খরা ও ভারি বৃষ্টিতে রোপণ ব্যাহত

রাশিয়ায় শস্য উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি : সংগৃহীত

ভারি বৃষ্টি ও তীব্র খরার কারণে রাশিয়ায় শীতকালীন শস্য রোপণ ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এতে আগামী বছর দেশটিতে শস্য উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষক ও কৃষি কোম্পানির কর্মকর্তারা। খবর রয়টার্স।  

রাশিয়া বিশ্বের শীর্ষ গম রফতানিকারক দেশ। কৃষিবিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সোভেকন কনসালট্যান্সি চলতি সপ্তাহের শুরুতে জানায়, রাশিয়ায় গম বপনের হার ১১ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। এতে ২০২৫ সালে শস্য আহরণ কমে যেতে পারে। 

সম্প্রতি এক কৃষি সম্মেলনে আইকেএআর কনসালট্যান্সির প্রধান দিমিত্রি রিলকো বলেন, ‘‌আমরা শীতকালীন শস্য রোপণের বিষয়টি খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি অনুকূল বলে মনে হচ্ছে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘‌ভলভোগ্রাদ ও সারাতোভ রাশিয়ার চতুর্থ ও ষষ্ঠ বৃহত্তম কৃষি উৎপাদন অঞ্চল। এ দুই অঞ্চলের অবস্থা তুলনামূলক বেশি খারাপ।’ 

অ্যাগন অ্যাগ্রো রাশিয়ার পেনজা ও শারাতোভ এলাকায় প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজারের বেশি কৃষিজমি আবাদ করে। কোম্পানির প্রধান কিরিল ইয়েরশোভ বলেন, ‘‌আগামী বছর গম সংগ্রহ হুমকির মুখে পড়তে পারে। পরিস্থিতি খুবই সংকটাপন্ন। সব জমির মাটি শুষ্ক। আমরা গত বছরের তুলনায় কম জমিতে শস্য রোপণ করেছি। আমাদের মতো আরো অনেক প্রতিষ্ঠানই তা করেছে।’  

উদ্ভিদ সুরক্ষা পণ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান শচেলকোভো অ্যাগ্রোখিমের কর্মকর্তা আলেকজান্ডার প্রিয়ানিশনিকভ জানান, ভোলগা অঞ্চলের পেনজা, সারাতোভ ও মর্দোভিয়া এলাকার কৃষকদের নজিরবিহীন কম বীজ বপন করতে দেখা গেছে। 

তিনি বলেন, ‘আমি অনেক বছর ধরে শীতকালীন শস্য নিয়ে কাজ করছি। কিন্তু এর আগে কখনো এত খারাপ পরিস্থিতি আসেনি।’

পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক বছরগুলোয় রাশিয়ার কৃষি খাত যথেষ্ট প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছিল। কিন্তু চলতি বছর দেশটির প্রধান কৃষি অঞ্চলগুলোয় বসন্তের শুরুতে তুষারপাত, খরা ও ভারি বৃষ্টিপাত আঘাত হেনেছে। এতে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

চলতি মাসে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চল ও ভোলগা নদীসংলগ্ন কৃষি উৎপাদন এলাকাগুলো ভয়াবহ খরার কবলে পড়েছে। আগামী দুই সপ্তাহে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও ক্ষীণ। এছাড়া সাইবেরিয়ার বিস্তীর্ণ কৃষি অঞ্চলে ভারি বৃষ্টির কারণে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।

এর আগে ২০২২ সালে রাশিয়ায় রেকর্ড ১৫ কোটি ৮০ লাখ টন শস্য আহরণ করা হয়েছিল। তবে পরের বছরই তা কমে ১৪ কোটি ৮০ লাখ টনে নেমে আসে। চলতি বছর ১৩ কোটি ২০ লাখ টন শস্য আহরণের পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির সরকার। 

এদিকে আইকেএআর চলতি বছর রাশিয়া গম উৎপাদনের পূর্বাভাস সংশোধন করেছে। এর আগে ৮ কোটি ২২ লাখ টন গম উৎপাদনের পূর্বাভাস দিয়েছিল সংস্থাটি। তা থেকে চার লাখ টন কমিয়ে ৮ কোটি ১৮ লাখ টনে নামিয়ে আনা হয়েছে। এছাড়া মোট শস্য উৎপাদনের পূর্বাভাস ১২ কোটি ৫০ লাখ থেকে কমিয়ে ১২ কোটি ৪৫ লাখ টন করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন