রাজধানীর কাফরুল এলাকায় একটি বাসা থেকে একই পরিবারের তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা হলেন তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী সরকার মোহাম্মদ বায়েজিদ, তার স্ত্রী অঞ্জনা আক্তার ও ছেলে মোহাম্মদ ফারহান। গতকাল বেলা ৩টার দিকে কাফরুলের ব্লক-ডি, রোড-৫-এর ১০/১ নম্বর বাড়ির তৃতীয় তলা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ বলছে, স্ত্রী ও সন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যার পর বায়েজিদ নিজে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। ঋণগ্রস্ততার কারণে হতাশা থেকে এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন তিনি।
কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিমুজ্জামান জানান, স্বজনরা ফোন দিয়ে তাদের না পেয়ে ওই বাসায় যায়। সেখানে গিয়ে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ পেয়ে তারা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে ওই বাসার তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে। বায়েজিদকে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় পাওয়া যায়। অন্য দুজনের মরদেহ বিছানায় পড়ে ছিল। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ তিনটি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর বিষয়টি স্পষ্ট বলা যাবে।
প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বায়েজিদ ও অঞ্জনার একমাত্র সন্তান ফারহান মিরপুর কমার্স কলেজে একাদশ শ্রেণীতে পড়ত। বায়েজিদের একটি নিটিং গার্মেন্টস কারখানা ছিল। তবে ব্যবসায় লোকসান হওয়ায় কারখানা বন্ধ করে দেন তিনি। ব্যবসায়িক প্রয়োজনে বিভিন্ন ব্যাংক ও ব্যক্তির কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন এ ব্যবসায়ী। এসব ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় হতাশায় ভুগছিলেন তিনি।
পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোস্তাক আহমেদ বলেন, বাসায় বিরিয়ানির প্যাকেট পাওয়া গেছে। আমরা ধারণা করছি, বুধবার রাতের কোনো এক সময়ে স্ত্রী ও সন্তানকে বিষমিশ্রিত খাবার খাওয়ান বায়েজিদ। তাদের মৃত্যুর পর তিনিও আত্মহত্যা করেন। ওই বাসায় একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। চিরকুটে তিনি বিভিন্ন হতাশার কথা লিখেছেন। এছাড়া বাসার দেয়ালে লিখে রাখা হয়েছে, আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।