অর্থনৈতিক দুর্যোগ ২০২৪ সালের আগে কাটবে না —ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো . দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ২০২৪ সালের আগে দেশের অর্থনৈতিক দুর্যোগ কাটবে না। বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় একটি উত্তরণকালীন নীতি সমঝোতার খসড়া শিরোনামে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি আশঙ্কার কথা জানান।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেশের চলমান মূল্যস্ফীতি, টাকার ওপর চাপ, বিনিয়োগ পরিস্থিতি, সামাজিক প্রকল্প, শিক্ষা-স্বাস্থ্যে বরাদ্দের হার কম, অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বিঘ্ন হওয়া ইত্যাদি কারণেই ২০২৪ সালের শেষ পর্যন্ত অর্থনৈতিক দুর্যোগ থাকবে।

তিনি বলেন, সরকার কালো টাকাকে সাদা করার সুযোগ দিয়ে একদিকে অপরাধ করেছে। অন্যদিকে দুর্নীতিকারী, ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এসব অর্থনীতির জন্য ভালো লক্ষণ নয়।

সময় তিনি আর্থিক খাতের দুর্বলতাকে বড় খলনায়ক উল্লেখ করে বলেন, আর্থিক খাতের যথোপযুক্ত সংস্কার না হওয়াই দেশের জন্য এখন বড় খলনায়ক। আর্থিক খাতে সংস্কার করার ক্ষেত্রে যদি প্রবৃদ্ধির সমন্বয় করা হতো তাহলে অবস্থার তৈরি হতো না। ব্যবস্থাগত উন্নতির মাধ্যমে সময় সংকট মোকাবেলা সম্ভব বলেও জানান তিনি।

সিপিডির ফেলো বলেন, দেশের চলমান সংকট মোকাবেলায় আগামী দুই বছরের পরিকল্পনা করতে হবে। এটার ফলে যে কষ্টগুলো আসবে তা মোকাবেলায় এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। যেসব দেশে সরকারের ব্যয়ে স্বচ্ছতা আছে, সেসব দেশে কর দিতে জনগণকে বেশি উৎসাহিত করে। কিন্তু আমাদের দেশে স্বচ্ছতা নেই, যার কারণে জনগণ কর দিতে চায় না।

অর্থনীতিবিদ আরো বলেন, যদি সরকার এমন একটা নীতি সংযুক্ত করতে পারে তাহলে সরকারের পক্ষে আইএমএফ, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সঙ্গে ভালো দরকষাকষি করে ঋণ আনতে পারবে। 

এজন্য জাতীয় অবস্থান অংশগ্রহণমূলক করা গুরুত্বপূর্ণ। নাগরিক সমাজ, অর্থনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধিসহ সবার অংশগ্রহণে আলোচনার মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে হবে।

জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে তিনি বলেন, মুহূর্তে এত পরিমাণ মূল্যবৃদ্ধি অর্থনীতির জন্য খারাপ দিক। সঠিক বিবেচনা না করেই দাম বাড়ানো হয়েছে। জ্বালানি খাতে যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, এতে সরকারের এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের কোনো ভূমিকা দেখি না। যে ক্ষতির কথা বলা হচ্ছে, আবার আগের যে উদ্বৃত্ত ছিল এসব নিয়ে সরকার কোনো পরিষ্কার বার্তা দিচ্ছে না। সব মিলিয়ে কোনো স্বচ্ছতা এর মধ্যে নেই। যদি একটা কার্যকর সংসদ থাকত তাহলে একজন সংসদ সদস্য প্রশ্ন তুললে মন্ত্রীকে সব জবাব দিতে হতো।

. দেবপ্রিয় আরো উল্লেখ করেন, মূল্যস্ফীতির চাপ টাকার বিনিময় হারে পতনের কারণে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা উচ্চচাপের মধ্যে রয়েছে। এমন অবস্থায় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, সরবরাহ চেইন ব্যাহত, লজিস্টিক, পরিবহন খরচ বৃদ্ধি ইত্যাদি বাংলাদেশের জন্য খারাপ অবস্থা বয়ে আনতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন