চীনা কোম্পানি সিনোফার্মের কাছ থেকে আরো দেড় কোটি ডোজ টিকা আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। প্রাথমিক চুক্তিমূল্যের চেয়ে কম দামে বাংলাদেশ এ টিকা পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল কমিটির বৈঠকে পরিবর্তিত মূল্যে দেড় কোটি ডোজ টিকা আমদানির বিষয়টি চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার পর ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী এ কথা জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় ঔষধাগার কর্তৃক চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোফার্ম ইন্টারন্যাশনাল থেকে চুক্তিবদ্ধ ১৫ মিলিয়ন ডোজের মধ্যে অবশিষ্ট ১৩ মিলিয়ন ডোজ এবং নতুন প্রস্তাবিত দুই মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন, অর্থাৎ সব মিলিয়ে ১৫ মিলিয়ন ডোজ আগের চুক্তিপত্রের উল্লিখিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে সিনোফার্ম ভ্যাকসিন সাপ্লিমেন্ট এগ্রিমেন্ট-১-এর আওতায় সরবরাহের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। কভিড-১৯ মোকাবেলায় জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য ১৫ মিলিয়ন ডোজের অতিরিক্ত ভ্যাকসিন প্রয়োজন হলে সরবরাহের প্রস্তাবও অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
তবে পরিবর্তিত দাম ও টিকা আসার সময় সম্পর্কে কোনো তথ্য দেননি অর্থমন্ত্রী। তিনি জানান, চীন থেকে টিকা কেনা নিয়ে আগে একবার পেছনে পড়ে গিয়েছিলাম। তাই বিশদ বলা সম্ভব হচ্ছে না। টেকনিক্যাল সমস্যা আছে। তবে আইন মন্ত্রণালয়ের পরীক্ষা হয়ে গেছে এবং কতদিনের মধ্যে আসবে, তা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ভালো জানে এ কথাও উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী।
গত মে মাসে ক্রয় কমিটির সভায় চীন থেকে সরকারি পর্যায়ে সরাসরি ওই টিকা কেনার প্রস্তাব অনুমোদনের পর সিনোফার্ম প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে জুন, জুলাই ও আগস্টে বাংলাদেশকে দেড় কোটি ডোজ টিকা সরবরাহ করবে জানিয়ে সেদিন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শাহিদা আক্তার বলেছিলেন, এ কেনাকাটায় আমাদের দেশীয় কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। সরাসরি চীন সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের এ ক্রয় চুক্তি হচ্ছে। কিন্তু সেদিন টিকার দাম গণমাধ্যমের সামনে প্রকাশ করায় টিকা নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ার খবর আসে গণমাধ্যমে। বলা হয়, দাম প্রকাশের বিষয়টি চীন ভালোভাবে নেয়নি। এরপর অতিরিক্ত সচিব শাহিদা আকতারকে ওএসডি করারও আদেশ আসে।
গতকাল বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, এ পারচেজগুলো সিলেক্টিভ পারচেজ, টেকনিক্যাল কারণে আপনাদের ডিটেইল বলতে পারি না। বলা সম্ভবও হচ্ছে না। আমার বিশ্বাস, আপনারা বিষয়টি বুঝবেন এবং আমাদের সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করবেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সামসুল আরেফিন বলেন, আগে চুক্তি হয়েছিল ১৫ মিলিয়নের। এর মধ্যে দুই মিলিয়ন যেগুলো দিয়েছে সেগুলো উপহার হিসেবে দিয়েছে। এখন যেহেতু দুই মিলিয়ন উপহার দিয়েছে, তাই আরো দুই মিলিয়ন যোগ করে আবার ১৫ মিলিয়ন দিচ্ছে। সেটা হবে আগের মূল্যের চেয়ে হ্রাসকৃত মূল্যে।
ভারত থেকে পাঁচ ডলারে ও চীন থেকে এর চেয়ে একটু বেশি দামে করোনার টিকা কেনার কথা জানা গিয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় একটি বিজ্ঞাপন দিয়ে বলেছে, প্রতি টিকার দাম পড়ছে প্রায় ৩ হাজার টাকা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, এটা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে জানা যাবে।
এদিকে বৈঠকে সুইজারল্যান্ডের এওটি ট্রেডিং এজি থেকে ৪৩৬ কোটি ৪৭ লাখ ৬৪ হাজার ২০৫ টাকায় ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে।