পণ্য পরিবহনে ফেরি পারাপার থেকে শুরু করে ওয়েব্রিজ স্টেশন—সবখানেই অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়। জেলায় জেলায় নির্দিষ্ট হারে চাঁদাও পরিশোধ করতে হয়। বিশ্বব্যাংকের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, পণ্য পরিবহন সহজ করতে ব্যয় হওয়া বাড়তি এ অর্থের পরিমাণ ট্রিপপ্রতি (যাওয়া-আসা) ৩ হাজার ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার ২০০ টাকা। সেই সঙ্গে আছে যানজট। এসব কারণে ব্যয়বহুল হচ্ছে সড়কে পণ্য পরিবহন। আর যে সড়কপথে এ পণ্য পরিবহন হচ্ছে, তার নির্মাণ ব্যয়ও বিশ্বে অন্যতম সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশের লজিস্টিক সেবার একটি সামগ্রিক মূল্যায়ন করেছে বিশ্বব্যাংক। বাছাইকৃত বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশে সড়ক নির্মাণ ও পণ্য পরিবহনের তুলনামূলক ব্যয় বিশ্লেষণ করে “মুভিং ফরওয়ার্ড: কানেক্টিভিটি অ্যান্ড লজিস্টিকস টু সাসটেইন বাংলাদেশ’স সাকসেস” শীর্ষক একটি প্রতিবেদন গতকাল প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। ওই প্রতিবেদনেই বাংলাদেশের ব্যয়বহুল সড়ক ও সড়কপথে পণ্য পরিবহনে উচ্চব্যয়ের বিষয়টি উঠে এসেছে।
বাছাইকৃত কয়েকটি দেশের শহরে চার লেন সড়কের নির্মাণ ব্যয় বিশ্লেষণ করে বিশ্বব্যাংক দেখিয়েছে, বাংলাদেশের প্রতি কিলোমিটার চার লেন সড়ক নির্মাণে ব্যয় হয় ৬১ লাখ ডলারের বেশি। একই ধরনের সড়ক নির্মাণে চীনে ব্যয় হয় কিলোমিটারপ্রতি ৪০ লাখ ডলারের কাছাকাছি ও রাশিয়ায় ৩৭ লাখ ডলারের নিচে। এছাড়া পাকিস্তানে প্রতি কিলোমিটার চার লেন সড়ক নির্মাণে ব্যয় পড়ে ৩০ লাখ, ইন্দোনেশিয়ায় ২০ লাখ ও ফিলিপাইনে ১১ লাখ ডলারের মতো। আর ভারত ও তুরস্কে চার লেন সড়ক নির্মাণে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় পড়ে ১৫ থেকে ১৭ লাখ ডলার। এ হিসাবে বাছাই করা দেশগুলোর মধ্যে ব্যয়বহুল সড়ক বাংলাদেশে।
ব্যয়বহুল এ সড়কে পণ্য পরিবহনেও উচ্চব্যয় করতে হয় বলে বিশ্বব্যাংকের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে। সংস্থাটি বলছে, নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পণ্য পৌঁছাতে ফেরি পারাপার, বর্ডার পোস্ট ও ওয়েব্রিজ স্টেশনে অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ করতে হয়। চাঁদা পরিশোধ করতে হয় পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও পুলিশকেও। এ নিয়ে মধ্যস্বত্বভোগী এজেন্সিও গড়ে উঠেছে।