ভারতীয় গরু আসা বন্ধ : কোরবানির পশুর দাম নিয়ে আশাবাদী হিলির খামারিরা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি হিলি

বিজিবির কঠোর নজরদারির কারণে দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত দিয়ে গরু চোরাচালান প্রায় শূন্যের কোটায় ঠেকেছে। গরু না আসায় চলতি বছর হিলি সীমান্তের বিট বা খাটাল নবায়ন করেননি ইজারাদার। আসন্ন ঈদুল আজহায় ভারত থেকে গরু না আসায় বাজারে দেশী গরুর চাহিদা ও দাম ভালো থাকবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিজিবির মংলা ক্যাম্প সূত্রে জানা গেছে, বৈধ ও অবৈধ (জব্দ করা গরু) পথে গরু আনার জন্য হিলি সীমান্তের মংলা এলাকায় বিট বা খাটাল রয়েছে। ওই খাটাল দিয়ে এতদিন ভারত থেকে অবৈধভাবে গরু বাংলাদেশে আনা হতো। গত বছর ঈদুল আজহার আগ পর্যন্ত ওই খাটাল দিয়ে নিয়মিত ভারতীয় গরু বাংলাদেশে আনা হতো। চলতি বছরের প্রথম দিকে কিছু গরু বাংলাদেশে আসে। তবে সম্প্রতি তা একেবারেই বন্ধ রয়েছে।

মংলা বিট বা খাটালের ইজারাদার হোসেন আলী জানান, হিলি সীমান্তের ভারত অংশে পুরো এলাকায় বাতি স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া সীমান্ত দিয়ে যেন গরু পারাপার হতে না পারে, সেজন্য আগের চেয়ে নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। সীমান্ত দিয়ে আগের মতো গরু আসে না, তাই লোকসানের কারণে এবার খাটালের নবায়ন করিনি। এজন্য  খাটালের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।

হিলির নন্দীপুর গ্রামের খামারি নুর আলম বলেন, ঈদুল আজহায় বাড়তি লাভের আশায় প্রতি বছর গরু লালনপালন করি। গত কয়েক বছর ঈদের আগ মুহূর্তে ভারত থেকে গরু আসার কারণে আমাদের লোকসান দিতে হয়। কিন্তু এবার আর ভারতীয় গরু আসছে না। ঈদের আগ পর্যন্ত যদি তা বন্ধ থাকে, তাহলে দেশী গরুর দাম যেমন ভালো পাওয়া যাবে, তেমনি চাহিদাও বেশি থাকবে।

একই এলাকার খামারি সব্যসাচী জানান, বর্তমানে অনেকেই ঈদকে ঘিরে গরু লালনপালন করছেন। তাই এ বছর কোরবানির গরুর সংকট থাকবে না। খামারিদের গরু দিয়েই স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলায় পাঠানো সম্ভব হবে।

হাকিমপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুস সামাদ জানান, হাকিমপুর উপজেলায় ছোট-বড় ২ হাজার ৪৪৭ জন খামারি রয়েছেন। এসব খামারে কোরবানির জন্য ৮ হাজার ৮০০’র অধিক গরু-ছাগল লালনপালন করা হচ্ছে। হাকিমপুরে ৩ হাজার ৭০০ পশুর চাহিদা রয়েছে। সে হিসাবে ৫ হাজার ১০০ গরু, ছাগল ও ভেড়া উদ্বৃত্ত রয়েছে;  যা দেশের অন্য জেলার চাহিদা মেটাতে সক্ষম।

তিনি জানান, ভারতীয় গরু আসা বন্ধ থাকায় বাজারে দেশী গরুর চাহিদা রয়েছে। সেই সঙ্গে অন্যান্য বছরের তুলনায় দামও ভালো পাওয়া যাবে। তাই খামারিরা গত কয়েক বছরের লোকসান এবার পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

বিজিবির মংলা বিওপি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার শাহজাহান আলী জানান, বিজিবির কঠোর নজরদারির কারণে বর্তমানে সীমান্ত দিয়ে গরু আসা বন্ধ রয়েছে। এছাড়া নতুন বছরে খাটালটির ইজারা নবায়ন না করায় বর্তমানে এর কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। এজন্য বৈধ ও অবৈধ কোনো পথেই ভারতীয় গরু হিলি সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন