কভিডজনিত বিধিনিষেধ

টেক্সটাইল ক্রয়াদেশ হারাচ্ছে ভিয়েতনাম

বণিক বার্তা ডেস্ক

বিধিনিষেধে ভিয়েতনামের অনেক গার্মেন্ট তাদের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে ছবি: ভিয়েতনাম টাইমস

কভিডসংক্রান্ত বিধিনিষেধ সংক্রমণ হারের কারণে বিভিন্ন পোশাক বিপণন কোম্পানি ভিয়েতনামের টেক্সটাইল গার্মেন্ট প্রস্তুতকারকদের কাছে তাদের ক্রয়াদেশ দিচ্ছে না। এর পরিবর্তে তারা অন্যান্য তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক দেশের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। আবার অনেক কোম্পানি ভিয়েতনামে টেক্সটাইল গার্মেন্ট শিল্প পুনরায় তাদের কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার অপেক্ষা করছে।

ভিয়েতনাম টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের এপ্রিলে ইতালিয়ান ফাস্ট-ফ্যাশন গ্রুপ টেডি ক্রয়াদেশ দেয়ার জন্য ভিয়েতনামের মাইওয়ান ফ্যাশন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর শুরু করে। ফলে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের মধ্যে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকবে। বর্তমানে মাইওয়ান তাদের বিদ্যমান ক্রয়াদেশ পরিপূর্ণ করতে উৎপাদন সক্ষমতা বাড়িয়েছে। তবে দেশটিতে কভিড-১৯ বিষয়ক বিধিনিষেধ সংক্রমণের কারণে তারা নতুন কোনো ক্রয়াদেশ নিচ্ছে না।

মাইওয়ান কোম্পানির পরিচালক লে ভান তাম জানান, চলতি বছরে যেসব ক্রয়াদেশ গ্রহণ করা হয়েছে তা সময়মতো সরবরাহ করাই আমাদের জন্য অনেকটা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে আমরা নতুন ক্রয়াদেশ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকছি। টেক্সটাইল গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রির অন্যান্য ব্যবসাও একই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।

ভিয়েত থাং জিন কোম্পানির বোর্ড চেয়ারম্যান ফাম ভান ভিয়েত জানান, প্রধানমন্ত্রীর ১৬টি নির্দেশনার অধীনে গৃহে অবস্থানবিষয়ক নির্দেশনা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে বেশি প্রভাব ফেলছে।

সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা পালনের জন্য প্রতিষ্ঠানটি তার মোট শ্রমশক্তির এক-তৃতীয়াংশ জনশক্তিকে কারখানায় স্থান দিতে পারছে। বর্তমানে নিয়মিত কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটির এমন শ্রমশক্তির পরিমাণ সাড়ে তিন হাজার। নির্দেশনা অনুযায়ী এসব শ্রমিক কারখানাতেই তাদের কাজ, খাওয়া ঘুমের ব্যবস্থা করেছেন। এসব পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে প্রতিষ্ঠানটি উল্লেখযোগ্য হারে তাদের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা হ্রাস করার পাশাপাশি তাদের শ্রমিকদের উৎপাদনক্ষমতাও হ্রাস করেছে। কভিড-১৯-এর সংক্রমণ রোধে যথাযথ পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

ভিয়েত থাং জিন কোম্পানির অনেক ব্যবসায়িক অংশীদার প্রতিষ্ঠানটিতে তখনই ক্রয়াদেশ দেবে যখন তারা পুরোদমে আগের মতো তাদের কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করবে। তবে ঠিক কবে নাগাদ পুরোপুরি স্বাভাবিক উৎপাদনে ফিরতে পারবে সে ব্যাপারে কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। তারা বলছে, সঠিক সময় বলতে পারাটা অনেকটা কঠিন। ফলে প্রতিষ্ঠানটি কোনো নতুন ক্রয়াদেশ চুক্তি স্বাক্ষর করার ব্যাপারে এখনো আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

টেক্সটাইল শিল্পের ক্রয়াদেশ ভিয়েতনাম থেকে অন্যান্য দেশে স্থানান্তরিত হওয়া প্রসঙ্গে ভিয়েতনাম টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ভু ডুক জিয়াং জানান, স্থানান্তর খুবই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এমনটাই হওয়ার কথা।

জিয়াং জানান, ভিয়েতনামের দক্ষিণাঞ্চলের ৯৭ শতাংশ টেক্সটাইল গার্মেন্ট তাদের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে। কভিড-১৯ সংক্রান্ত নানা বিধিনিষেধের কারণে এসব কারখানা তাদের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। এমন পরিস্থিতি তাদের ব্যবসায়িক অংশীদারদের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করতে উৎপাদন ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। ফলে কারখানাগুলোর ব্যবসায়িক অংশীদাররা তাদের সরবরাহ চেইন স্বাভাবিক রাখার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন