এফবিসিসিআইয়ের অনুষ্ঠানে বক্তারা

কর্মক্ষম জনবলকে প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে ব্যাপক ডিজিটালাইজেশন হয়েছে। ফলে নতুন নতুন উদ্ভাবনী অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এজন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ কর্মী সরবরাহের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থার কাঠামোগত পরিবর্তন এখন মূল চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী করে দেশের কর্মক্ষম জনবলকে অবশ্যই প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন করতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) আয়োজিত গতকালের এক পলিসি ডায়ালগ অনুষ্ঠান থেকে এমন অভিমত ব্যক্ত করেন বক্তারা। ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বিনিয়োগ, দেশীয় বাজার উন্নয়ন, রফতানি বৈচিত্র্যকরণের লক্ষ্যে দক্ষ কর্মী ব্যবস্থাপক তৈরির জন্য সুনির্দিষ্ট সুপারিশ প্রণয়নের জন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে  এফবিসিসিআই। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. হেলাল উদ্দিন। সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, উৎপাদন সার্ভিস সেক্টরে প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ লোকের চাহিদা আছে। ট্রেনিং একাডেমিসহ সব সেক্টরে যেসব গ্যাপ রয়েছে, সেগুলো নিয়ে কাজ করতে কারিগরি শিক্ষা বিভাগ এরই মধ্যে বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে। দক্ষ কর্মী ব্যবস্থাপক তৈরিতে পাবলিক প্রাইভেট সমন্বিতভাবে এগোতে হবে। এফবিসিসিআইসহ সব সেক্টরকে সমন্বিত করতে পারলে প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য পূরণ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সক্ষম হব আমরা।

সময় তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ডাটাবেজের অভাব, কারিগরি শিক্ষা মূল্যায়নে সীমাবদ্ধতা, মাস্টারট্রেইনারের অভাবসহ বেশকিছু সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এজন্য এফবিসিসিআইসহ সব সেক্টরকে সমন্বিত হয়ে খাতভিক্তিক গ্যাপ উত্তরণে কাজ করতে হবে। এতে দেশে-বিদেশে সর্বক্ষেত্রে ভ্যালু অ্যাডিশন হবে, প্রডাক্টিভিটি বাড়বে।

উন্নয়নশীল দেশের উপযোগী অর্থনৈতিক সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দক্ষ কর্মী ব্যবস্থাপক তৈরির বিষয়ে প্রস্তাবনা তৈরির উদ্যোগ নেয়ায় কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরকে ধন্যবাদ জানান এফবিসিসিআই সভাপতি। তিনি বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দক্ষ কর্মীর পাশাপাশি দক্ষ ব্যবস্থাপক তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। এজন্য আমাদের নিডবেজ স্পেশালাইজেশন দরকার। সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিশেষ খাতে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালনা করা যেতে পারে। সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে আরো গতিশীল করতে যথাযথ প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। প্রয়োজনে সুনির্দিষ্ট প্রশিক্ষণের লক্ষ্যে বিদেশ থেকে মানসম্মত ট্রেইনার আনার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

এফবিসিসিআই সভাপতি আরো বলেন, আমাদের ব্যবসার সঙ্গে একাডেমিয়ার যোগাযোগ নেই। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনসহ সরকারের লক্ষ্যগুলো অর্জনে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অত্যন্ত জরুরি। তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর শিল্প, বাণিজ্য অফিস ব্যবস্থাপনা পরিচালনার জন্য প্রশিক্ষণ দিতে হবে, যা ব্যাপক হারে প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক আবু নাসের। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য দেন সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী। এছাড়া এফবিসিসিআইয়ের অন্যান্য পরিচালক, বিভিন্ন চেম্বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিসহ জেনারেল বডির সদস্যরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এফবিসিসিআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন