বিলুপ্ত চুকুর চাষের সম্ভাবনা

বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে ভিএম- (চুকুর) নামে উন্নত জাত ২০১০ সালে অবমুক্ত হয়। আগেও দেশে চুকুর নামে ফসলটি অনেকের বাড়িতেই ছিল। ১৯৮৮ সালের বন্যার পর অনেক স্থান থেকে ফসলটি বিলীন হয়ে যায়। খাদ্য হিসেবে চুকুর চাষে অনেকেই উৎসাহ প্রকাশ করেন। আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যেই উন্নত জাতের ভিএম- চুকুর চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করা হবে এবং ব্যবসাভিত্তিক চাষ সম্প্রসারিত করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধনে প্রচেষ্টা চালানো হবে। কেননা চুকুরের পাতা ফলে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ক্যারোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন অন্যান্য খাদ্য উপাদান রয়েছে। চুকুরের বীজ থেকে ২০ শতাংশ খাবার তেল উৎপাদন হয়

চুকুর চাষে জমি তৈরি

যেকোনো উঁচু জমি বসতভিটায় চুকুর চাষ করা যায়। জমির প্রকারভেদে দুই-তিনটি চাষ মই দিয়ে অথবা কোদাল দিয়ে কুপিয়ে জমি প্রস্তুত করতে হবে। শতকপ্রতি সারের পরিমাণ হলো ইউরিয়া ২৫০ কেজি, টিএসপি ১০০ কেজি, এমওপি ১৫০ কেজি। গোবর যত বেশি তত ভালো। সার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে জমি প্রস্তুত করতে হবে। বীজ বপনের এক মাস পর শতকপ্রতি ২৫০ গ্রাম ইউরিয়া পার্শ্ব প্রয়োগ করতে হবে। ফাল্গুন থেকে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত বীজ বপন করা যায়। প্রতি শতক জমিতে ৫০ গ্রাম বীজ (দুই-আড়াই ফুট) দূরত্বে সারি করে বপন করতে হবে। চুকুর পানি সহ্য করতে পারে না। কাজেই বৃষ্টির পানি যাতে না জমে যায়, সেজন্য জমিতে পর্যাপ্ত নালা রাখতে হবে। নাবীতে বীজ বপন করলেও বীজ উৎপাদন করা যাবে। আগাম বীজ বপনে পাতা, বৃতি খাওয়া যাবে বীজ উৎপাদন করা যাবে। তবে রোগ পোকা দেখা দিলে দমনের ব্যবস্থা করতে হবে।

ফলন


১৩০-১৪০ দিনের মধ্যেই ফুল আসা শুরু হবে। কচি অবস্থায় টক হিসেবে কচি পাতা খাওয়া যাবে। পাতা মসৃণ স্বাদেও সুস্বাদু। ফলের উপযোগী বৃতি দিয়ে জ্যাম, জেলি, জুস, শরবত তৈরি করা যায়। অনেক দেশে বৃতি দিয়ে কনফেকশনারির খাবারসামগ্রী তৈরি করা হয়। প্রতি গাছে ৫০-৬০টি ফল ধরে। শতকপ্রতি পাঁচ-সাত কেজি ফলন হতে পারে। ফল পাকলে বীজ কেটে দুই-তিনদিন রোদে শুকালে বীজ ফেটে যায়। লাঠি দিয়ে হালকাভাবে পিটিয়ে সহজেই বীজ সংগ্রহ করা যায়। পরবর্তী মৌসুমে বপনের জন্য শুকনো বীজ প্লাস্টিক অথবা টিনের পাত্রে ভালোভাবে রেখে বীজ সংরক্ষণ করা যায়। বীজ সংগ্রহের পর শুকনো গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

চুকুরের নানা খাবার

চুকুরের সবুজ পাতার টক উত্তম খাবার। পানিতে সিদ্ধ করে লবণ দিয়েই সবুজ চুকুর পাতা খাওয়া যায়। সবুজ চুকুর পাতা ধুয়ে সিদ্ধ করে লবণ, ঝাল, রসুন দিয়ে বেটে বাটা চুকুর পাতা ভাত দিয়ে খাওয়া যায়। চুকুর পাতার পাপড়ি ধুয়ে সিদ্ধ করে চিনি, তেজপাতা, গরম মসলা দিয়ে জ্বাল দিলেই লাল রঙের জেলি তৈরি করা যায়। চুকুর গোটার জেলি দেখতে সুন্দর সুস্বাদু; চুকুর ব্যাপকভাবে চাষ করে জেলি উৎপাদন কর্মসূচি গ্রহণ করা যেতে পারে। ক্ষুদ্র শিল্প-কারখানা গড়ে তোলা

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন