আমার বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, খুলনা

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা ডা. শেখ বাহারুল আলম বলেছেন, ‘সম্পূর্ণ অগঠনতান্ত্রিকভাবে আমার বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমার ফেসবুক পোস্টে সরকার বা দলীয় প্রধানের নাম আমি উল্লেখ করিনি। আমি কেবল জন দাবির কথাগুলো বলার চেষ্টা করছি।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে  খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাময়িক বহিষ্কৃত কার্যনির্বাহী সদস্য ডা. শেখ বাহারুল আলম সাংবাদিকদের নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্তকালে এ কথা বলেন।

ডা. বাহারুল আলম বলেন, শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনতে হলে অবশ্যই অভিযুক্ত সদস্য বা নেতাকে নোটিশ দিতে হয়। কী বক্তব্যে গঠনতন্ত্রের কোন ধারা লঙ্ঘন করা হয়েছে তা তাকে জানাতে হয়। তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হয়। প্রয়োজন হলে তার বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করতে হয়। এর কোনটাই সভাপতি করেননি। নির্ধারিত কোন সভা ছিল না। ওইদিন যে সভায় সিদ্ধান্ত হয় সে সভা পূর্ব নির্ধারিত কোনো সভাও ছিল না। সভায় তার বিষয়টি নিয়ে কোনো এজেন্ডাও ছিল না। অন্য একটি বিষয়ে সভা চলছিল। সেখানে থেকে নেতা-কর্মীদের ডেকে এনে অগঠনতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পুরোটাই ওনার (সভাপতির) একতরফা, এক ধরনের স্বৈরাচারী প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়েই তিনি এ কাজ করেছেন। 

পাল্টা অভিযোগ করে ডা. বাহারুল আলম বলেন, ‘অভিযোগ আনতে হলে ওনার (সভাপতি) বিরুদ্ধেই অভিযোগ আনতে হয়। কারণ উনি (সভাপতি) দলের গঠনতন্ত্র নিয়ম নীতি কিছুই মানেন না।’

দলের সদস্য তার দেশের স্বার্থ, তার দেশের বিষয় নিয়ে পররাষ্ট্র বা দেশের ভূমিকা নিয়ে ‘কিছু কথা’ বলতেই পারেন উল্লেখ করে বাহারুল আলম বলেন, ‘ভারতের বিষয় নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন কথা বলার চেষ্টা করেছি। আমাদেরও কিছু স্বার্থ আছে, আমাদের জনগণের কিছু দাবি-দাওয়াও আছে। যা উপেক্ষিত হওয়া ঠিক না। এ বিষয় নিয়ে আমার ফেসবুক পোস্টে তিনি কোথায় আওয়ামী লীগের শৃঙ্খলা ভঙ্গ পেলেন? আমার কোনো মতামতও তিনি নেননি। আমি কোনো চিঠিও পাইনি। তবে শুনেছি। বিষয়টি সত্য নয়। ফলে মোকাবেলা করার কিছু নেই। চিঠিও পাইনি এখনো। চিঠি পেলে প্রতিটি লাইন ধরে ধরে জবাব দেয়া হবে।

এদিকে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জামাল বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতা ডা. বাহারুল আলম তার ফেসবুক পোস্টে যা লিখেছেন, সেখানে সরকার এবং দলের প্রধান বিরোধী বক্তব্য রয়েছে। আমাদের জানামতে দলীয় প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনা যা করেছেন তার সবই দেশের স্বার্থে, বাংলাদেশে স্বার্থেই করেছেন। এখানে দেশের স্বার্থ উপেক্ষিত হওয়ার বিষয়ে ডা. বাহারুল আলম যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সঠিক নয়।  

তিনি বলেন, জাতিরজনক বাংলাদেশের জন্য আন্দোলন করে দেশকে স্বাধীন করেছেন। তার বাংলাদেশে কখনো স্বার্থ সংশ্লিষ্টতা থাকবে না- এমন কোন চুক্তি জননেত্রী শেখ শেখ হাসিনা করতে পারেন না। যার অনেক নজির আছে। বিগত দিনে দেশের কোন সরকার বা দলীয় প্রধানের এ ধরনের নজির নেই। একমাত্র প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাই দেশের প্রথম যিনি দেশের স্বার্থ একচুলও ছাড় দেন না। তার বিষয় নিয়ে ডা. বাহারুল আলম যে বক্তব্য দিয়েছেন তা নিন্দনীয় এবং দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। এ কারণেই দলীয় জরুরি সভা করে আমরা তাকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আজকের মধ্যে তিনি চিঠিও পেয়ে যাবেন। সদুত্তর না পেলে আমরা তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠাব।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন