গত সপ্তাহে বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে মিশ্র প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে। গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়া অঞ্চলের প্রধান পুঁজিবাজারগুলোতে উত্থান-পতন দুটোই দেখা গেছে। এ সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান পুঁজিবাজারগুলো নিম্নমুখী প্রবণতায় সপ্তাহ শেষ করেছে।
গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ সূচক ১৫৩ পয়েন্ট বেড়েছে। একই সময়ে দেশটির এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ১ দশমিক ১৪ পয়েন্ট ও নাসডাক সূচক ৫৯ পয়েন্ট কমেছে। এ অঞ্চলের আর্জেন্টিনা, কানাডা ও ভেনেজুয়েলার পুঁজিবাজারে এ সময়ে পয়েন্ট যোগ হয়েছে। অন্যদিকে পয়েন্ট হারিয়েছে পেরু, ব্রাজিল, মেক্সিকো, চিলি ও কলম্বিয়ার পুঁজিবাজার।
ইউরোপের অন্যতম পুঁজিবাজার যুক্তরাজ্যের এফটিএসই ১০০ সূচক গত শুক্রবার ২০ পয়েন্ট বেড়েছে। এ সময়ে জার্মানির ব্লুচিপ সূচক ডিএএক্স ১ দশমিক ৮২ ও ফ্রান্সের সিএসি ৪০ সূচক ৫ দশমিক ১৬ পয়েন্ট বেড়েছে। এছাড়া ডেনমার্ক, পোল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, হাঙ্গেরি, স্পেন, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, অস্ট্রিয়া ও সুইডেনের পুঁজিবাজারে পয়েন্ট যোগ হয়েছে। অন্যদিকে এ সময়ে পয়েন্ট হারিয়েছে গ্রিস, ইতালি, লুক্সেমবার্গ ও পর্তুগালের পুঁজিবাজার।
গত শুক্রবার এশিয়ার অন্যতম প্রধান পুঁজিবাজার জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক ১০০ পয়েন্ট হারিয়েছে। ভিয়েতনামের হ্যাং সেং
সূচক হারিয়েছে ৮৭ পয়েন্ট। এদিকে চীনের সাংহাই সূচক ১২ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট ও ভারতের বিএসই সেনসেক্স সূচক ২১ পয়েন্ট বেড়েছে। এছাড়া এ সময়ে হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডের পুঁজিবাজার পয়েন্ট হারিয়েছে। অন্যদিকে পয়েন্ট যোগ হয়েছে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, ফিলিপাইন ও শ্রীলংকার পুঁজিবাজারে।
গত শুক্রবার মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান পুঁজিবাজারগুলো ছিল নিম্নমুখী। এ সময় বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তিউনিশিয়া, সৌদি আরব, কাতার ও লেবাননের পুঁজিবাজার পয়েন্ট হারিয়েছে। অন্যদিকে ঊর্ধ্বমুখী ছিল কুয়েত, জর্ডান, ওমান ও মরক্কোর পুঁজিবাজার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনে অ্যাপলের আইফোন কারখানায় শ্রম বিক্ষোভের জেরে চলতি মাসে আইফোনের সরবরাহে বিঘ্ন ঘটবে। এ কারণে প্রভাব পড়েছে অ্যাপলের শেয়ারদরে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারও প্রভাবিত হয়েছে। শঙ্কা রয়েছে চীনের জিরো কভিড নীতি নিয়েও। এছাড়া থ্যাঙ্কসগিভিং ডের ছুটির কারণেও যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে লেনদেন কম হয়েছে। অবশ্য সামনের মাসে যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার বাড়ানোর গতি শ্লথ হবে এমন ইঙ্গিতের কারণে ইউরোপের পুঁজিবাজারে কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। মার্কিন ডলারের সূচক কিছুটা বাড়লেও দর হারিয়েছে ব্রিটিশ পাউন্ড। অন্যদিকে তেলের দরও পড়তির দিকে। সব মিলিয়ে এসব কিছুরই প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে।
দেশের পুঁজিবাজার পরিস্থিতি: গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের তুলনায় ৫১ পয়েন্ট বা দশমিক ৮১ শতাংশ কমেছে। সূচকটির বর্তমান অবস্থান ৬ হাজার ২১৫ পয়েন্টে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ৬ হাজার ২৬৬ পয়েন্টে। ডিএসইর নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ দশমিক ২৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৪৭ শতাংশ কমে ২ হাজার ১৯০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ২ হাজার ২০০ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ১০ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৪ শতাংশ কমে ১ হাজার ৩৫৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ১ হাজার ৩৬৪ পয়েন্টে। ডিএসইতে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া মোট ৩৯৯টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৩টির, কমেছে ৮০টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২৭৫টির। এছাড়া লেনদেন হয়নি ২১টির।