সময়ের ভাবনা

বাংলাদেশে রাজনৈতিক দুর্নীতি ও মালয়েশিয়ার অভিজ্ঞতা

এম এম মুসা

ব্যক্তি থেকে পরিবার, কোম্পানি থেকে সরকার কমবেশি সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি বিদ্যমান। সরকারি কেনাকাটায় দুর্নীতি, সরকারি সেবা গ্রহণে দুর্নীতি, রাজস্ব প্রদান ও ট্রেড লাইসেন্স নিতে দুর্নীতি, ব্যাংকঋণ নিতে ঘুস প্রদান এসব বড় বড় দুর্নীতির উদাহরণ। পরিবারের ভেতরে দুর্নীতি রয়েছে—জমির ভাগ-বাঁটোয়ারায় ভাই-বোনকে ঠকানো থেকে বিদ্যালয়ে ভর্তির সময় সন্তানের বয়স কমিয়ে দেখানোও দুর্নীতি। তবে সবকিছু ছাপিয়ে দেশে রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক দুর্নীতিই সবচেয়ে বেশি আলোচিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এর সঙ্গে রয়েছে অর্থের যোগসূত্র। 

সহজ ভাষায়, রাজনৈতিক দুর্নীতি বলতে বোঝায় সরকারের এবং বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের (যেমন সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা, সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, রাজস্ব ব্যবস্থা, ব্যাংক পরিচালনা, প্রকল্প বাস্তবায়ন, প্রশাসন ইত্যাদি) ভেতরের দুর্নীতিকে। এ ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি যোগ থাকে সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের। রাজনৈতিক দুর্নীতি যে সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা, তা নয়, এটি এ উপমহাদেশে বহু বছর ধরেই প্রবহমান। কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রেও রাজনৈতিক দুর্নীতির বিভিন্ন প্রমাণ রয়েছে। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে রাজনৈতিক দুর্নীতির উদাহরণ পাওয়া যায়। কিন্তু বাংলাদেশে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে রাজনৈতিক দুর্নীতির বিস্তার সমাজেও প্রবেশ করেছে। কয়েক দশক ধরে অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে রাজনৈতিক দুর্নীতির বিস্তৃতিও ঘটেছে দ্রুত গতিতে। 

বাংলাদেশে ব্যাংক, বীমা, গণমাধ্যমসহ ব্যবসা-বাণিজ্যে লাইসেন্স-পারমিট ও সরকারি ক্রয় খাতে রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রাধান্য প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছে। রাজনীতির সঙ্গে ব্যবসার যোগসূত্র উদ্বেগজনকভাবে বাড়ার কারণে ক্ষমতার অপব্যবহার অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। আমলা ও রাজনীতিকদের বিপুল সম্পদ আহরণের যে চিত্র প্রকাশ পাচ্ছে, তার মাধ্যমে ক্ষমতার অবস্থানকে মুনাফা অর্জনের উপায় হিসেবে ব্যবহারের প্রবণতার প্রতিফলন ঘটেছে। একশ্রেণীর অসাধু ব্যক্তি, যারা অনেক ক্ষেত্রেই ক্ষমতার কাছাকাছি বিচরণ করেন, তারা ক্ষমতাকে সম্পদ অর্জনের পথ হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এমনকি হতদরিদ্রদের জন্য বিশেষ সহায়তা হিসেবে সরকার প্রদত্ত আর্থিক অনুদান কার্যক্রমও বাদ পড়েনি তাদের দুর্নীতি থেকে। অন্যদিকে ক্রয় ও সরবরাহ খাতে দুর্নীতির মহোৎসব দেখা যাচ্ছে যাতে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী-ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশে লিপ্ত থাকেন রাজনীতিক ও আমলারা। সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের একাংশের পাশাপাশি ক্ষমতাবান রাজনৈতিক মহলের একাংশ, যারা এসব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য প্রক্রিয়া লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাতের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। 

রাষ্ট্র মালিকানাধীন বা ব্যক্তি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যে জনগণের অর্থ ও আমানত নিয়েই ব্যবসা করে থাকে—এ বাস্তবতার স্বীকৃতি বাংলাদেশে ক্রমে হারিয়ে যাচ্ছে। খেলাপি ঋণগ্রহীতাদের স্বেচ্ছাচারী প্রবণতায় মনে হয়, ব্যাংকে গচ্ছিত জনগণের অর্থ যেন কিছু মানুষের ব্যক্তিগত সম্পদ; যা তাদের খুশিমতো ব্যবহার করা যাবে। আবার ব্যাংক মালিক, নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও সরকার—এ তিন পক্ষও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ যে জনগণের সম্পদ সেটি ভুলে গিয়ে ঋণখেলাপিদেরই ক্রমাগতভাবে সুযোগ করে দিচ্ছে। অনেক সময় তারা ঋণখেলাপি, জালিয়াতকারী, অর্থ আত্মসাৎকারী ও অর্থ পাচারকারীদের সহায়ক শক্তি হিসেবেও ভূমিকা পালন করছে। এমনকি অনেক সময় সরকারকেও তাদের কাছে জিম্মি মনে হয়। 

বাংলাদেশে দুর্নীতির ব্যাপকতা দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে; এনজিও, সরকারি কর্মকর্তা, রাজনীতিক, বেসরকারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ আদায় করে নেয়ার একটি বৈশিষ্ট্য হিসেবে রাজনৈতিক দুর্নীতি ক্রমে বৈধতা পাচ্ছে। সাবেক এক অর্থমন্ত্রী তো এক সময় ঘুসকে স্পিড মানি হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। এ থেকে বোঝা যায় ক্ষমতাসীনরা দুর্নীতিকে দমনের চেয়ে একে প্রশ্রয় দিতেই বেশি আগ্রহী। দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে প্রশাসন, পুলিশ, রাজস্ব বোর্ড, দুর্নীতি দমন কমিশন ও বিচার বিভাগের মধ্যে যাদের ভূমিকা ছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার। দুর্নীতি রয়েছে রাজনৈতিক ব্যবস্থায়, শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে; এমনকি দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাগুলোতেও। বাংলাদেশে কোনো সরকারের অধীনেই দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাগুলো দক্ষ ছিল না। দুর্নীতি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত সংস্থাগুলোর কাজ তেমন সন্তোষজনক না হওয়ার জন্য শীর্ষ নেতৃত্বকে দায়ী করা হয়, তবে প্রশ্ন উঠবে যে এ সংস্থাগুলোকে দায়বদ্ধ করার জন্য অন্য কী কী উপায় ভাবা যেতে পারে। দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করার সময় আইনের শাসন নিশ্চিত করার জন্য কি প্রাথমিক পর্যায়ে আদালতকে আনা উচিত? এমন কি দাবি করা উচিত যে শীর্ষ নেতৃত্বের পরিবর্তে এ সংস্থাগুলোকে সরাসরি আদালতের কাছে জবাবদিহি করতে হবে? 

বাংলাদেশে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও দমন কি খুবই কঠিন? আমাদের সামনে মালয়েশিয়ার উদাহরণ রয়েছে। ২০২২ সালের আগস্টে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বারহাদ (এমডিবি) রাষ্ট্রীয় তহবিলের অনিয়ম-সংক্রান্ত একটি মামলায় তার চূড়ান্ত আপিল খারিজ হওয়ার পর ১২ বছরের কারাদণ্ড ভোগ শুরু করেছেন। সর্বোচ্চ আদালত সর্বসম্মতিক্রমে তাকে দায়ী করে সাজা বহাল রেখেছিলেন। এমডিবি ছিল একটি উন্নয়ন তহবিল এবং নাজিব ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর পরই এটি তৈরি করেছিলেন। তদন্তকারীরা অভিযোগ করেছেন যে তহবিল থেকে কমপক্ষে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নাজিবের সহযোগীরা চুরি এবং পাচার করেছিলেন। এমডিবির সাবেক ইউনিট এসআরসি ইন্টারন্যাশনাল থেকে অবৈধভাবে ৯ দশমিক ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নেয়ার জন্য দুর্নীতির সাতটি অভিযোগে নাজিবকে ২০২০ সালে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। এমডিবিসহ বড় কিছু দুর্নীতির ঘটনাগুলো প্রকাশ্যে আসার পর এমন ধারণা তৈরি হয়েছিল যে মালয়েশিয়ায় দুর্নীতি বেড়েছে। বিশ্বব্যাংকের পদক্ষেপগুলো ইঙ্গিত করে যে মালয়েশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে না থাকলেও এখনো ব্যাপক দুর্নীতির শিকার। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে ফ্রি জোন প্রকল্পসংক্রান্ত পোর্ট ক্লাং অথরিটি, ইসলামিক পিলগ্রিমস ফান্ড বোর্ড (তাবুং হাজি), সাবাহ ওয়াটার ডিপার্টমেন্ট, ফেডারেল ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (ফেলডা), পেনাং সমুদ্র তলদেশে সুড়ঙ্গ নির্মাণের ক্ষেত্রে পেনাং রাজ্য সরকার। তবে এ ধরনের মামলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এমডিবি। এ কেলেঙ্কারিগুলোতে ঘুষ, তছরুপ, অর্থ পাচার, প্রতারণামূলক লেনদেন জড়িত রয়েছে এবং কেলেঙ্কারির আর্থিক পরিমাণ প্রায় ১ বিলিয়ন রিঙ্গিতেরও বেশি। প্রশ্ন হলো, কীভাবে তারা মালয়েশিয়া দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে পারল?

মালয়েশিয়া ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত অ্যান্টি করাপশন এজেন্সিকে (এসিএ) ২০০৯ সালে সরকারি সংস্থা থেকে একটি স্বাধীন কমিশনে রূপান্তর করে, যার নাম দেয়া হয় মালয়েশিয়ান অ্যান্টি করাপশন কমিশন (এমএসিসি)। দুর্নীতি দমন সংস্থাটিকে অধিকতর স্বাধীনতা ও তদন্তের ক্ষেত্রে স্বায়ত্তশাসন দিয়ে ক্ষমতায়নের উদ্দেশ্যে এমএসিসি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ২০০৯ সালে সংঘটিত সংস্কারগুলো আংশিকভাবে সরকারের সামগ্রিক গুণমান, পরিষেবা সরবরাহের স্তর, লাল ফিতার দৌরাত্ম্যের সমস্যা এবং দুর্নীতিবিরোধী প্রচেষ্টার অভাব নিয়ে জনসাধারণ এবং সুশীল সমাজের ক্রমবর্ধমান হতাশার প্রতিক্রিয়া হিসেবে এসেছিল। কিন্তু নীতি বা বাস্তবায়নের দুর্বলতাসহ বিভিন্ন কারণে এ সংস্কারগুলোর বেশির ভাগই কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। মালয়েশিয়ার দুর্নীতিবিরোধী প্রচেষ্টাগুলো ২০১৮ সালে পাকাতান হারাপান সরকারের নির্বাচিত হওয়ার ফলে বড় ধরনের উৎসাহ পেয়েছিল। কারণ তারা ক্ষমতায় এসেছিল একটি পরিচ্ছন্ন, দায়বদ্ধ ও স্বচ্ছ শাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে, যা এমডিবি কেলেঙ্কারির পর সাধারণ মানুষের মনে ভালো প্রভাব ফেলেছিল। দুর্নীতি দমন প্রচেষ্টার প্রথম পদক্ষেপগুলোর মধ্যে একটি ছিল দুর্নীতি দমনের বিশেষ মন্ত্রিসভা কমিটির সচিবালয় হিসেবে ন্যাশনাল সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স, ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড অ্যান্টি করাপশন তৈরি করা, যারা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে রিপোর্ট করবে। প্রধান এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি হিসেবে ছিল মালয়েশিয়ান অ্যান্টি–করাপশন কমিশন (এমএসিসি) এবং এ দুটি একসঙ্গে দেশের দুর্নীতি দমন সংস্থা হিসেবে কাজ করেছে। এতে কিছু সুফল মিলেছে। কিন্তু দুর্নীতি এখনো রয়ে গেছে। তবে দুর্নীতি দমনে তাদের প্রচেষ্টা অব্যহত রয়েছে। 

বাংলাদেশে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও দমনে দায়বদ্ধতা নিশ্চিতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অকার্যকরতা ও বিচারহীনতার অবসান ঘটিয়ে আইনের শাসন নিশ্চিত করা জরুরি। বিভিন্ন নীতি ও তার প্রয়োগ ক্রমাগত জনস্বার্থ বিচ্ছিন্ন হয়ে ক্ষমতাবানদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব, রাজনৈতিক শুদ্ধাচারের অবক্ষয়, ক্ষমতার অপব্যবহার, সরকারি কাজে দলীয় রাজনৈতিক প্রভাব, দুর্নীতি ও অপরাধের সঙ্গে রাজনৈতিক যোগসূত্র এবং রাঘববোয়ালদের জবাবদিহির আওতায় আনতে ব্যর্থতা রয়েছে। রাজনীতি, ব্যবসা, প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একাংশের দুর্নীতিবান্ধব যোগসাজশে সমাজের সব পর্যায়ে দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ হয়েছে। দুর্নীতি করলে ‌কাউকে ছাড় দেয়া হবে না মর্মে প্রধানমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন, তার মধ্যেই মূলত জবাবদিহিতার গুরুত্ব নিহিত। এর আগে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতারও ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তার প্রতিফলন রাষ্ট্র পরিচালনায় দেখা যায়নি। দলীয় পরিচয় ও পদের অপব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে দলীয় প্রধানের কঠোর ও অনমনীয় অবস্থানেই কেবল প্রত্যাশিত সুফল পাওয়া যাবে। কারণ ব্যাপক আলোচিত প্রায় প্রতিটি দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের সঙ্গে ছিল ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক পরিচয়ে ক্ষমতাবান ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আর সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের একাংশের যোগসাজশ।

রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে শুদ্ধাচার সহায়ক ব্যাপক রূপান্তর ব্যতিরেকে দুর্নীতির কার্যকর প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব। রাজনীতি ও রাজনৈতিক অবস্থানকে দুর্বৃত্তায়ন ও অবৈধ অর্থের প্রভাবমুক্ত করতে হবে। আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক সামর্থ্যের স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও কার্যকর প্রয়োগের স্বার্থে আইন প্রয়োগসংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয় রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে। সরকারি সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াকে প্রভাবশালী মহলের প্রভাবমুক্ত করে জনস্বার্থের প্রাধান্য নিশ্চিত করতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনগণের অংশগ্রহণ ও গণমাধ্যমের ভূমিকার স্বীকৃতি কার্যকর করতে হবে। 

রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে শুদ্ধাচার–সহায়ক আমূল পরিবর্তন ব্যতিরেকে দুর্নীতিকে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। অর্থ ও দুর্বৃত্তায়ন থেকে রাজনীতি, রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ও অবস্থানকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে। আইনের শাসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয় রাজনীতির প্রভাবমুক্ত করতে হবে। দুর্নীতি দমন কমিশনকে তার স্ব-আরোপিত সীমারেখা থেকে বের হতে হবে, যে সীমারেখার কারণে তার পক্ষে প্রভাবশালী মহলের দুর্নীতির ক্ষেত্রে কার্যকর জবাবদিহিমূলক পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হয় না। আইনের চোখে সবাই সমান—এ ভিত্তি থেকে ব্যক্তির পরিচয় বা অবস্থান দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে কমিশন কাজ করবে, এটিই তার আইনগত বাধ্যবাধকতা এবং জনগণের প্রত্যাশা।


এম এম মুসা: সহযোগী সম্পাদক, বণিক বার্তা

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন