বিস্তৃত হচ্ছে যুক্তরাজ্য-জিসিসি বাণিজ্য সম্পর্ক

বণিক বার্তা ডেস্ক

বিশ্বের সাতটি উন্নত অর্থনীতির দেশের জোট জি সেভেনের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে একসময় সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি। সেই দেশটিই এখন সবচেয়ে দুর্বলতম অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে বলে সম্প্রতি ফাইন্যান্সিয়াল টাইমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ অবস্থা থেকে উত্তরণে যুক্তরাজ্যের উচিত বিশ্ববাজারের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি ও তা উন্নয়নে জোর দেয়া।

বিশ্বের শক্তিশালী অর্থনীতির দেশের তালিকায় এখন মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় সহযোগিতা সংস্থা (জিসিসি) ভুক্ত দেশগুলোকেও বিবেচনা করা হয়। এ অবস্থায় যুক্তরাজ্য ও জিসিসির দেশগুলো আঞ্চলিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে পারে, তবে তা যুক্তরাজ্যের জন্যই ইতিবাচক হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক বেশ পুরনো। সেটি নতুন করে শানিত করলে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাজ্যেরই অবস্থার শক্তিশালী হবে। সেই সঙ্গে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলসহ অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গেও নতুন বাণিজ্য সংযোগের পথ উন্মুক্ত হবে। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্রেক্সিটের পর থেকে যুক্তরাজ্য নতুন বাণিজ্যিক সম্পর্ক তৈরির বিষয়ে বারবারই আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের মধ্যস্থতায় সাম্প্রতিক বাণিজ্য চুক্তি পর্যালোচনা করে ধারণা করা হচ্ছে, জিসিসি ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বাণিজ্যে অন্তত ১৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটবে। সেই সঙ্গে বাড়বে বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণ, তুলে নেয়া হবে শুল্ক ও অশুল্ক বিভিন্ন ধরনের বাধা। এ পরিস্থিতি অবশ্য দুই পক্ষের জন্যই ইতিবাচক। বাণিজ্য চুক্তিটির ফলে সবচেয়ে মুনাফার মুখ দেখবে কৃষি ও খাদ্য শিল্প খাত। কারণ এখন জিসিসিতে আদানির ওপর যে ৫-২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক তা প্রত্যাহারের সম্ভাবনা রয়েছে।

উপসাগরীয় দেশগুলো আমদানীকৃত খাদ্যের ওপর নির্ভরশীল, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে এ চুক্তির ফলে দেশগুলো খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতের পথে অনেকটুকু নিশ্চিত হবে, তাও যথেষ্ট সুলভ মূল্যের বিনিময়ে।

মূলত ব্রেক্সিটের পর যুক্তরাজ্যের সঙ্গে জিসিসি দেশগুলোর অর্থনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক বাড়তে শুরু করে। এ মুহূর্তে অঞ্চল দুটির মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ৬ হাজার ১০০ কোটি ডলার। এছাড়া সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের পরিবেশবান্ধব জ্বালানি, লাইফ সায়েন্স ও প্রযুক্তি খাতে ১ হাজার ২২০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে ইউএইর সার্বভৌম সম্পদ তহবিল মুবাদালার মাধ্যমে। এছাড়া যুক্তরাজ্যের ডিজিটাল শিল্প খাতেও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর বিপুল বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। জিসিসির প্রতিটি দেশেরই অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে ডিজিটালাইজেশনের বিষয়ে আলাদা পরিকল্পনা রয়েছে। বিশেষ করে কভিড-১৯ মহামারীর পর আরো উন্নত ডিজিটালাইজেশনের গুরুত্ব অনুধাবন করে দেশগুলো। 

কারণ সে সময় স্কুল, অফিসের কাজ থেকে শুরু করে নিত্যপণ্যের কেনাকাটার জন্যও ডিজিটাল প্রযুক্তির দারস্থ হতে হয়েছিল। নতুন এ চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাজ্য ও জিসিসিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে উদীয়মান নতুন প্রযুক্তি যেমন এআই, সাইবার সিকিউরিটি ইত্যাদিসংক্রান্ত ব্যবসার দিগন্ত প্রসারিত হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন