ত্রিপুরার চিকিৎসকদের অনবদ্য সহায়তা

চৌধুরী শহীদ কাদের

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সীমান্তবর্তী ত্রিপুরার চিকিৎসাকর্মীদের ভূমিকা ছিল অনন্য। রাজ্য সরকার, সরকারি দল, বিরোধী দল, প্রশাসন এমনকি তৃণমূল মানুষও মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। পাশাপাশি আমরা লক্ষ করেছি যে, ত্রিপুরার চিকিৎসক, নার্স, কম্পাউন্ডার, স্বাস্থ্য সহকারীসহ সব চিকিৎসাকর্মী, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলো সেদিন সাধ্যের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে বাঙালির মুক্তিসংগ্রামে যোগ দিয়েছিলেন। অঞ্চলের চিকিৎসাকর্মীদের দায়িত্ববোধ, সেবা, সহমর্মিতা সহানুভূতি ছিল বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের অন্যতম সম্বল। তারা পরিণত হয়েছিলেন আমাদের দুঃসময়ের অন্যতম বন্ধুতে।

যুদ্ধ মানেই সংঘাত, রক্ত। একাত্তরে সুসজ্জিত পাকিস্তান সেনাবাহিনী যখন নির্বিচারে পূর্ব পাকিস্তানের ওপর আক্রমণ শুরু করল, প্রাণভয়ে লোকজন পালাচ্ছে তখন। শরণার্থীর প্রথম ধাক্কাটা এসে লাগল সীমান্তে। প্রতিদিনই হাজার হাজার লোক প্রবেশ করেছে পার্শ্ববর্তী ভারতে। ভারতের উত্তর-পূর্ব সীমান্তের ত্রিপুরা রাজ্যে ২৬ মার্চ থেকে শরণার্থী প্রবেশ শুরু হয়। নয় মাসে এখানে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ১৫ লাখ শরণার্থী, যা তত্কালীন ত্রিপুরার মোট জনসংখ্যার সমান।

ত্রিপুরার চিকিৎসাকর্মীরা মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় নিঃস্বার্থভাবে বিপুলসংখ্যক শরণার্থীকে সব ধরনের চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছেন। পালাতে গিয়ে অনেক শরণার্থী হয়েছেন বুলেটবিদ্ধ, অনেকেই নানাভাবে আহত, তাদের সর্বোচ্চ সেবা দিয়েছে ত্রিপুরা। তাই সেখানেই গড়ে উঠে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের ফিল্ড হাসপাতাল। বিপুলসংখ্যক আহত গুলিবিদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা সেখানে সহায়তা পেয়েছেন। ত্রিপুরার জিবি হাসপাতাল স্বাস্থ্যসেবা দিতে গিয়ে একাত্তরে পেয়েছে আন্তর্জাতিক পরিচিতি।

জিবি হাসপাতাল ভিএম হাসপাতালের পাশাপাশি জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলো, চিকিৎসকরা, নার্সরা একাত্তরে জড়িয়ে পড়েছিলেন অন্য রকম এক জনযুদ্ধে। অসীম মমতা দিয়ে সে চরম দুর্দিনে সেবার এক অকৃত্রিম বন্ধন গড়ে তুলেছিলেন চিকিৎসাকর্মীরা।

ত্রিপুরার স্বাস্থ্যসেবা মূলত গড়ে উঠেছিল সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায়, হাসপাতালগুলোকে কেন্দ্র করে। তখন পর্যন্ত সেখানে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা গড়ে ওঠেনি। সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার, নার্সসহ সব স্বাস্থ্যকর্মী তাদের সমস্ত সামর্থ্য নিয়ে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে। সরকারকে ডাক্তার নার্স ওষুধপত্র দিয়ে সহায়তা করেছে বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংগঠন। এর মধ্যে রেড  ক্রসের মতো আন্তর্জাতিক সংগঠন যেমন ছিল, তেমনি ছিল ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মতো জাতীয় প্রতিষ্ঠান কিংবা স্থানীয় রাজ্যভিত্তিক সংগঠন ত্রিপুরা পিপলস রিলিফ কমিটি।

স্বাস্থ্যসেবায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন স্থানীয় সিনিয়র চিকিৎসকরা। নিয়মিত ১২-১৬ ঘণ্টা করে এরা সেবা দিয়েছেন। যখন প্রয়োজন

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন