ভারত মাতালেন জহির

ক্রীড়া প্রতিবেদক

এসএ গেমসে একসময়কার ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে রাজত্ব করা বাংলাদেশ এখন ঐতিহ্যের কঙ্কালে পরিণত হয়েছে। ঘোর আঁধারে খানিক আশার সঞ্চার করছেন জহির রায়হান।

৪০০ মিটারে দৌড়ানো এ স্প্রিন্টার ভারতের ট্র্যাকে ঝড় তুলে বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস সংশ্লিষ্টদের আরো আশাবাদী করেছেন। ভারতের অন্ধ্র প্রদেশে গতকাল দেশটির জাতীয় জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে ৪৭.৩৪ সেকেন্ড সময় নিয়ে ৪০০ মিটারে স্বর্ণপদক পান ১৮ বছর বয়সী এ স্প্রিন্টার। বিভিন্ন প্রাদেশিক দল নিয়ে আয়োজিত আসরের ৪০০ মিটারে দিল্লির রশিদ ৪৭.৭৬ সেকেন্ড সময় নিয়ে রুপা পেয়েছেন। ৪৮.২৩ সেকেন্ডে ব্রোঞ্জ পেয়েছেন একই প্রদেশের বিক্রান্ত পানচাল।

ভারতীয় অ্যাথলেটিকস সংস্থার আমন্ত্রণে পাঁচ অ্যাথলিটকে এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য পাঠিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন। জহির ছাড়াও ২০০ মিটার স্প্রিন্টে ইসমাইল খান, ৮০০ মিটারে রকিবুর ইসলাম, হাইজাম্পে মাহফুজুর রহমান ও নারীদের হাইজাম্পে উম্মে হাফসা রুমকি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছেন।

জহিরকে নিয়ে আমি আগে থেকেই আশাবাদী ছিলাম। ধারাবাহিকভাবে উন্নতি করে সে ক্রমেই প্রত্যাশা বাড়াচ্ছে। সবকিছু পরিকল্পিতভাবে চললে এ স্প্রিন্টার হয়তো এসএ গেমসেও ভালো করবে’— গতকাল বণিক বার্তাকে বলেন জহিরের কোচ আবদুল্লাহেল কাফি। গত জুলাইয়ে নাইরোবি বিশ্ব যুব চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনাল খেলেন জহির। পরবর্তী সময়ে জাতীয় সামার অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতায় নিজ ইভেন্টে রেকর্ড গড়েন। হাতঘড়িতে ৪৬.৮৬ সেকেন্ড সময় নিয়ে এ রেকর্ড গড়েন বিকেএসপির সাবেক এ ছাত্র।

জহিরকে ঘিরে প্রত্যাশার কথা জানিয়ে কাফি বলেছেন, ‘২০১৬ সালে সর্বশেষ এসএ গেমসে ৪৬.২৩ সেকেন্ড সময় নিয়ে স্বর্ণজয় করেন ভারতের আরোকিয়া রাজিব। আমার লক্ষ্য পরবর্তী এসএ গেমসের আগে জহিরের টাইমিং ৪৬.২০-এর মধ্যে নামিয়ে আনা। তা করতে পারলে স্বর্ণপদকের জন্যই লড়বে সে।

২০০৬ সালে কলম্বো এসএ গেমসে অ্যাথলেটিকস থেকে সর্বশেষ স্বর্ণপদক পায় বাংলাদেশ। ১১০ মিটার হার্ডলসে মাহফিজুর রহমান মিঠুর ওই সাফল্যের পর ১৩ বছর ধরে স্বর্ণপদকশূন্য বাংলাদেশ। মাঝে অবশ্য সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন সুমিতা রানী। ২০০৬ ও ২০১০ সালে রুপার পদকেই সান্ত্বনা খুঁজতে হয়েছে এ হার্ডলারকে। এবার জহির কি পারবেন বন্ধ্যত্ব ঘোচাতে? প্রিয় ছাত্রকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী কোচ কাফি বলেন, ‘জহির জন্মগত প্রতিভা। তার স্টার্টিং ও ফিনিশিং বেশ ভালো। ক্রমাগত নিজেকে উঁচুতে নিয়ে যাওয়ার প্রচণ্ড ইচ্ছেও আছে তার মাঝে। সাবেক এ স্প্রিন্টার যোগ করেন, ‘সে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় খেলছে, যা তাকে আরো পরিণত করে তুলছে। এসএ গেমসে নিজের সেরাটা দিতে পারলে ভালো কিছু হবে বলেই আমি আশা করছি।

ভারতের জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে খেলা প্রসঙ্গে এ কোচ বলেন, ‘এটা ভালো উদ্যোগ। কারণ ভারতের জুনিয়র প্রতিযোগিতায় প্রায় ৩ হাজার অ্যাথলিট অংশগ্রহণ করেন। আজ যারা খেলেছেন, তাদের মধ্য থেকেই বেরিয়ে আসবে আগামীর তারকা। এটা বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আসর, যা জহিরকে মানসিকভাবে আরো শক্ত করে তুলবে।

বিকেএসপি ছেড়ে গেলেও এখনো কাফির তত্ত্বাবধানেই আছেন জহির। প্রিয় শিষ্যকে নিয়ে আক্ষেপও ঝরল গুরুর কণ্ঠে, ‘উন্নত প্রশিক্ষণ ও অ্যাথলিটদের আদর্শ পরিবেশ পেলে সে আরো উঁচুমানের স্প্রিন্টার হতো। দুর্ভাগ্য, এ দেশের অ্যাথলিটরা প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা পায় না। নইলে চিত্রটা এমন রুগ্ণ হতো না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন