ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশে (আইইউবি) অনুষ্ঠিত হলো ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন ড্রাগ ডিসকভারি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ফার্মা ফেস্ট ২০২২’। আইইউবির স্কুল অব ফার্মেসি অ্যান্ড পাবলিক হেলথ এবং ফার্মা ক্লাবের যৌথ আয়োজনে এ আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯-২০ সেপ্টেম্বর ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত আইইউবি ক্যাম্পাসে এ অনুষ্ঠানমালার প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘একাডেমিয়া-ইন্ডাস্ট্রি অ্যালায়েন্স ফর রিসার্চ এক্সিলেন্স’।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব আলস্টারের অধ্যাপক পিটার ফ্ল্যাট, কিংস কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক মিরাজ রহমান, ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টারের ড. ডগলাস স্টেইনকে, ড. ডেভিড জি অ্যালিসন, নিউজিল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ওটাগোর অধ্যাপক শ্যামল দাস, অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির ড. নজরুল ইসলামসহ দেশ-বিদেশের বেশ কয়েকজন স্বনামধন্য শিক্ষক ও গবেষক এ সম্মেলনে বিভিন্ন বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অ্যান্টিমাক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স, কলেরা রোগের প্যাথোজেন, ইনহেলারের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার, ক্যান্সার ও কভিড চিকিৎসা, ডায়াবেটিস ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ের ওপর অন্তত ৪০টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়।
আইইউবির স্কুল অব ফার্মেসি অ্যান্ড পাবলিক হেলথের ডিন অধ্যাপক ড. জেএমএ হান্নান বলেন, ‘এ সম্মেলন আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশ-বিদেশের গবেষক এবং ফার্মাসিউটিকালস শিল্পের বিশেষজ্ঞদের জন্য একটি অভিন্ন প্লাটফর্মের ব্যবস্থা করা যেখানে তারা তাদের সর্বশেষ গবেষণাগুলো তুলে ধরতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এ ধরনের সম্মেলন আয়োজনের আরো একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্বনামধন্য গবেষক এবং বিশেষজ্ঞদের সংযুক্ত করা। এর মাধ্যমে শুধু আইইউবি নয়, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগত শিক্ষার্থীরা সরাসরি বিশ্বমানের গবেষণা পদ্ধতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা অর্জন করেছেন।’
বাংলাদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই বিভিন্ন নামে ফার্মা ফেস্ট আয়োজন করা হয়। তবে আইইউবির এবারের আয়োজনের বিশেষ দিক হলো, এর সঙ্গে এবারই প্রথম সম্মেলনকে যুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি ছিল পোস্টার উপস্থাপন এবং কুইজ প্রতিযোগিতা ‘ফার্মা অলিম্পিয়াড’। দেশের প্রায় সবক’টি বড় ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠানেরই স্টল ছিল যেখানে তারা তাদের সর্বশেষ উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগুলো প্রদর্শন করে।
ফার্মা ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও আইইউবির ফার্মেসি বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র শিফাত উল্লাহ নিহাল বলেন, ‘এবারের ফার্মা ফেস্টের মূল যে প্রতিপাদ্য, অর্থাৎ ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া অ্যালায়েন্স, আমরা সেটা অর্জন করতে পেরেছি বলে মনে করি। প্রায় প্রতিটি স্টলেই সিভি জমা দেয়ার ব্যবস্থা ছিল। আমরা মনে করি, ভবিষ্যতে ইন্টার্নশিপ বা চাকরির জন্য এ নতুন যোগাযোগ বা নেটওয়ার্ক আমাদের খুবই কাজে লাগবে।’
ক্লাবের জেনারেল সেক্রেটারি ও আইইউবির ফার্মেসি বিভাগের শেষ বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী নাফিসা তাবাসসুম বলেন, ‘ফার্মা ফেস্ট আমরা আগেও করেছি। কিন্তু এবারের ফার্মা ফেস্ট তার চেয়ে ভিন্ন। কারণ এর সঙ্গে একটা আন্তর্জাতিক সম্মেলনও ছিল যেখানে দেশ-বিদেশের বেশ কয়েকজন বড় গবেষক ও বিশেষজ্ঞ তাদের প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন।’
আইইউবির পাশাপাশি ঢাকা বিশবিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটিসহ দেশের প্রথম সারির ২২টি পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১১৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন পোস্টার প্রেজেন্টেশনে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৩৯টি দলের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় কুইজ প্রতিযোগিতা ‘ফার্মা অলিম্পিয়াড’। ফার্মা ফেস্টে অংশ নেয় ৪৫টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান।
