তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে পদত্যাগের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া অসৌজন্যমূলক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তথ্য সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্য জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, আগামীকালের (আজকের) মধ্যে মুরাদ হাসান যেন পদত্যাগ করেন। আমি যেন বার্তা তাকে পৌঁছে দিই।

সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনিকে নিয়ে তথ্য সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের নারীবিদ্বেষী বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়। এরই মধ্যে ফাঁস হয় একটি ফোনালাপ। দাবি করা হচ্ছে, এই কথোপকথনটি ডা. মুরাদ হাসান চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির। ফোনালাপে থাকা চিত্রনায়ক ইমন এরই মধ্যে তা স্বীকারও করেছেন। ফাঁস হওয়া ওই কথোপকথনে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মাহিকে ধর্ষণের হুমকি দেয়ার পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় তুলে আনার হুমকি দেন। অশোভন বক্তব্যও দেয়া হয়েছে।

ঘটনার পর মুরাদকে বরখাস্তের দাবি জানিয়েছেন ৪০ জন নারী অধিকারকর্মী। পাশাপাশি ছাত্রলীগের নারী নেত্রীরাও তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন।

সর্বশেষ গত রোববার গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন ডা. মুরাদ হাসান। তবে এর পরই নিজেকে আড়াল করে ফেলেন তিনি। গতকাল রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার কথা থাকলেও যাননি তিনি। এমনকি সেলফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান জামালপুর- (সরিষাবাড়ী, মেস্টা তিতপল্যা) আসন থেকে প্রথমবার সংসদে যান নবম সংসদে। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে দ্বিতীয়বার জয়ী হওয়ার পর তাকে স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের

প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দফায় সরকার গঠনের পাঁচ মাসের মাথায় ২০১৯ সালের মে মাসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে তাকে তথ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়।

তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া জীবনবৃত্তান্ত অনুযায়ী, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় ২০০০ সালে ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সভাপতি হন মুরাদ হাসান। তিন বছর পর আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পান। ৪৭ বছর বয়সী মুরাদ হাসান জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক। তার বাবা অ্যাডভোকেট মতিয়র রহমান তালুকদার ছিলেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন