ভারতে দেশব্যাপী আরোপিত লকডাউনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ। এরই মধ্যে গতকাল দেশটির সংক্রমণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত বিচ্ছিন্ন করে রাখা এলাকাগুলোয় এ লকডাউনের মেয়াদ ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে নয়াদিল্লি। একই সঙ্গে এসব এলাকার বাইরে ভারতের অন্যান্য স্থানে পর্যায়ক্রমে অর্থনৈতিক কার্যক্রম ধীরে ধীরে বাড়বে বলে জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। এ-সংক্রান্ত একটি গাইডলাইনও প্রকাশ করা হয়েছে। খবর হিন্দুস্তান টাইমস।
ভারতে বিচ্ছিন্ন করে রাখা এলাকাগুলোয় বেশ কঠোরভাবে লকডাউনের প্রয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাষ্যমতে, দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর তিনি বৈঠকে তাদের কাছ থেকে পাওয়া মতামত নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনায় বসেন। এর পরই গতকাল দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব এলাকায় লকডাউন বর্ধিত করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এছাড়া ভারতের অন্যান্য স্থানে পর্যায়ক্রমে সব অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালুর বিষয়েও একটি গাইডলাইন প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে আগামী ৮ জুন ধর্মীয় উপাসনালয়, হোটেল, রেস্তোরাঁ ও অন্যান্য অতিথি সেবা কার্যক্রম ও শপিং মল খোলার অনুমতি দেয়া হবে। এসব স্থানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে কার্যক্রম চালু রাখতে হবে, সে বিষয়ে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা জারি করা হবে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ভাবছে দেশটির সরকার। সেক্ষেত্রে রাজ্য পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট অন্যদের মতামত গ্রহণ করা হবে।
তাদের কাছ থেকে পাওয়া অভিমতের ভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে কিনা, সে বিষয়ে জুলাইয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসংক্রান্ত নির্দেশনা তৈরির কাজে হাত দেবে।
এছাড়া এ সময় ভারতে বেশকিছু কার্যক্রমের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা চালু থাকবে। এ সময় আন্তর্জাতিক ফ্লাইট, মেট্রোরেল, সিনেমা হল, জিমনেশিয়াম, সুইমিং পুল, এন্টারটেইনমেন্ট পার্ক, থিয়েটার, বার, অডিটোরিয়াম, সম্মেলন কেন্দ্র ও এ জাতীয় স্থান যথারীতি বন্ধ থাকবে। এছাড়া বড় জনসমাগম হয় এমন সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও ক্রীড়া অনুষ্ঠান আয়োজনও এ সময় বন্ধ থাকবে। তৃতীয় পর্যায়ে এসব কার্যক্রমই চালু করা হবে, তবে তা কবে, সে বিষয়ে পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এছাড়া দেশটিতে রাত্রিকালীন কারফিউর সময় কমিয়ে রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে পঁয়ষট্টি-ঊর্ধ্ব ব্যক্তি যাদের অন্যান্য ব্যাধি রয়েছে, গর্ভবতী নারী ও ১০ বছরের কম বয়সী শিশুদের ঘরেই অবস্থান করতে বলা হয়েছে।