সৌদি আরব

বিদেশী কর্মী নিয়োগে কাফালা পদ্ধতি বাতিলের পরিকল্পনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদেশী কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা কাফালা পদ্ধতি বাতিলের কথা ভাববে সৌদি আরব, এর পরিবর্তে নিয়োগকর্তা কর্মীদের মধ্যে নতুন ধরনের চুক্তির কথা ভাবা হচ্ছে। মূলত বেসরকারি খাতের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিভিন্ন দেশের মেধাবীদের আকৃষ্ট করতে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সৌদি আরব।

প্রসঙ্গত, কাফালা পদ্ধতিতে একজন কফিল কিংবা নিয়োগকর্তা কোনো বিদেশী কর্মীকে স্পন্সর করলে সে কর্মী সৌদি আরবে যেতে পারেন এবং সেখানে যাওয়ার পর ওই নিয়োগকর্তার অধীনে কাজ করতে হয় তাকে। এক্ষেত্রে ওই কর্মীর কাজ পরিবর্তনসহ সার্বিক সব বিষয় নির্ভর করে নিয়োগকর্তার ওপর। প্রায় সাত দশক ধরে সৌদিতে চালু থাকা পদ্ধতির কারণে সেখানে কর্মরত বিদেশী শ্রমিকরা কোনো ধরনের স্বাধীনতা ভোগ করতে পারেন না। শ্রমিকদের তাদের নিয়োগকর্তার ইচ্ছামতো চলতে হয়।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানিয়েছে, সৌদির মানবসম্পদ সামাজিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রণালয় আগামী সপ্তাহে একটি নতুন উদ্যোগের কথা ঘোষণা করতে চাচ্ছে যেখানে, নিয়োগকারী এবং প্রবাসী শ্রমিকদের মধ্যে চুক্তিভিত্তিক সম্পর্কের উন্নতি ঘটবে। প্রথম থেকেই কাফালা পদ্ধতির সমালোচনা করে আসছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। রয়টার্স বলছে, সৌদি কফিলরা পদ্ধতি ব্যবহার করে আইনের মারপ্যাঁচে প্রবাসীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করে থাকেন। এটি বাতিল হলে প্রবাসীরা তাদের কর্মজীবনে অনেকটা স্বাধীন হবেন এবং ইচ্ছামতো কাজ নির্বাচন করতে পারবেন। ২০২১ সালের প্রথম ছয় মাসের মধ্যেই কাফালা বাতিলের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। কাফালা পদ্ধতির অধীনে সৌদিতে বর্তমানে এক কোটির বেশি বিদেশী শ্রমিক কর্মরত আছেন।

উল্লেখ্য, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার। দেশটিতে বর্তমানে ২২ লাখের বেশি বাংলাদেশী বসবাস করছেন। জনশক্তি কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, করোনার কারণে উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ হওয়ার আগে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) দেশটিতে গিয়েছেন লাখ ৮১ হাজার ২১৮ বাংলাদেশী কর্মী। একই সঙ্গে দেশটি আবার বাংলাদেশে রেমিট্যান্সেরও সবচেয়ে বড় উৎস। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত অর্থবছরে (২০১৯-২০) দেশটি থেকে রেকর্ড ৪০১ দশমিক ৫১ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। করোনার মধ্যেও চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসেই (জুলাই-আগস্ট) দেশটি থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ১০৮ কোটি ডলারের বেশি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন