ব্যাংক অর্থায়ন

দেশে ফ্যাক্টরিংয়ের সম্ভাবনা কতটুকু

এমএ মাসুম

বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশে ফ্যাক্টরিং ফাইন্যান্সিং নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-পর্যালোচনা হচ্ছে। এরই মধ্যে ফ্যাক্টরিংয়ের ওপর অনেক সভা, সেমিনার ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে এখন পর্যন্ত দেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে ফ্যাক্টরিং নিয়ে তেমন আগ্রহ বা এর ব্যবহার পরিলক্ষিত হচ্ছে না।

জামানতবিহীন ঋণ সুবিধা ফ্যাক্টরিং ফাইন্যান্স বিশ্বব্যাপী আর্থিক খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কোনো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান তার বকেয়া বিল কমিশনে দেনাদার ব্যতীত তৃতীয় কোনো পক্ষের কাছে বিক্রি করাকে ফ্যাক্টরিং বলা হয় (আমদানিকারক, রফতানিকারক দুই দেশের দুই এজেন্টের গ্যারান্টিতে রফতানি বিল বন্ধক রেখে নেয়া ঋণ) অন্যভাবে বলতে, কোনো প্রতিষ্ঠানের বিল বা ইনভয়েসের বিপরীতে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অগ্রিম ঋণ সুবিধাই ফ্যাক্টরিং ফাইন্যান্স। যেকোনো দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কোনো ব্যবসায়িক কার্যক্রমের লেনদেনের বিল বা ইনভয়েসের বিপরীতে টাকা পেতে বেশ কিছুদিন সময় লাগে। সময়ের মধ্যে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান সেই বিল বা ইনভয়েসের বিপরীতে প্রাপক প্রতিষ্ঠানকে স্বল্প সুদে ঋণ দেয়, যাতে সে প্রতিষ্ঠানটি ঋণের টাকা দিয়ে একই সময়ের মধ্যে কয়েক গুণ ব্যবসা করতে পারে।

পণ্য বা সেবা সরবরাহকারী বিভিন্ন উৎপাদনকারী বা সেবা প্রতিষ্ঠানকে তাদের পণ্য বা সেবা একটি নির্ধারিত সময়ের জন্য বাকিতে সরবরাহ করতে হয়। এই সময় তাদের চলমান মূলধন সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেয়। সেদিক বিবেচনা করেই আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ফ্যাক্টরিং ফাইন্যান্স সেবা দিয়ে থাকে।

বর্তমানে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুদের হার কম থাকায় ঋণের সুদের হারও কম হবে। আন্তর্জাতিকভাবে ফ্যাক্টরিং পরিচালনা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ফ্যাক্টরিং চেইন ইন্টারন্যাশনালের (এফসিআই) সদস্য হয়ে প্রক্রিয়াটি শুরু করতে হয়। উল্লেখ্য, ফ্যাক্টরিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিং অব ওপেন অ্যাকাউন্ট ডোমেস্টিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড রিসিভেবলের বৈশ্বিক প্রতিনিধি সংস্থা হলো এফসিআই। ১৯৬৮ সালে একটি অলাভজনক বৈশ্বিক সংস্থা হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর বর্তমানে বিশ্বের ৯০টি দেশের প্রায় ৪০০ সদস্য কোম্পানির একটি সংস্থায় পরিণত হয়েছে এটি। এফসিআই ক্রস-বর্ডার ফ্যাক্টরিং মেম্বার কার্য পরিচালনায় সহযোগিতায় শক্তিশালী নেটওয়ার্ক সেবা প্রদান করে, যা বিশ্বের মোট আন্তর্জাতিক করেসপনডেন্সের পরিমাণের প্রায় ৬০ শতাংশ। এফসিআইয়ের আওতায় বছরে প্রায় হাজার কোটি ডলার লেনদেন হয়। এতে রফতানিকারক, আমদানিকারক সংশ্লিষ্ট দুই দেশের একজন করে চারটি প্রতিনিধি যুক্ত থাকেন। এদের এফসিআইয়ের সদস্য হতে হয়।

বাণিজ্য প্রসার আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে অর্থায়নের বিকল্প মাধ্যম হতে পারে ফ্যাক্টরিং। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ফ্যাক্টরিংয়ের বিশাল টার্নওভার রয়েছে। এটি বিশেষ করে ক্ষুদ্র মাঝারি আকারের ব্যবসার আর্থিক চাহিদার জন্য সর্বজনীনভাবে গ্রহণযোগ্য। ফ্যাক্টরিং উন্নয়নশীল শিল্পোন্নত দেশগুলোর ব্যবসা-বাণিজ্যে ব্যাপক ব্যবহূত হচ্ছে। আমেরিকা ইউরোপের আন্ত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ফ্যাক্টরিং পুরোপুরিভাবে পরিচালিত হচ্ছে।

বাণিজ্য বিশ্লেষকরা মনে করেন অপেক্ষাকৃত ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য ফ্যাক্টরিং খুবই জরুরি। বিনিয়োগ ঝুঁকিমুক্ত রাখতে তা খুব দ্রুতই করা উচিত। অর্থাভাবে ব্যবসায়ীরা তৃতীয় পক্ষের কাছে কমিশনে বিক্রি করে দিতে পারলে অর্থঝুঁকি থেকে বাঁচবেন। কারণ, কখনো কখনো তাদের পথে বসে যাওয়ার অবস্থা হয়।

আমাদের পার্শ্ববর্তী বৃহৎ অর্থনীতির দেশ ভারত ফ্যাক্টরিং ব্যবস্থা চালু করেছে। তবে ফ্যাক্টরিং এলসির বিকল্প হতে পারে না। এলসি একটি পেমেন্ট পদ্ধতি। ফ্যাক্টরিং মূলধন জোগানকারী হচ্ছে তৃতীয় পক্ষ। উন্নত দেশগুলো নিজেদের ব্যবসায়ে খরচ কমানোর লক্ষ্যে ব্যাপকভাবে ফ্যাক্টরিংয়ের ব্যবহার করে। তাই দেশে ফ্যাক্টরিং ব্যবস্থা চালু হলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন ব্যবসায়ীরা। ফ্যাক্টরিং বাংলাদেশের ব্যবসায়িক পরিমণ্ডলে একটি নতুন ধারণা হলেও বিনিয়োগে অর্থায়নের উৎস হিসেবে এবং ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড গতিশীল রাখার ক্ষেত্রে এটি খুবই কার্যকর।

ক্ষুদ্র মাঝারি উদ্যোক্তা (এসএমই) খাত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখছে। রফতানি আয়ের ৭৫-৮০ শতাংশ অবদানই এসএমই খাতের। বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে জিডিপির প্রায় ২৫ শতাংশ উৎপাদন খাতের প্রায় ৪০ শতাংশ এসএমইর অবদান। বেসরকারি খাতের ৯০ শতাংশ এবং অকৃষি খাতের প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ কর্মসংস্থান হয় খাত থেকে। অর্থনীতিতে বিশাল অবদানের জন্য তাদের অর্থায়ন সমস্যার বিষয়টিতে বাড়তি নজর দেয়া হলে অর্থনীতি বহুমুখীকরণ প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হতে পারে। বাণিজ্য বিশ্লেষকরা মনে করেন, অপেক্ষাকৃত ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য ফ্যাক্টরিং খুবই জরুরি।

প্রশ্ন হচ্ছে ফ্যাক্টরিংয়ের অনেক সুবিধা থাকার পরও বাংলাদেশে কেন এর পরিধি বিস্তার লাভ করছে না। বেশকিছু বিষয়কে ফ্যাক্টরিং ফাইন্যান্সের অন্যতম প্রতিবন্ধকতা মনে করা হয়, যার কয়েকটি নিম্নে আলোচনা করা হলো:

ফ্যাক্টরিংয়ের উদ্ভব হয় ওপেন অ্যাকাউন্টের ভিত্তিতে আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অঙ্গনে ওপেন অ্যাকাউন্ট নতুন ধারণা নয়। ওপেন অ্যাকাউন্ট পদ্ধতিতে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক দলিলপত্র বা পণ্য প্রাপ্তির পর ক্রেতা মূল্য পরিশোধ করেন। উন্নত দেশগুলোতে, বিশেষ করে ইউরোপীয় দেশগুলোতে বাণিজ্য লেনদেনে এটি একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বহু বছর ধরেই ওপেন অ্যাকাউন্টের ভিত্তিতে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য পরিচালিত হচ্ছে। উদীয়মান অর্থনীতির দেশসহ এশিয়ার অনেক দেশেই পদ্ধতিতে বাণিজ্য হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে বৈদেশিক বাণিজ্যে ওপেন অ্যাকাউন্ট এখনো জনপ্রিয়তা লাভ করেনি, বরং এখনো প্রায় ৯০ শতাংশ বাণিজ্য সম্পন্ন হচ্ছে এলসির ভিত্তিতে। কারণ রফতানিকারকরা রফতানি মূল্যপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে পদ্ধতিকে অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ইস্যুকৃত গাইডলাইনস ফর ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রানজেকশনস (জিএফইটি), ভলিউম-, চ্যাপ্টার , সেকশন ১৩() অনুযায়ী রফতানির ক্ষেত্রে মালামাল জাহাজীকরণের ১২০ দিনের মধ্যে রফতানি মূল্য প্রত্যাবাসনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু ফ্যাক্টরিং ফাইন্যান্স সুবিধা ১৮০ দিন পর্যন্ত দেয়া হয়। এক্ষেত্রে একজন রফতানিকারক যদি রফতানি মূল্যের ৮০ শতাংশ অগ্রিম গ্রহণ করে আবার বাকি ২০ শতাংশ মূল্য ক্রেতার কাছে সংগ্রহ করে মালামাল জাহাজীকরণের ১২০ দিন পর প্রত্যাবাসিত হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট ইএক্সপি ওভারডিউ হিসেবে বিবেচিত হবে। কারণ জিএফইটি অনুসারে জাহাজীকরণের ১২০ দিনের মধ্যে ইএক্সপির পূর্ণ মূল্য প্রত্যাবাসিত না হলে সংশ্লিষ্ট ইএক্সপি ওভারডিউ হিসেবে গণ্য করা হয়। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রফতানিকারকের জন্য ইডিএফ, নগদ সহায়তাসহ অন্যান্য ব্যাংকিং সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হয়।

পেমেন্ট আন্ডারটেকিংয়ের বিপরীতে চার্জ কমিশন লাইবর প্লাস .৫০ শতাংশ, যা রফতানিকারকদের জন্য সন্তোষজনক নাও হতে পারে, কারণ ইডিএফের খরচ এখনো ছয় মাসের লাইবর প্লাস শতাংশ বার্ষিক, যা খুবই কম।

অর্থ পরিশোধের ঝুঁকি হ্রাসে ফ্যাক্টর রফতানিকারকের খরচে আমদানিকারকদের কাছ থেকে বীমা কভারেজ গ্রহণ করে। ফলে রফতানিকারকের খরচ বাড়ে।

স্থানীয় ব্যাংকগুলো রফতানি ফ্যাক্টর হিসেবে ফ্যাক্টরিং ব্যবসা করতে চাইলে প্রথমে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে নেদারল্যান্ডসের ফ্যাক্টর চেইন ইন্টারন্যাশনালের (এফসিআই) সদস্য হতে হয় এবং সদস্য ফি হিসেবে প্রথম বছর ১১ হাজার ৫০০ ইউরো পরিশোধ করতে হয়। সদস্য নবায়ন ফি হিসেবে প্রথম তিন বছর হাজার ইউরো এবং পরবর্তী তিন বছরের জন্য খরচ করতে হয় প্রায় হাজার ৫০০ ইউরো। ইউরোর ওই ফির ওপর ২০ শতাংশ হারে ট্যাক্স প্রদান করতে হয়। ফলে ব্যয়বহুল ফি ট্যাক্স প্রদানের মাধ্যমে সদস্য হওয়া এবং তা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া স্থানীয় প্রতিবন্ধকতার জন্য মারাত্মক চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেয়।

ফ্যাক্টরিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে উপস্থাপন করা প্রয়োজন হয় কিন্তু আমাদের দেশের ব্যাংক আমদানি/রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান ধরনের প্রযুক্তিগতভাবে ডকুমেন্টস উপস্থাপনে অভ্যস্ত নয়। এমনকি অধিকাংশ বৈদেশিক বাণিজ্যে নিয়োজিত পেশাদার ব্যাংকাররাও এই বিষয়ে অভিজ্ঞ নয়, যা ফ্যাক্টরিংয়ের অন্যতম অন্তরায়। আমাদের দেশের রফতানি বাণিজ্যে অধিকাংশ চুক্তিতে ক্রেতার মনোনীত সরবরাহকারী/কারখানার মাধ্যমে কাঁচামাল সরবরাহের জন্য ব্যাক টু ব্যাক এলসি খোলার শর্ত যুক্ত থাকে। ফলে রফতানিকারকদের জন্য ওপেন অ্যাকাউন্ট এবং এলসির বিপরীতে রফতানির হিসাব সংরক্ষণ তথা পারফরম্যান্স হিসাব করা জটিলতা সৃষ্টি হয়। তাছাড়া, এলসি ফ্যাক্টরিংয়ের মাধ্যমে যৌথভাবে রফতানি বাণিজ্য পরিচালনার ফলে খরচও বেড়ে যেতে পারে। এতে রফতানিকারকদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির আশঙ্কা করা হয়। উইথ রিসোর্স অথবা বহুল ব্যবহূত উইদাউট রিসোর্স ভিত্তিতে ফ্যাক্টরিংয়ের ক্ষেত্রে গ্রাহক বা কোম্পানি কর্তৃক মূল্য পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। আমাদের দেশে ব্যাপকভাবে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি সংস্কৃতির প্রচলন, খেলাপিদের বিরুদ্ধে যুগোপযোগী কঠোর রাষ্ট্রীয় আইন না থাকা, আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকা, বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতা, দুর্নীতি ক্ষমতার অপব্যবহার, অর্থ পাচার ইত্যাদি ফ্যাক্টরিং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের লেনদেন পরিশোধের প্রায় ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হচ্ছে ওপেন অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) কর্তৃক পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, বাজারের গতিপ্রকৃতি পরিবর্তন হচ্ছে এবং ব্যবসায়ীরা ওপেন অ্যাকাউন্টের প্রতি ঝুঁকছে। উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ এশিয়ার আমদানিকারকরা ব্যাপকভাবে লেটার অব ক্রেডিটের পরিবর্তে ক্রমেই ওপেন অ্যাকাউন্টের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এশিয়ার বাজারেও রফতানিকারকদের চাপের কারণে আমদানিকারকরা ওপেন অ্যাকাউন্টে লেনদেন করতে বাধ্য হচ্ছে।

ওপেন অ্যাকাউন্টের আওতায় রফতানির ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষাপটে এবং চাহিদা মেটানোর জন্য আর্থিক সক্ষমতা নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশ ব্যাংক ৩০ জুন, ২০২০ এক সার্কুলার ইস্যু করে। যার মাধ্যমে যথাযোগ্য ঝুঁকি লাঘব করে ব্যাংকগুলোকে ওপেন অ্যাকাউন্টের ভিত্তিতে রফতানি সুবিধার অনুমতি প্রদান করে। তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টরিংয়ের ওপর একটি গাইডলাইনও প্রণয়ন করা হয়। বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে স্বল্প পরিসরে হলেও ফ্যাক্টরিং ফাইন্যান্সের প্রতি আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে। এরই মধ্যে মিউচুয়াল ট্রাস্ট, মার্কেন্টাইল, ইস্টার্ন, ব্যাংক এশিয়া, প্রাইম ব্যাংকসহ দেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংক এফসিআইয়ের সহযোগী সদস্য হিসেবে যোগদান করেছে।   

বাংলাদেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের প্রায় ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয় এলসির মাধ্যমে। কিন্তু এলসি পদ্ধতিতে বাণিজ্য করা সময়সাপেক্ষ জটিলতানির্ভর। সেক্ষেত্রে ক্ষুদ্র মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য এলসি পাওয়া আরো জটিল। তাছাড়া বিশ্বের অধিকাংশ দেশে বৈদেশিক বাণিজ্যের সুদসহ অন্যান্য খরচ অনেক কমে গেছে। কিন্তু বাংলাদেশে সে হারে এখনো কমেনি। এখন কম সুদের বিদেশী ঋণ কাজে লাগাতে পারলে উৎপাদন খরচ কমবে। ফলে প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা অর্জনে সহায়ক হবে। আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের এক প্রতিবেদনে করোনার প্রভাব মোকাবেলায় রফতানি খাতে অর্থের প্রবাহ বাড়াতে ফ্যাক্টরিং প্রক্রিয়াকে দ্রুত কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়েছে। তারা বলেছে, পদ্ধতি কাজে লাগানো হলে বাংলাদেশের সঙ্গে আমদানিকারক দেশগুলোর অর্থের প্রবাহ বাড়বে, যা করোনা মহামারীকে মোকাবেলা করতে সহায়ক হবে।

 

এমএ মাসুম: ব্যাংকার অর্থনৈতিক বিশ্লেষক

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন