পুরো বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশ্বাসী আ.লীগ: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেনে, কোন এলাকার মানুষ ভোট দিল, কোন এলাকার মানুষ ভোট দিল নাএটা বিবেচনায় নিয়ে আওয়ামী লীগ উন্নয়নকাজ করে না। আমরা সমগ্র বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশ্বাস করি। প্রতিটি মানুষের উন্নয়নে বিশ্বাস করি। বাংলাদেশে গণতন্ত্র আছে। এ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কেউ ভোট দিক বা না দিক, উন্নয়নের ছোঁয়াটা প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছাক, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। গতকাল রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

ঢাকা-১০, গাইবান্ধা-, বাগেরহাট-, বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনের উপনির্বাচন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় মেয়র ও কাউন্সিলর পদে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঢাকা-১০ সংসদীয় আসনের আওয়ামী লীগের উপনির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছেন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। এছাড়া বাগেরহাট-৪ আসনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আমিরুল আলম মিলন, গাইবান্ধা-৩ আসনে কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলছুম স্মৃতি, বগুড়া-১ আসনে প্রয়াত সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নানের স্ত্রী সাহাদারা মান্নান ও যশোর-৬ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। আর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে এম রেজাউল করিম চৌধুরীকে। বোর্ডের পরবর্তী বৈঠকে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।

মনোনয়ন বোর্ডের সভায় দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমি জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তারা বারবার আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। দেশের জনগণের সেবা করার সক্ষমতা পেয়েছি। জনগণ যে তাদের সেবা করার দায়িত্বটা আমাদের দিয়েছে, আমরা সেটাই পালন করতে চাচ্ছি। আমাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো মাঠ পর্যায়ের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। আমরা যদি সঠিকভাবে আমাদের উন্নয়নের কথাগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারি, তাহলে ভোটে কিন্তু আর অসুবিধা হওয়ার কথা না। জনগণের বিশ্বাস, আস্থা আমরা অর্জন করতে পেরেছি। দীর্ঘদিন একটানা সরকারে থেকেও জনগণের যে আস্থাটা ধরে রাখতে পেরেছি, এটাও একটা বড় অর্জন। দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়নের গতি ও ধারাটা অব্যাহত রাখতে হলে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে হবে। নৌকা মার্কা ছাড়া এ উন্নয়ন হয় না। নৌকা মার্কা স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, আর এ নৌকার মাধ্যমেই সব অর্জন। কাজেই আপনারা জনগণের কাছে যাবেন। জনগণের কাছে গিয়ে ভোটের কথা বলবেন। এখনো যেহেতু চট্টগ্রামের শিডিউল ঘোষণা হয়নি, কাজেই আমি নিশ্চয় ভোট চাইতে পারি। সেই অধিকার আমার রয়েছে। আমি শুধু এটুকু বলব, আপনারা যদি আমাদের উন্নয়নের কথা জনগণের কাছে পৌঁছান নিশ্চয় তারা ভোট দেবে। বিশেষ করে আমাদের মা-বোনেরা। কারণ নারী ক্ষমতায়নে ও উন্নয়নে আমরা অনেক এগিয়ে গিয়েছি। আমরা সব শ্রেণীর উন্নয়ন করে যাচ্ছি। কোনো শ্রেণীকে বাদ দিচ্ছি না।

তিনি বলেন, যে স্বপ্ন নিয়ে আমার বাবা দেশটা স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন, তা পূরণ করতে হবে। এটাই হলো আমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। সেখানেই আপনাদের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। আপনারা নিঃস্বার্থভাবে দেশের সেবা করবেন। জীবনের সব চাওয়া-পাওয়ার ঊর্ধ্বে উঠে যদি কাজ করতে পারেন, তাহলে মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা যাবে। এটাই একজন রাজনীতিবিদের বড় পাওয়া। তাই প্রতিটা নেতাকর্মীকে জাতির আদর্শে কাজ করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নের তো কোনো সীমাই নেই। এত বেশি উন্নয়ন আমরা করেছি। আপনাদের মনে আছে, আমাদের সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী আন্দোলন করেছিলেন কর্ণফুলী নদী দিয়ে টানেল করার। আজকে সেই টানেল আমরা নির্মাণ করেছি। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য তিনি বেঁচে নেই, দেখে যেতে পারলেন না। ঠিক সেভাবে সারা বাংলাদেশের সব বিভাগেই উন্নয়ন করে যাচ্ছি। এমনকি বগুড়ায়ও, যে বগুড়ায় কেউ আমাদের ভোটও দেয়নি। সেই বগুড়ারও যত উন্নয়ন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই হয়েছে। বগুড়ার লোক থাকতেও অত উন্নয়ন হয়নি। যতটুকু আমরা করতে পেরেছি। ঠিক সেভাবে যশোর, বাগেরহাট ও গাইবান্ধায় হয়েছে। একসময় গাইবান্ধায় দুর্ভিক্ষ লেগেই থাকত, আজকে সেই গাইবান্ধার অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। আর ঢাকার উন্নয়নের জন্য আমরা ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের প্রতিটা উন্নয়নের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, গ্রামের মানুষ যেন সমান সুবিধাগুলো পায়। সেখানে যেন উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছায়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন