গণহত্যার সমর্থনকারী পুরস্কৃত হলেন

পিটার ম্যাস। অনুবাদ: মাহমুদ আলম সৈকত

সারায়েভো থেকে স্টকহোমের দূরত্ব প্রায় দেড় হাজার মাইল আর বসনিয়ায় যুদ্ধটাও হয়েছিল ১৯৯৫ সালে। সুতরাং সুইডিশরা যে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বেছে নিয়েছে এবং দুই দশক আগে বলকান অঞ্চলের ঠিক কেন্দ্রবিন্দুতে ঘটে যাওয়া অন্যায্য-কদর্য যুদ্ধ, দুইয়ে সময়ের ব্যবধান এবং স্থানিক দূরত্বের ব্যাপারটি বিদ্যমান। কিন্তু ২০১৯ সালের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য পিটার হান্ডকেকে বেছে নেয়ার পেছনে এটি কোনো অজুহাত হিসেবে খাটে না, যিনি বসনিয়ায় মুসলমানদের ওপর সার্বিয়ানদের চালানো গণহত্যাটি অস্বীকার করেন, যে গণহত্যাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত নথিভুক্ত।

আমরা এমন একটি বিভ্রান্তিমূলক সময়ে বেঁচে আছি, যখন শার্লটসভিলের মিছিলে হামলাকারী নয়া নািসদের মধ্যেখুব ভালো লোকদেখতে পান মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং আমাদের এমন কিছু টেলিভিশন চ্যানেল রয়েছে, যা বর্ণবাদ ষড়যন্ত্রতত্ত্বগুলো প্রচারে ব্যস্ত। আমাদের বিশ্বকে এমনই প্রতারণাপূর্ণ উপায়ে বর্ণনা করা হচ্ছে এবং এমন বিকৃত বিবৃতি অনুসারেই ইতিহাস রচনা করা হচ্ছে। আমাদের জন্য সর্বশেষ যে জিনিসটি প্রয়োজন এবং মোদ্দাকথা আমি যা প্রত্যাশা করছিলাম তা হলো, আমাদের যুগের প্রধান বুদ্ধিবৃত্তিক অসুস্থতাগুলোর ইতিবৃত্ত প্রকাশকারী লেখকের নোবেল পুরস্কার পাওয়ার মতো একটি বৌদ্ধিক সম্মান এবং আমাদের মনে রাখতে হবে, এবারের নোবেল বিজেতা এমন সময়ে নির্বাচিত হলেন, যখন হিংস্র শেতাঙ্গ (বা সাদা) আধিপত্যবাদীরা নব্বইয়ের দশকে ঘটানো সার্বিয়ানদের বীরত্বের সব সূচক একাট্টা করছে এবং গোটা বিশ্বকে সেই আবহেই দেখতে চাইছেব্যাপারটি আশ্চর্যজনক বটে যে নোবেল কমিটি অস্ট্রিয়ান লেখককে সম্মান জানাতে ঠিক মুহূর্তটিই বেছে নিল, যিনি কিনা যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় এবং প্রকারান্তরে তাদেরই ছদ্মবেশে সক্রিয়।

তাদের ভাবনায় কী চলছে?

বিষয়টি ধরে এগোতে হলে কোত্থেকে শুরু করতে হবে, সেটা আমি সত্যিই জানি না। তবেআমি যা বলছি নাসেটির পরিষ্কার ফয়সালা দিয়েই শুরু করা যাক। আমি বলছি না যে পিটার হান্ডকের সাহিত্যকর্ম পড়া আমাদের উচিত নয়। রিচার্ড ভাগনারকে শোনা উচিত কিনা এমন আদ্যিকালের প্রশ্নের নয়া সংস্করণ অবতারণাও আমার উদ্দেশ্য নয়। ভাগনার শুনতে শুনতে আগে বাড়ুন। হান্ডকে পড়ুন, আগে বাড়ুন। আমার বক্তব্য হলো তাকে পড়তে পারা এক বিষয়, তাকে পুরস্কার দেয়া একেবারে ভিন্ন বিষয়, যা কেবল তার উপন্যাস নাটক দিয়েই বিধৃত হওয়ার কথা নয়, সেসব খুবই অনবদ্য অরাজনৈতিক, কিন্তু তা তো আর তার ব্যক্তিগত অবস্থানকে বৈধতা দেয়া নয়!

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন