অবকাঠামো উন্নয়ন (প্রথম পর্যায়); ইমপ্রুভমেন্ট অব ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টার অব বাংলাদেশ ফিশারিজ ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন ইন কক্সবাজার ডিস্ট্রিক্ট প্রকল্প; বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের জেলাগুলোর পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প; ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ (তৃতীয় পর্যায়); আটটি বিভাগীয় শহরে পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার, হৃদরোগ ও কিডনি চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প।

সভায় কোনো খরচ না বাড়িয়ে বাংলাদেশ বেতার, শাহবাগ কমপ্লেক্স, আগারগাঁও, ঢাকা, প্রথম পর্যায়, তৃতীয় সংশোধিত স্থানান্তর, নির্মাণ ও আধুনিকীকরণের জন্য প্রকল্পের সময়সীমা চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী এবং পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন