হিট স্ট্রোক

তাপমাত্রা কত হলে বলব অনেক বেশি

বণিক বার্তা ডেস্ক

বর্তমানে ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছাচ্ছে। তাপমাত্রা উঠেছে প্রায় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। শুধু রাজধানী নয়, সারা দেশ এমনকি সারা বিশ্বই বাড়তি তাপমাত্রায় ভুগছে। এ ধরনের তীব্র গরমে হিট স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা থাকে অনেক বেশি। তা থেকে বাঁচতে গরমের মাঝে যতটা সম্ভব শরীর ঠাণ্ডা রাখার চেষ্টা করুন।

হিট স্ট্রোক বিশেষজ্ঞদের মতে, গরম পরিবেশে অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম না করা, গরমের মাঝে শরীরকে আর্দ্র রাখতে পরিমাণমতো পানি খাওয়ার মতো ছোট ছোট কাজ করেই হিট স্ট্রোক এড়ানো সম্ভব। অর্থাৎ এ গরমে যথাসম্ভব রোদের মধ্যে কম থাকতে হবে, বদ্ধ জায়গায় টানা বেশি সময় থাকা যাবে না এবং যথেষ্ট পরিমাণ পানি খেতে হবে। মোট কথা, শরীরকে ঠাণ্ডা রাখার চেষ্টা করতে হবে।

এখন তাপমাত্রা খুব বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিবেশ আরো ঘন ঘন এবং দীর্ঘ সময়ব্যাপী উষ্ণতার মুখোমুখি হচ্ছে। তবে একটি প্রশ্ন বারবারই আসে যে তাপমাত্রা কত হলে বলা যাবে, দৈনন্দিন কার্যক্রমের জন্য তাপমাত্রা অনেক বেশি। এমনকি তা শিশু এবং সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্যও বেশি। এর উত্তর অবশ্য থার্মোমিটারের বাইরে চলে যায়। কারণ এর সঙ্গে আর্দ্রতাও জড়িত। গবেষণা বলছে, দুটির মিশ্রণকে আগে যতটা ক্ষতিকর বিবেচনা করা হয়েছিল এখন তার থেকে আরো বেশি ক্ষতিকর।

গবেষক ও অন্য পর্যবেক্ষকরা এখন তীব্র তাপের সঙ্গে উচ্চ আর্দ্রতার সংযোগের ক্রমাগত ঘন ঘন অবস্থা নিয়ে খুব বেশি ভীত। এটাকে বলা হচ্ছে ওয়েট বাল্ব টেম্পারেচার। ২০২২ সালের মে মাসে দক্ষিণ এশিয়া এবং জুনে পাকিস্তানের জ্যাকোবাবাদে দেখা তাপমাত্রা বলছে সীমা অনেক বেশি হয়ে ৩৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। এটা মানুষের আর্দ্র তাপমাত্রা সহ্য করার সবচেয়ে ওপরের সীমার খুব কাছাকাছি। 

এক্ষেত্রে ২০১০ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণার কথা উল্লেখ করা যায়। সেখানে বলা হয়েছিল, ওয়েট বাল্ব টেম্পারেচার ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে বোঝা যাবে ১০০ শতাংশ আর্দ্রতায় তাপমাত্রা ৯৫ ফারেনহাইট অথবা ৫০ শতাংশ আর্দ্রতায় তাপমাত্রা ১১৫ ফারেনহাইট। এটা সুরক্ষিত থাকার সবচেয়ে ওপরের সীমা, এরপর মানবশরীর আর ঘাম নিঃসরণ করে নিজেকে ঠাণ্ডা করতে পারবে না বা শরীরের মূল তাপমাত্রা স্থিতিশীল রাখতে পারবে না।

সেজন্য টেক্সাস এঅ্যান্ডএম ইউনিভার্সিটির ফ্যামিলি মেডিসিনের ক্লিনিক্যাল অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর গ্যাব্রিয়েল নিয়াল দি কনভারসেশনকে বলেন, ‘‌পরিবেশে তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে চেষ্টা করতে হবে যতটা সম্ভব বেশি বেশি পানি পান করার। এ সময়ে কোনো চিনিযুক্ত পানীয় বা মদ্যপান না করাই ভালো। যদি অন্য কোনো রোগের কারণে ডাক্তার আপনাকে পানি কম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে এ সময়ে তার সঙ্গে আরেকবার আলোচনা করে নিন। মাঝে মাঝেই রোদ থেকে সরে একটু ঠাণ্ডা জায়গায় থাকার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টার মধ্যে। এ সময়ে কোনো ব্যায়ামও করবেন না। পরে তাপ ও আর্দ্রতা কমে গেলে ব্যায়াম করুন। তাতে এমন পরিস্থিতি থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব হবে অনেকখানি।’

তাছাড়া বাড়িতে বা অফিসে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র না থাকলে চেষ্টা করুন হালকা বাতাস চলাচল করে এমন পোশাক বেছে নিতে, সরাসরি সূর্যের আলোর নিচে থাকবেন না, মাঝে মাঝে হাতে মুখে পানির ঝাপটা দিন ও ফ্যানের নিচে থাকুন। দিনে কয়েকবার ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করুন। ঠাণ্ডা কোনো ব্যাগ ঘাড়, বগলের নিচে বা মাথায় রাখতে পারেন। কোনো রকম সমস্যা বোধ করলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন