সুদানে চলমান সংঘাতে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হওয়া শিশুদের
জন্য মানবিক সহায়তা বাড়াচ্ছে ইউনিসেফ। শিশুদের কল্যাণে নিয়োজিত জাতিসংঘের বিশেষায়িত
সংস্থাটি জানিয়েছে, সহিংসতা অব্যাহত থাকায়, আনুমানিক ৮২ হাজার শিশু প্রতিবেশী দেশগুলোয়
অবস্থান নিয়েছে। একই সময়ে কমপক্ষে ৩ লাখ ৬৮ হাজার শিশু দেশটির অভ্যন্তরে নতুনভাবে বাস্তুচ্যুত
হয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের তথ্যানুযায়ী
, ১৫ এপ্রিল থেকে ১ লাখ ৬৪ হাজারেরও বেশি মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করে আশ্রয় চেয়েছে।
যার মধ্যে রয়েছে মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, চাদ, মিসর, ইথিওপিয়া, লিবিয়া ও দক্ষিণ
সুদান। আন্তর্জাতিক অভিবাসীবিষয়ক সংস্থা আইওএম জানিয়েছে, সংঘাত শুরু থেকে সুদানের অভ্যন্তরে
প্রায় ৭ লাখ ৩৬ হাজার মানুষ নতুনভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এছাড়া সহিংসতা শুরুর আগে
প্রায় ৩৮ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।
ইউনিসেফের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ক্যাথরিন রাসেল বলেন,
‘সুদানের নিষ্ঠুর সংঘাত দেশটির শিশুদের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়েছে। হাজার হাজার
মানুষ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে। বাড়ি ছেড়ে দূরবর্তী স্থানে নিরাপত্তার সন্ধানে
নির্বাসিত হয়েছে। তাদের পরিস্থিতি এখনো অনিশ্চিত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মানবিক
অংশীদারদের কাছ থেকে অব্যাহত সমর্থন এবং সহায়তা তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
বাস্তুচ্যুত এসব জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিতে গিয়ে অনেক
সম্প্রদায় একাধিক সংকটের মধ্যে পড়েছে। প্রাথমিক পরিষেবা এবং বিদ্যমান মানবিক সক্ষমতা
এরই মধ্যে অত্যধিক চাপে রয়েছে। বৃষ্টির মৌসুমে অভিবাসন সমস্যা বাড়বে। এছাড়া রোগ ছড়িয়ে
পড়ার ঝুঁকি তো থাকছেই। এ সংঘাত সীমান্তবর্তী বাণিজ্য এবং চলাচলের ক্ষেত্রেও ব্যাঘাত
সৃষ্টি করছে। ফলে প্রতিবেশী দেশগুলোয় খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ছে। শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে
গিয়ে আশ্রয়দাতা দেশগুলোয় খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকিও বেড়েছে।
ইউনিসেফ সুদানের হাসপাতালগুলোতে জরুরি স্বাস্থ্য কিট,
প্রয়োজনীয় উপাদান ও ওষুধ সরবরাহ করছে। একই সঙ্গে আহতদের চিকিৎসা, জীবন রক্ষাকারী এবং
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবায় সহায়তা করছে। সংস্থারটি আশ্রয়প্রাপ্ত শিশু ও পরিবারকে
সহায়তা করছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ৮০ শতাংশেরও বেশি এলাকায় পুষ্টি সরবরাহসহ প্রয়োজনীয়
সেবা প্রদানে কাজ করছে।
বিশ্ব সংস্থাটি নতুনভাবে বাস্তুচ্যুত শিশু, পরিবার
এবং ঝুঁকিতে পড়া আশ্রয়দাতা দেশগুলোর জন্য জরুরি সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রেও সহায়তা
করার পরিকল্পনা করেছে। সম্প্রতি ইউনিসেফের পানি, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যকর সরবরাহের
একটি চালান পোর্ট সুদান শহরে এসে পৌঁছেছে।