ব্রাজিলে ২০২৩-২৪ বিপণনবর্ষে শস্য উৎপাদন কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির খাদ্য সরবরাহ ও পরিসংখ্যান সংস্থা কোনাব। পূর্বাভাস অনুসারে, দেশটিতে এ সময় ২৯ কোটি ৮৪ লাখ ১০ হাজার টন শস্য উৎপাদন হতে পারে, যা আগের বছরের তুলনায় ২ কোটি ১৪ লাখ টন কম। তবে পরিমাণ কমলেও এটি হতে যাচ্ছে ব্রাজিলের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উৎপাদন। খবর ওয়ার্ল্ড-গ্রেইনডটকম।
কোনাবের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, শস্য বপনের শুরুতে নিয়মিত বৃষ্টির অভাব শস্য উৎপাদন কমে যাওয়ার জন্য দায়ী। এছাড়া মেটোপিবা, সাও পাওলো ও পারানা রাজ্যে ফসল বেড়ে ওঠার সময় বৃষ্টির অভাব এবং রিও গ্র্যান্ডে ডো সুলে অতিরিক্ত আর্দ্রতা শস্য উৎপাদন কমে যাওয়ার প্রধান কারণ।
২০২৩-২৪ সালে ব্রাজিলে মোট ৭ কোটি ৯৮ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে শস্য আবাদ করা হবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল, যা ২০২২-২৩ সালের তুলনায় ১ দশমিক ৬ শতাংশ বা ১২ লাখ ৭০ হাজার হেক্টর বেশি। তবে চাষের জমি বাড়লেও দেশটিতে গড় উৎপাদন কমে গেছে। এ সময় প্রতি হেক্টরে ৩ হাজার ৭৩৯ কেজি শস্য উৎপাদন হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৮ দশমিক ২ শতাংশ কম। ২০২২-২৩ সালে হেক্টরপ্রতি ৪ হাজার ৭২ কেজি শস্য উৎপাদন হয়েছিল।
প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে সয়াবিনের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে কমে যেতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২৩-২৪ সালে ব্রাজিলে মোট ১৪ কোটি ৭৩ লাখ ৮০ হাজার টন সয়াবিন উৎপাদনের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে, যা ২০২২-২৩ সালের তুলনায় ৭২ লাখ ৩০ হাজার টন বা ৪ দশমিক ৭ শতাংশ কম। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির মধ্যপশ্চিম, দক্ষিণ-পূর্ব ও মেটোপিবা অঞ্চলে সেপ্টেম্বর-নভেম্বরের মধ্যে বৃষ্টির অভাব ও উচ্চ তাপমাত্রার কারণে তেলশস্যটির ফলন কমে গেছে।
কোনাব বলছে, দ্বিতীয় জরিপে প্রধান তেলবীজ উৎপাদনকারী প্রদেশ মাতো গ্রোসোয় ৩ কোটি ৯৩ লাখ ৪০ হাজার টন তেলবীজ উৎপাদনের তথ্য পাওয়া গেছে, যা প্রথম জরিপের তুলনায় ১১ দশমিক ৯ ও সর্বশেষ আহরণের তুলনায় ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ কম। অন্যদিকে রিও গ্র্যান্ডে ডো সুল রাজ্যে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে তেলবীজ উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিরূপ আবহাওয়ার কারণে ভুট্টা উৎপাদনও ব্যাহত হয়েছে। কোনাবের পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৩-২৪ সালে ১১ কোটি ৫৭ লাখ ২০ হাজার টন ভুট্টা উৎপাদন হতে পারে, যা ২০২২-২৩ সালের তুলনায় ১২ শতাংশ কম। মিনাস জেরায়সসহ গুরুত্বপূর্ণ উৎপাদন অঞ্চলগুলোয় গরম আবহাওয়া ও অনিয়মিত বৃষ্টির কারণে উৎপাদন বিঘ্নিত হয়। এছাড়া মাতো গ্রোসো ও গোইয়াসে আবহাওয়া তুলনামূলকভাবে অনুকূল থাকলেও মাতো গ্রোসো ডো সুল, সাও পাওলো এবং পারানায় মার্চ ও এপ্রিলে শুষ্ক মৌসুম ও পোকামাকড়ের আক্রমণে ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।