বছরের প্রথমার্ধ

ধস নেমেছে ইন্দোনেশিয়ার পাম অয়েল রফতানিতে

বণিক বার্তা ডেস্ক

নভেল করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারীতে অন্যান্য খাতের মতো ধস নেমেছে ইন্দোনেশিয়ার পাম অয়েল রফতানি খাতেও। দেশে দেশে টানা লকডাউন, বিশ্বজুড়ে চাহিদায় পতন, ভাইরাস সংক্রমণে শ্রমিক সংকট, আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার জের ধরে চলতি বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে পাম অয়েল রফতানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ কমেছে। ইন্দোনেশিয়ান পাম অয়েল অ্যাসোসিয়েশনের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে তথ্য জানানো হয়েছে। খবর সিনহুয়া জাকার্তা পোস্ট।

ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের শীর্ষ পাম অয়েল উৎপাদনকারী রফতানিকারক দেশ। দেশটির পাম অয়েল অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ইন্দোনেশিয়া থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে কোটি ৫৫ লাখ টন অপরিশোধিত পাম অয়েল রফতানি হয়েছে। এক বছরের ব্যবধানে দেশটি থেকে পণ্যটির রফতানি কমেছে ১১ শতাংশ।

তবে রফতানির পরিমাণ কমলেও সময় পাম অয়েল রফতানি করে ইন্দোনেশিয়ার রফতানিকারকদের আয় আগের তুলনায় বেড়েছে। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে পাম অয়েল রফতানি করে ইন্দোনেশিয়ার রফতানিকারকরা সব মিলিয়ে হাজার কোটি ডলার আয় করেছেন। এক বছরের ব্যবধানে পাম অয়েল রফতানি খাত থেকে আয় বেড়েছে দশমিক শতাংশ। খাতসংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, রফতানির পরিমাণ কমলেও আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়তি দামের জের ধরে চলতি বছরের প্রথমার্ধে ইন্দোনেশীয় পাম অয়েল রফতানিকারকদের আয় বেড়েছে।

বিষয়ে ইন্দোনেশিয়ান পাম অয়েল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান জোকো সুপ্রিওনো বলেন, নভেল করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারী ইন্দোনেশিয়া থেকে পাম অয়েল রফতানিতে ধস নামিয়েছে। তা না হলে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে পণ্যটি রফতানি করে প্রাপ্ত আয় আরো অনেক বেশি হতো। এখন বছরের বাকি সময়ে চাহিদা বেড়ে বেচাকেনা না বাড়লে মন্দার ভেতর দিয়ে যেতে পারে ইন্দোনেশিয়ার পাম অয়েল শিল্প।

চলতি বছরের শুরুতে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউনে চলে যায় চীন। মার্চে ভারতের লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ওই সময় থেকে পাম অয়েল আমদানি কমিয়ে দেয় দেশ দুটি। ইন্দোনেশিয়া থেকে রফতানি হওয়া পাম অয়েলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা চীন ভারত। ফলে করোনাকালে দুটি দেশে চাহিদা আমদানি কমতির দিকে থাকায় শ্লথ হয়ে আসে ইন্দোনেশিয়ার পাম অয়েল রফতানি। একই পরিস্থিতি বজায় ছিল ইউরোপের বাজারের ক্ষেত্রেও।

ইন্দোনেশিয়া নিজেও করোনার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। ভাইরাস সংক্রমণের পর থেকে দেশটির আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। এসব কারণ ইন্দোনেশিয়া থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে পাম অয়েলের রফতানি কমাতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে বলে জানান খাতসংশ্লিষ্টরা।

গত বছরও ইন্দোনেশিয়ার পাম অয়েল রফতানিতে মন্দা ভাব বজায় ছিল। মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ইন্দোনেশিয়া থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে কোটি ৭৫ লাখ টন পাম অয়েল রফতানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় দশমিক ৭৫ শতাংশ কম। ২০১৮ সালে দেশটি থেকে আগের বছরের তুলনায় দশমিক ৮৭ শতাংশ বেড়ে মোট কোটি ৮২ লাখ ৭৯ হাজার টন পাম অয়েল রফতানি হয়েছিল। ইন্দোনেশিয়ার ইতিহাসে এটাই ছিল পাম অয়েল রফতানির সর্বোচ্চ রেকর্ড।

তবে চলতি বছর শেষে চাঙ্গা হয়ে উঠতে পারে ইন্দোনেমিয়ার পাম অয়েল রফতানি। ইউএসডিএর পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২০ সালে ইন্দোনেশিয়ার রফতানিকারকরা কোটি ৮৭ লাখ ৫০ হাজার টন পাম অয়েল রফতানি করতে পারেন, যা আগের বছরের তুলনায় দশমিক ৫৫ শতাংশ বেশি। এটাই হবে ইন্দোনেশিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি পাম অয়েল রফতানির রেকর্ড।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন