আসন্ন কোরবানি : মিয়ানমার থেকে পাঁচদিনে ৫ হাজার পশু আমদানি

বণিক বার্তা প্রতিনিধি কক্সবাজার

ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে মিয়ানমার থেকে গত পাঁচদিনে ৫ হাজার ২১৮টি পশু আমদানি করা হয়েছে। টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের করিডোর দিয়ে আমদানি করা এসব পশুর মধ্যে গরু ৩ হাজার ৮৪৮টি ও মহিষ ১ হাজার ৩৭০টি। বৈরী আবহাওয়ার কারণে বেশ কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর পাঁচদিনে ৩২টি ট্রলারে এসব পশু আমদানি করা হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোরবানি উপলক্ষে এবার মিয়ানমার থেকে ২৫ হাজারের মতো গরু ও মহিষ আমদানির সম্ভাবনা রয়েছে।

টেকনাফ শুল্ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালের ২৫ মে টেকনাফের সাবরাংয়ের শাহপরীর দ্বীপে নাফ নদীর পাশে একটি ক্যাটল করিডোর চালু করা হয়। এ করিডোর দিয়ে প্রতিটি গরু-মহিষ আমদানিতে ৫০০ ও ছাগল আমদানিতে ২০০ টাকা করে রাজস্ব আদায় করা হয়। গত পাঁচদিনে পাঁচ হাজারের বেশি গবাদিপশু আমদানিতে রাজস্ব আয় হয়েছে ২৬ লাখ ৯ হাজার টাকা।

এ করিডোরকেন্দ্রিক ব্যবসায়ীরা বলেন, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বাধা না দিলে কোরবানি সামনে রেখে তাদের আরো গবাদিপশু আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে। শহীদুল ইসলাম, আবু ছৈয়দ মেম্বার, মো. সোহেল, নুরুল আলম, সোহেল, জুবাইরসহ আরো বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, চাহিদা অনুযায়ী এবার মিয়ানমার থেকে গবাদিপশু আমদানির সম্ভাবনা রয়েছে অন্তত ২৫ হাজার।

ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ করিডোর দিয়ে কয়েকদিন পশু আমদানি বন্ধ ছিল। তবে গত পাঁচদিনে তিনি একাই ১ হাজার ৭০টি গবাদিপশু আমদানি করেছেন। কোরবানি উপলক্ষে গরুর চাহিদা থাকায় দামও ভালো পেয়েছেন। গতকালও তিনি ২৮০টি বড় গরু ১ কোটি ১৮ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। আর এবার গবাদিপশু আমদানির পাশাপাশি ক্রয়-বিক্রয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা পাচ্ছেন। কোথাও কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

কুমিল্লার গরু ব্যবসায়ী জলিল হাওলাদার বলেন, শাহপরীর দ্বীপ করিডোরে তিন মণ ওজনের একটি গরুর দাম পড়ছে ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা। চার মণ ওজনের গরু ৮৫-৯৫ হাজার ও পাঁচ মণের বেশি ওজনের গরু ১ লাখ ২০ থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকায় কেনা যাচ্ছে। এসব গরু চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও ঢাকার বিভিন্ন হাটে বিক্রি হচ্ছে ৮৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায়।

টেকনাফের ব্যবসায়ী আবু ছৈয়দ মেম্বার বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারো স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কোরবানির পশুর জন্য মিয়ানমারের দিকে ঝুঁকেছেন। মিয়ানমার থেকে শাহপরীর দ্বীপ করিডোরে প্রচুর পশু আসছে। এসব পশু বিক্রিকে কেন্দ্র করে টেকনাফ সদর, টেকনাফ মিঠাপানির চড়া, সাবরাং ইউনিয়ন কমপ্লেক্স, শাহপরীর দ্বীপের নাফ নদীর বেড়িবাঁধ ও পুরনো বাজারের বেশ কয়েকটি স্থানে হাট জমে উঠেছে।

টেকনাফের শুল্ক কর্মকর্তা মো. ময়েজ উদ্দীন বলেন, মিয়ানমার থেকে গবাদিপশু আমদানির পাশাপাশি রাজস্ব আয়ে এ করিডোর ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। বৈরী আবহাওয়ায় বন্ধ থাকার পর গত সোমবার থেকে পুনরায় পশু আমদানি শুরু হয়েছে। এ করিডোর দিয়ে মিয়ানমার থেকে গত মাসে ৬ হাজার ৭৪৪টি গরু ও ৩ হাজার ৩৫১টি মহিষ আমদানি করে ৫০ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকার রাজস্ব আদায় করা হয়। এভাবে পশু আমদানি অব্যাহত থাকলে রাজস্ব আয় আরো বাড়বে। তাই পশু আমদানিতে ব্যবসায়ীদেরও উৎসাহিত করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন