বাজার অস্থির হয় মূলত চাহিদা ও জোগানে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হলে। আবার কখনো আন্তর্জাতিক বাজারে কোনো পণ্যের দাম দ্রুত অস্বাভাবিক বেড়ে গেলেও তার প্রভাব পড়ে স্থানীয় বাজারে। কোনো কোনো সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগে শস্যের ক্ষতি হলেও তার চাপ পড়ে দ্রব্যের বাজারমূল্যে। কিন্তু বাংলাদেশের পণ্যবাজার অস্থির করছে ব্যবসায়ীদের (আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ী) আচরণ। কখনো নিজেদের মধ্যে সিন্ডিকেট করে, কখনো রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থার সুবিধা নিয়ে পণ্যমূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছেন তারা। যদিও বাজার নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রের সুনির্দিষ্ট আইন আছে। কোন পণ্য কতদিন মজুদ করা যাবে, সে বিধানও আছে। বাজার স্বাভাবিক করতে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাত্ক্ষণিক নানা সিদ্ধান্তও নেয়া হয়, যার বেশির ভাগ যায় বড় ব্যবসায়ীদের অনুকূলে।
উৎসব ঘিরে সারা বিশ্বেই নিত্যব্যবহার্য পণ্যমূল্য কম থাকে। রমজানে সব মুসলিমপ্রধান দেশই নিত্যপণ্যের দাম কমিয়ে রাখে। এর উল্টো আচরণ করে বাংলাদেশের বাজার। ওই সময়টাতেই পণ্যের দাম সবচেয়ে বেশি বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। আর একেক পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ হয় একেক অঞ্চল থেকে। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন সাধারণত কুষ্টিয়া, নওগাঁ, জয়পুরহাট ও দিনাজপুরের ১২-১৫ জন বড় চালকল মালিক। ভোজ্যতেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামভিত্তিক পাঁচ-সাতটি পরিশোধন কারখানা। একই এলাকার ৮-১০টি পরিশোধন কারখানা নিয়ন্ত্রণ করে চিনির বাজার। আর মসলার বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রধান ভূমিকা রাখেন চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা। ঢাকার মৌলভীবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীদের হাতেও থাকে এ বাজারের নিয়ন্ত্রণ। এ দুই বাজারের ২০-২৫ জন আমদানিকারক মূলত মসলার বাজারে কর্তৃত্ব করেন।
যদিও বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রতিযোগিতা আইন রয়েছে দেশে। এ আইনের তৃতীয় অধ্যায়ে বলা আছে, পণ্য বা সেবার ক্রয়-বিক্রয় মূল্য অস্বাভাবিকভাবে নির্ধারণ করলে; উৎপাদন, সরবরাহ, বাজার সীমিত করলে তা প্রতিযোগিতার পরিপন্থী বলে গণ্য হবে।
এছাড়া খাদ্যশস্য ও খাদ্যসামগ্রী মজুদের পরিমাণ ও মেয়াদ নির্ধারণ করে ২০১১ সালের মে মাসে আদেশ জারি করে খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়। এতে চাল, গম ও গমজাত দ্রব্য ছাড়াও ভোজ্যতেল (সয়াবিন ও পামঅয়েল), চিনি ও ডালকে খাদ্যসামগ্রী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ব্যবসায়ী পর্যায়ে পাইকারি বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ধান ও চাল মজুদের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩০০ টন ও মেয়াদ ৩০ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। খুচরা বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ১৫ দিন মজুদ করা যাবে। আর মজুদের পরিমাণ