সময়ের ভাবনা

সোলেইমানি হত্যা-পরবর্তী যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সম্পর্ক

ড. মইনুল ইসলাম

ইরানের কুদস ফোর্সের কমান্ডার মেজর জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সরাসরি নির্দেশে ড্রোন হামলা চালিয়ে হত্যা করে মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি যুদ্ধ শুরুর ব্যবস্থা প্রায় সুসম্পন্ন করেছেন। ইরাকের রাজধানী বাগদাদের বিমানবন্দরে নেমে নগরীর উদ্দেশে রওনা হওয়া মাত্রই গাড়িবহরে ড্রোন হামলার মাধ্যমে ইরানের জীবন্ত কিংবদন্তি জেনারেলকে হত্যা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, একই হামলায় নিহত হয়েছেন আরো নয়জন। ডোনাল্ড ট্রাম্প ফ্লোরিডায় অবস্থিত তার অবকাশ কেন্দ্র থেকে সরাসরি আদেশ দিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে দাবি করলেও ট্রাম্পের এই ভয়ংকর চাল তার একক বুদ্ধি বা চিন্তাপ্রসূত মনে করলে ভুল হবে। অতএব, মার্কিন এমনডি ফেক্টোযুদ্ধ ঘোষণার কঠোর প্রতিশোধ নেয়ার ঘোষণা দিলেও  ইরানকে খুবই সাবধানে পরবর্তী পদক্ষেপগুলো নিতে হবে। নয়তো ট্রাম্প ইসরায়েলের পাতা মরণফাঁদে পড়ে নিজেদেরই ধ্বংস ডেকে আনবে ইরান। মেজর জেনারেল সোলেইমানি এক দশক ধরে ইরাক, সিরিয়া ইয়েমেনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল সৌদি আরবের কৌশলগুলো যেভাবে একের পর এক নস্যাৎ করে দিয়েছেন, সে সমর কৌশলগুলোকে এরই মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী বিশ্বের সবচেয়েব্রিলিয়ান্ট ওয়ার ট্যাকটিকসহিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে ওয়াকিবহাল মহলে। পুরো মধ্যপ্রাচ্যে এক দশক ধরে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডসের প্রক্সি যুদ্ধগুলোয় জয়ের অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতায় নেতৃত্বদানকারী ইরানের এই সবচেয়ে মেধাবী সামরিক কমান্ডারকে হত্যা করে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে মার্কিনিদের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানোর যে ভয়ংকর উসকানিমূলক কূটচাল দিলেন, সেটা পুরোপুরি সফল হবে যদি ইরান সত্যি সত্যি হত্যাকাণ্ডের যথোপযুক্ত বদলা নেয়ার জন্য বিশ্বের কোথাও মার্কিন বড় কোনো সামরিক স্থাপনায় পাল্টা আঘাত হেনে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণার সুযোগ এবং অজুহাত দিয়ে দেয়। নিঃসন্দেহে মার্কিন সুপারপাওয়ার ইসরায়েলকে সরাসরি মোকাবেলায় ইরান এখনো সমর্থ নয়!

ইরান মধ্যপ্রাচ্যের মার্কিনবিরোধী জনগণ জেনারেল সোলেইমানিকে ভালোবাসা শ্রদ্ধাভরেহাজি কাসেমনামেই অভিহিত করত। ফিলিস্তিনের হামাস, লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের সৌদিবিরোধী হুথি বাহিনী, সিরিয়ার ইসলামিক স্টেট (আইএস) বাহিনীকে ধ্বংসকারী মিলিশিয়া বাহিনী, ইরাকের শিয়া মিলিশিয়া বাহিনীসবগুলোর পেছনে আসল মদদদাতা ছিল ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস। আর এর মূলশক্তি কুদস ফোর্সেসের কমান্ডার ছিলেন হাজি কাসেম। যুদ্ধ কৌশল নির্ধারণ যুদ্ধের ফ্রন্টলাইনগুলোয় সরাসরি নেতৃত্বদানকারী জেনারেলকে সাম্প্রতিক দুই দশকের ইরানের সবচেয়ে দুর্ধর্ষ সমরবিদ হিসেবে দেশে-বিদেশে সবাই সমীহ করত। ইরানের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারক আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ডান হাত ছিলেন তিনি, গুরুত্বের দিক থেকেও ইরানে তিনিই ছিলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শক্তিধর ব্যক্তিত্ব। তাকে ইরানের গতবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য আয়াতুল্লাহ খামেনি বারবার অনুরোধ জানানো সত্ত্বেও রাজি করাতে পারেননি, তিনি যুদ্ধের ময়দানে শাহাদত বরণেরই নাকি ইচ্ছা পোষণ করতেন। অতএব, ইরানের ইসলামী বিপ্লবের জন্য নিবেদিতপ্রাণ তীক্ষধী পরম সাহসী সমরবিদ যে গত এক দশকে মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষমতার ভারসাম্যকে অনেকখানি ইরানের পক্ষে নিয়ে যেতে পেরেছেন, সেটা মার্কিন-ইসরায়েল-সৌদি প্রতিপক্ষের কাছেও সমীহ জাগানো সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা সৌদি আরবের বিমান হামলায় জানমালের প্রভূত ক্ষতির শিকার হলেও সৌদি স্থাপনাগুলোয় তাদের সুপরিকল্পিত মিসাইল হামলাগুলো সৌদি শাসকদের সমর পরিকল্পনাকে নাস্তানাবুদ করে দিয়েছে। বিশেষত সৌদি আরামকোর তেলক্ষেত্রগুলোয় অজ্ঞাত সূত্র থেকে পরিচালিত সাম্প্রতিক মিসাইল হামলা যেভাবে ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করেছে, তাতে বিশ্বের তেল সরবরাহের -১০ শতাংশ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল কয়েক সপ্তাহ। এর মাধ্যমে সৌদি আরবকে হুঁশিয়ারি বার্তা দেয়া হলো যে, তাদের অন্যায় আগ্রাসন বন্ধ না করলে সৌদি আরবের সব তেলক্ষেত্রই ধ্বংস করার ক্ষমতা রয়েছে ইরান-সমর্থিত বাহিনীগুলোর। ঘোষিত দম্ভোক্তি সত্ত্বেও সিরিয়ার বাশার আসাদকে উত্খাত করতে সক্ষম হয়নি যুক্তরাষ্ট্র। ইরান, তুরস্ক রাশিয়ার সমর্থনে বাশার আসাদের সরকার টিকে রয়েছে। সর্বশেষ সিরিয়ায় আইএস বাহিনীকে নির্মূল করায় সাফল্যের পেছনে একদিকে কুদস ফোর্সেস সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনী, অন্যদিকে ইরাকি কুর্দিদের প্রতিরোধ বাহিনীর ভূমিকাই ছিল প্রধান নির্ধারক। অনেকে হয়তো খেয়ালই করেন না যে, মার্কিন-সৌদি-ইসরায়েলের সমর কৌশলেরই সন্তান ছিল সৌদি অর্থায়নে গঠিত সমরাস্ত্রে সজ্জিত এই আইএস জঙ্গি বাহিনী, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের গোপন এজেন্ডা মোতাবেক সংঘটিত তিন অপশক্তির প্রক্সি বাহিনী হিসেবে ইরাক সিরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে ঘাঁটি গেড়েছিল তারা। অথচ অচিন্তনীয় নিষ্ঠার সঙ্গে পরিচালিত ইসলামিক স্টেটের ঘাতকদের পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড সারা বিশ্বের দৃষ্টিতে ইসলামকে হিংস্র, রক্তলোলুপ দানবদের অন্ধ আক্রোশের বহিঃপ্রকাশের উৎস হিসেবে চিহ্নিত করে ফেলেছে। সারা বিশ্বে আজইসলামোফোবিয়াগেড়ে বসেছে, ফলে মুসলিমরাও চরম ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়েছে অন্য ধর্মাবলম্বী সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের দেশে দেশে। আইএসের পরাজয়ের ফলে সাময়িকভাবে হলেও মার্কিন-ইসরায়েল-সৌদি অক্ষের গোপন এজেন্ডা বাধাগ্রস্ত হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে শক্তির ভারসাম্য এখন ইরানের দিকে কিছুটা হেলে পড়েছে বলা চলে। ভারসাম্য আবার মার্কিনি-ইসরায়েলি-সৌদিদের পক্ষে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বাধানো এখন তিন দেশের প্রথম অগ্রাধিকার হয়ে পড়েছে। জেনারেল সোলেইমানিকে হত্যার মাধ্যমে ইসরায়েলের পরামর্শক্রমে আসন্ন যুদ্ধের দাবা খেলার প্রথম চালটি হয়তো চেলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ইস্যুর পাশাপাশি ২০২০ সালের নভেম্বরের মার্কিন নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় সুনিশ্চিত করার প্রয়োজনটিকেও বিবেচনায় নিতে হবে। সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষহাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসেপ্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব পাস হয়েছে। সিনেটে যেহেতু রিপাবলিকান পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে, তাই সেখানে অভিশংসন প্রস্তাব পাস হবে না; সেটাও আগেভাগেই বলে দেয়া যায়। এর মানে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সি অভিশংসনের ফলে কোনোভাবেই বিপদে পড়বে না। বরং অভিশংসন প্রস্তাব দেয়ার আগেই মার্কিন জনমত জরিপগুলো ইঙ্গিত দিয়েছিল অভিশংসন প্রস্তাব উত্থাপন করায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা বাড়তে শুরু করেছে। অভিশংসন প্রস্তাবটি এখন নিয়ম মোতাবেক হাউজ স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি সিনেটে পাঠানোর কথা, কিন্তু সেখানে ইস্যুতে কীভাবে কতখানি বিতর্ক চালাতে দেয়া হবে, তার সুরাহা হয়নি রিপাবলিকান পার্টির সিনেট-নেতার একগুঁয়েমির কারণে। এই ফাঁকে ডোনাল্ড ট্রাম্প বাজিমাত করেছেন ক্রিসমাস-নিউ ইয়ারের ছুটির মধ্যে জেনারেল সোলেইমানিকে হত্যা করে। কোনো সন্দেহ নেই ট্রাম্পের ধুরন্ধর চাল আমেরিকার হাইস্কুল-গ্র্যাজুয়েটরেডনেকহোয়াইট ভোটার, বর্ণবাদী গোষ্ঠী, ইভানজেলিক্যাল খ্রিস্টান গ্রুপ জায়নিস্ট ইহুদিবাদীদের কাছে তাকে আরো জনপ্রিয় করবে। সিনেটে যা- আলোচনা হোক, সেগুলোর আর কোনো গুরুত্ব থাকবে না। এর মানে ট্রাম্প নিজের যুদ্ধবাজ ভাবমূর্তি সামনে নিয়ে এসে পুরো প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণার ফোকাসটা মার্কিন বৈদেশিক শত্রুদের দিকে ঘুরিয়ে দিলেন, ডেমোক্রেটিক পার্টির সামনের দিনগুলোর প্রচার কৌশলকে একেবারেই ভোঁতা করে দিলেন। ডেমোক্রেটিক পার্টিকে এখন হয়তো আত্মরক্ষামূলক অবস্থানেই থাকতে হবে, ইরানকে মোকাবেলায় ব্যস্ত প্রেসিডেন্টের সমালোচনা পছন্দ করবে না মার্কিনরা। মনে হচ্ছে, মার্কিনদের উগ্র দেশপ্রেমের জোয়ারে ভর করে আগামী নভেম্বরে ট্রাম্প হয়তো তার পুনর্নির্বাচনটাই নিশ্চিত করে নিলেন!

ইরাকে এখনো প্রায় পাঁচ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে এবং ইরাকের পার্লামেন্টে ইরাক থেকে সব বিদেশী সেনা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রস্তাব পাস করা সত্ত্বেও অদূর ভবিষ্যতে দেশটির ওপর মার্কিন দখলদারি অবসানের কোনো সম্ভাবনা নেই। পার্লামেন্টের প্রস্তাব বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করলে ইরাকের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। আবার অন্য আরেকটি প্রতিক্রিয়ায় জানিয়ে দিয়েছেন ইরাকে আধুনিক যে মার্কিন সামরিক বিমানঘাঁটি যুদ্ধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে, তার খরচের অর্থ ফেরত না দিলে মার্কিন সৈন্যদের ইরাক ছেড়ে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। প্রকৃত প্রস্তাবে পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে মার্কিন সামরিক নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যেহেতু এসব সামরিক স্থাপনা কমান্ড-হেডকোয়ার্টার্স হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে, তাই অদূর ভবিষ্যতে ইরাক মার্কিন দখলেই থাকবে। মধ্যপ্রাচ্যের তেল সাম্রাজ্য কিছুতেই ছাড়বে না মার্কিনরা। পরিপ্রেক্ষিতে ইরানকে সর্বোচ্চ ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। জেনারেল সোলেইমানির শাহাদত বরণ ইরানি জাতিকে যেভাবে অভূতপূর্ব ভাবাবেগে উদ্বেলিত করেছে, তাকে জাতীয় ঐক্য সংহতি মজবুত করার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে হবে। ট্রাম্প মুখে যতই ইরানের সঙ্গে আলোচনার কপট প্রস্তাব দেন না কেন, ইরানকে ধ্বংস করাই এখন মার্কিন-ইসরায়েল-সৌদি অক্ষশক্তির সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত যুদ্ধ স্ট্র্যাটেজি। এরই মধ্যে ইরানের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অবরোধ ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, কিন্তু মার্কিনদের ইউরোপীয় মিত্ররা অবরোধ বাস্তবায়নে তাদের পাশে নেই। জেনারেল সোলেইমানির হত্যাকাণ্ডকেও সমর্থন করবে না বিশ্বের জনমত। ইরান যদি জেনারেল সোলেইমানি হত্যায় সংযত প্রতিক্রিয়া দেখায়, তাতে তাদের মর্যাদা বাড়বে বলেই আমার বিশ্বাস। সেক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে একতরফা আগ্রাসনের শিকার করার সুযোগ পাবেন না বলেই মনে করি। জেনারেল সোলেইমানি যে যুদ্ধ কৌশল অবলম্বন করে ইরানকে একের পর এক বিজয় এনে দিচ্ছিলেন, মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী খেলা নস্যাৎ করার সেটাই সঠিক পন্থা।

ইরাকের কয়েকটি মার্কিন ঘাঁটিতে গত কয়েক দিনে দুই ডজনের মতো ইরানি মিসাইল আঘাত করেছে, যেগুলোকে ইরান সোলেইমানি হত্যার বদলা নেয়ার শুরু বলে ঘোষণা করেছে। মিসাইল হামলাগুলোয় কোনো মার্কিন সেনা প্রাণ হারায়নি বলে দাবি করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, ক্ষয়ক্ষতিও নাকি সামান্যই। অন্যদিকে ইরান দাবি করেছে, ওই হামলাগুলোয় প্রায় ৮০ জন মার্কিন সেনা হতাহত হওয়ার পাশাপাশি অস্ত্রশস্ত্র যুদ্ধ সরঞ্জামের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যুদ্ধের প্রতিপক্ষগুলো এভাবেই আক্রমণের সাফল্য-ব্যর্থতা বাড়িয়ে-কমিয়ে বলে! এই অতিরঞ্জিত দাবি-পাল্টা দাবি সত্ত্বেও মনে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ইরান উভয় পক্ষই আপাতত আর আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ বাড়াতে আগ্রহী নয়। এখন নতুন ফন্দিফিকির খুঁজতে হবে মার্কিন-ইসরায়েল-সৌদি আঁতাতকে। ইরানও সুযোগে তাদের সমর কৌশল নিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করার সুযোগ পাবে। জেনারেল সোলেইমানি সরাসরি যুদ্ধ না বাধিয়ে প্রতিপক্ষকে প্রক্সি বাহিনীগুলোর নিরন্তর আক্রমণের মাধ্যমে নাস্তানাবুদ করার কৌশল অবলম্বন করে তার ঐতিহাসিক বিজয়গুলো অর্জন করতে সমর্থ হয়েছিলেন। আমার মতে, এটাই আগামী দিনের সর্বোত্তম কৌশল হবে ইরানের জন্য। মনে রাখতে হবে প্রতিপক্ষের সবচেয়ে ধুরন্ধর যুদ্ধ পরিকল্পনাকারী ইসরায়েল, ডোনাল্ড ট্রাম্প নন।

 

. মইনুল ইসলাম: একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ

অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন