অস্থিরতায় প্রবাসী শ্রমবাজার

শ্রমিক সুরক্ষায় কূটনৈতিক উদ্যোগ নিক কর্তৃপক্ষ

বেড়ে গেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে শ্রমিক ফেরার সংখ্যা। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সংকটসহ নানা কারণে এখন অস্থির শ্রমবাজার। এছাড়া অন্য শ্রমবাজারগুলোও এরই মধ্যে নিজেদের বেকারত্ব ঘোচানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। এতে বেকার হয়ে পড়ছেন ওইসব দেশে থাকা অসংখ্য বাংলাদেশী শ্রমিক। কাজের সুযোগ না থাকলেও দালালদের খপ্পরে পড়ে সেসব দেশে যাচ্ছেন শ্রমিকরা। অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শ্রমবাজার থেকে শ্রমিকদের ফেরত আসার যে ঢল নেমেছে, তা এখনই রুখতে হবে। না হলে ভবিষ্যৎ জনশক্তি রফতানি বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়বে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতিতেও। গতকাল বণিক বার্তায় প্রকাশিত সংশ্লিষ্ট এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রবাসী শ্রমবাজারের অস্থিরতায় আউটপাস নিয়ে নয় মাসে ৩৬ হাজার বাংলাদেশী ফেরত এসেছে। এদের মধ্যে সৌদি আরব থেকে ফেরত আসার সংখ্যা বেশি। সৌদি আরবে প্রায় ১৫ লাখ শ্রমিক কাজ করেন। ২০১৭ সালের শেষের দিকে দেশের নাগরিকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে ১২টি খাত দেশীয়করণের ঘোষণা দিয়েছে সৌদি সরকার। এতে সৌদি আরব ছাড়তে শুরু করেন শ্রমিকরা। এর মধ্যে বাংলাদেশী শ্রমিকের সংখ্যাই বেশি। যারা স্বেচ্ছায় সৌদি ছাড়ছে না, তাদের জোর করে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। আকামা থাকা সত্ত্বেও দেশটি থেকে চলতি বছরের নয় মাসে ১৬ হাজারের বেশি শ্রমিক ফেরত এসেছেন। শ্রমবাজারগুলোর পরিস্থিতির পরও সেসব দেশে লোক পাঠাচ্ছে দালাল বা প্রতারক চক্র। দালালদের হাতে প্রতারিত হয়ে কোনো কোনো শ্রমিক এক মাসের মাথায় দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন। অনেকেই জেল খেটে জরিমানা দিয়ে কোনো রকমে পার পেয়েছেন। বিভিন্ন কারণে শ্রমিকরা দেশে ফেরত এলেও সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখার নজির চোখে পড়েনি, যা হতাশাজনক। বৈধ কাগজ থাকার পরও অনেক সময় পাঠিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। সরকারকে দেখতে হবে, আসলেই ঠিক প্রক্রিয়া মেনে শ্রমিকদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে কিনা। সরকারি পর্যায়ে শ্রমিকদের সুরক্ষাবলয়ে নিতে চাপ দিতে হবে।

প্রশ্ন হলো, কেন ক্রমেই কমে আসছে জনশক্তি রফতানি, আবার কেনইবা ফেরত আসছেন প্রবাসী শ্রমিকরা। বিষয়টি দায়িত্বশীল মহলকে খতিয়ে দেখা দরকার। একসময় উপসাগরীয় ছয়টি দেশ জনশক্তি রফতানির প্রধান ভরসাস্থল ছিল। এখন নানা দ্বন্দ্ব-সংঘাতে ওইসব দেশে শ্রমক্ষেত্রগুলো কিছুটা হলেও সংকুচিত হয়ে আসছে। কিন্তু সেজন্য আমাদের বসে থাকলে চলবে না। যেসব সংস্থা জনশক্তি রফতানিতে নিয়োজিত, তাদের নতুন নতুন শ্রমক্ষেত্রের অনুসন্ধান করা দরকার। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া দরকার; তা না হলে আমাদের বৃহৎ আয়ের উৎস বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনে ধস নামলে অর্থনৈতিক গতিধারা বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে।

বছর ধরেই বৈদেশিক শ্রমবাজারগুলোয় অস্থিরতা লক্ষ করা যাচ্ছে। এর মধ্যে সৌদি আরব, মালয়েশিয়া লিবিয়ার বাজার বেশি আলোচনায় রয়েছে। মালয়েশিয়ায় কয়েক দফা শ্রমিক পাঠানো বন্ধের পর অচলাবস্থা এখনো পুরোপুরি কাটেনি। সৌদি আরবে নারী শ্রমিক পাঠানোর পর তা নিয়ে ভয়াবহ কিছু খবর আমাদের আবার ভাবিয়ে তুলেছে। অনেকে এরই মধ্যে দেশে ফিরে করুণ অবস্থার কথা জানিয়েছেন। এখন সেখান থেকে পুরুষ শ্রমিকরাও ফিরতে শুরু করেছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়া থেকেও অনেকে ফিরে এসেছেন। বিষয়গুলো অবহেলার কোনো সুযোগ নেই। এসব দেশে বহু বাংলাদেশী শ্রমিক কর্মরত। তাদের এভাবে ফিরে আসা অব্যাহত থাকলে একসময় দেশীয় শ্রমবাজারে চাপ আরো বেড়ে যাবে। বিষয়ে দূতাবাস মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগের পাশাপাশি কূটনৈতিক তত্পরতা বাড়ানোর বিকল্প নেই।

বিদেশে শ্রমবাজার নিয়ে আমাদের দূতাবাসগুলোর বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে বিষয়টি উঠে এসেছে। এছাড়া দেশে নানা অনিয়ম-

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন