যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি

নতুন ভিসা নীতি সুষ্ঠু নির্বাচনে সাহায্য করলে ভালো —পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘আমরা মনে করি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি যদি আমাদের স্বচ্ছ ও সুন্দর ইলেকশনে সাহায্য করে তাহলে ভালো। আমরা নিশ্চিত না। কারণ এটার কোনো টেস্টিং আগে কোথাও হয়নি। যদি হয় তাহলে ভালো।’ যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতির বিষয়ে গতকাল সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এ মন্তব্য করেন। 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, ‘তারা (যুক্তরাষ্ট্র) তাদের নীতি একটা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু আমাদের দেশের স্পেকুলেটরের অভাব নেই। তাই বিভিন্ন রকম বক্তব্য হচ্ছিল। যে বক্তব্য তারা দিয়েছে দেশীয় আঙ্গিকে, আমাদের প্রধানমন্ত্রী যেটা চাচ্ছেন, তাকেই আরো জোরালোভাবে বলেছে। আওয়ামী লীগ সরকার সবসময়ই এ দেশে গণতন্ত্রের ধারক ও বাহক। গত ১৪ বছর আওয়ামী লীগ সরকার আছে বলেই একটি গণতন্ত্রের প্রক্রিয়া চলছে। হাজার হাজার ইলেকশন হয়েছে। নির্বাচনের মাধ্যমেই সরকার এসেছে। গণতান্ত্রিক মাধ্যমেই সরকার পরিচালিত হচ্ছে। এর আগে যদি দেখেন, যারা ভোটারবিহীন ইলেকশনে জয়লাভ করেছে তাদের এ দেশের মানুষ গদিতে রাখেনি।’ 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিকালে আবারো সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এর আগে তিনি মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করেন। জানতে চাইলে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘নতুন ভিসা নীতি করেছে তারা (যুক্তরাষ্ট্র)। তাতে আমরা আশা করছি, আমরা যে ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন করতে চাই, জ্বালাও-পোড়াও চাই না, এটা আমাদের সাহায্য করতে পারে। তাদের এ কারণে হয়তো যারা জ্বালাও-পোড়াও করে, আমাদের ইলেকশনকে বানচালের চেষ্টা করে, তারা হয়তো বিরত থাকবে। সেটা আমাদের জন্য সহায়তামূলক হবে। কিন্তু আমি নিশ্চিত না, সহায়তামূলক হতে পারে।’ 

পিটার হাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রদূত এসেছিলেন পুরনো অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল। আলোচনায় স্বাভাবিকভাবেই নতুন নীতির প্রশ্নটি এসেছে। আমি জানতে চাইলাম, এগুলো অন্য দেশে পরীক্ষিত হয়েছে কিনা? সে বলল, আসলে পরীক্ষিত হয়নি, এটা নতুন নীতি। তারা আশা করে এটা বাংলাদেশকে সাহায্য করবে। আমরা বললাম, এ ধরনের নীতি কি শুধু আমাদের দেশে, না অন্য সব দেশেই? বললেন, অনেক দেশেই, নাইজেরিয়ায় করেছি, সোমালিয়ায় করেছি। কিন্তু এটা একটা নতুন চেষ্টা। আমি বললাম, এর কারণে কি তোমরা কোথাও গণতন্ত্র নিয়ে কিছু করতে পারছো? বলে যে, সেটাও বলা যাবে না এ মুহূর্তে।’ 

নীতিটিকে আমরা স্বাগত বা প্রত্যাখ্যান করেছি কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা করেছে তাদের নিয়মে। আমরা মনে করি, এটাতে যদি আমাদের স্বচ্ছ ও সুন্দর ইলেকশনে সাহায্য করে তাহলে ভালো। আমরা নিশ্চিত না। কারণ এটার কোনো টেস্টিং আগে কোথাও হয়নি। যদি হয় তাহলে ভালো।’ 

এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রতি ওয়াশিংটনের সমর্থনের অংশ বলে মন্তব্য করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমাদের বৈঠক পূর্বনির্ধারিত, যা নিয়মিত বৈঠকের অংশ। আমাদের দুই দেশের চমৎকার সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় সম্প্রতি ঘোষিত ভিসা নীতির প্রসঙ্গও এসেছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি এবং আমাদের (যুক্তরাষ্ট্রের) বিবৃতিতে যা দেখেছেন, তা বাংলাদেশের জনগণ, সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী—সবার জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে দেয়া হয়েছে।’


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন